ঢাকা ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

ডিমের দামে সিন্ডিকেটের কারসাজি!

  • আপডেট সময় : ০২:১৯:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে প্রতিদিন পাঁচ কোটি লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন হয়। এরমধ্যে প্রান্তিক খামারিরা মোট উৎপাদিত ডিমের ৫০ শতাংশ উৎপাদন করলেও দাম নির্ধারণে কোনো ভূমিকা নেই তাদের। বাকি ৫০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করে ১৩-১৫টি বৃহৎ কোম্পানি। বাজারে ডিমের দাম নির্ধারণ করে ১৩-১৫টি বৃহৎ ডিম উৎপাদনকারী কোম্পানি, আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খরচ হয় সাড়ে আট টাকা। কিন্তু ডিমের দাম নির্ধারণে সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় বৃহৎ কোম্পানিগুলো ইচ্ছে মতো ডিমের দাম নির্ধারণ করে। তাদের অভিযোগ, কোম্পানি নির্ধারিত দরে আড়তদাররা ডিম কিনলেও খামারিদের কম দাম দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে দেওয়া হয় না কোনো ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদও। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, কারওয়ান বাজারে আড়তদাররা নয় টাকা ৭০ পয়সা দামে ডিম কিনলেও খামারিরা পেয়েছে আট টাকা ৬০ পয়সা। অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানিয়েছে, প্রত্যেক আড়তদারের বিভিন্ন এলাকায় ডিলার থাকে। ডিলাররা এই এক টাকা ১০ পয়সা লাভ করে। অন্যদিকে আড়তদার থেকে খুচরা বিক্রেতারা ডিম কিনে নিয়ে বিক্রি করছে ১১ টাকা করে। ডিম প্রতি তাদের লাভ হচ্ছে এক টাকা ৩০ পয়সা। ফলে খামারি পর্যায়ে ডিম উৎপাদনে নয় টাকা ২০ পয়সা খরচ হলেও তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে আট টাকা ৬০ পয়সা। লাভের বদলে তাদের প্রতি পিস ডিমে লোকসান ৬০ পয়সা।
খামারিরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় ডিম সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে ডিমের দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। খামারিরা বলছেন, পোলট্রি খাত এখন ধ্বংসের মুখে। আগামীতে মধ্যস্বত্বভোগী কোম্পানির হাতে চলে যাবে ডিমের কর্তৃত্ব। তখন মানুষ তাদের নির্ধারিত দামেই ডিম কিনতে বাধ্য হবেন। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, গত ছয় থেকে সাত মাসে পোলট্রি খাদ্যের দাম ৪০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বেড়েছে ওষুধের দাম। বড় শিল্পপতিরা ‘সিন্ডিকেট’ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। খাদ্যের দাম এক টাকা কমালে ডিমের দাম ৫০ পয়সা কমিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মত বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন
অপরদিকে সমিতি সূত্র বলছে, গত ছয় থেকে সাত মাসে মুরগির খাবারের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজির) প্রায় এক হাজার টাকা বেড়েছে। এরপর থেকে খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। রাজশাহী অঞ্চলে প্রায় ১৭ লাখ ডিমপাড়া মুরগি ছিল। এখন তা নেমে এসেছে আট থেকে নয় লাখে। স্থানীয় মোসলেমের মোড় ডিম আড়ত সমিতির সভাপতি নাসির উদ্দিন জানান, ডিমের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ঢাকা, সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসতে থাকে, ডিম লাগবে। চাহিদা বাড়ার কারণে দাম বেড়ে যায়। এর সঙ্গে তেলের দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক ছিল না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিমের দামে সিন্ডিকেটের কারসাজি!

আপডেট সময় : ০২:১৯:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে প্রতিদিন পাঁচ কোটি লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন হয়। এরমধ্যে প্রান্তিক খামারিরা মোট উৎপাদিত ডিমের ৫০ শতাংশ উৎপাদন করলেও দাম নির্ধারণে কোনো ভূমিকা নেই তাদের। বাকি ৫০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করে ১৩-১৫টি বৃহৎ কোম্পানি। বাজারে ডিমের দাম নির্ধারণ করে ১৩-১৫টি বৃহৎ ডিম উৎপাদনকারী কোম্পানি, আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খরচ হয় সাড়ে আট টাকা। কিন্তু ডিমের দাম নির্ধারণে সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় বৃহৎ কোম্পানিগুলো ইচ্ছে মতো ডিমের দাম নির্ধারণ করে। তাদের অভিযোগ, কোম্পানি নির্ধারিত দরে আড়তদাররা ডিম কিনলেও খামারিদের কম দাম দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে দেওয়া হয় না কোনো ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদও। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, কারওয়ান বাজারে আড়তদাররা নয় টাকা ৭০ পয়সা দামে ডিম কিনলেও খামারিরা পেয়েছে আট টাকা ৬০ পয়সা। অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানিয়েছে, প্রত্যেক আড়তদারের বিভিন্ন এলাকায় ডিলার থাকে। ডিলাররা এই এক টাকা ১০ পয়সা লাভ করে। অন্যদিকে আড়তদার থেকে খুচরা বিক্রেতারা ডিম কিনে নিয়ে বিক্রি করছে ১১ টাকা করে। ডিম প্রতি তাদের লাভ হচ্ছে এক টাকা ৩০ পয়সা। ফলে খামারি পর্যায়ে ডিম উৎপাদনে নয় টাকা ২০ পয়সা খরচ হলেও তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে আট টাকা ৬০ পয়সা। লাভের বদলে তাদের প্রতি পিস ডিমে লোকসান ৬০ পয়সা।
খামারিরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় ডিম সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে ডিমের দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। খামারিরা বলছেন, পোলট্রি খাত এখন ধ্বংসের মুখে। আগামীতে মধ্যস্বত্বভোগী কোম্পানির হাতে চলে যাবে ডিমের কর্তৃত্ব। তখন মানুষ তাদের নির্ধারিত দামেই ডিম কিনতে বাধ্য হবেন। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, গত ছয় থেকে সাত মাসে পোলট্রি খাদ্যের দাম ৪০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বেড়েছে ওষুধের দাম। বড় শিল্পপতিরা ‘সিন্ডিকেট’ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। খাদ্যের দাম এক টাকা কমালে ডিমের দাম ৫০ পয়সা কমিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মত বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন
অপরদিকে সমিতি সূত্র বলছে, গত ছয় থেকে সাত মাসে মুরগির খাবারের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজির) প্রায় এক হাজার টাকা বেড়েছে। এরপর থেকে খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। রাজশাহী অঞ্চলে প্রায় ১৭ লাখ ডিমপাড়া মুরগি ছিল। এখন তা নেমে এসেছে আট থেকে নয় লাখে। স্থানীয় মোসলেমের মোড় ডিম আড়ত সমিতির সভাপতি নাসির উদ্দিন জানান, ডিমের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ঢাকা, সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসতে থাকে, ডিম লাগবে। চাহিদা বাড়ার কারণে দাম বেড়ে যায়। এর সঙ্গে তেলের দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক ছিল না।