ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

ডিমের দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতা

  • আপডেট সময় : ০২:২১:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বল্প আয়ের মানুষের আমিষ পূরণের অন্যতম উৎস ডিম। তবে ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে বর্তমানে ডিম নিয়ে সারাদেশে ব্যবসায়ীদের কারসাজি ও সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। একটি ডিম কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১৩ টাকা। এক হালি ৫০ টাকা। আর এক ডজন ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন মানুষের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খেতে হবে। তবে লাগাতার দাম বাড়ায় নি¤œআয়ের মানুষ পুষ্টি চাহিদা অনুযায়ী ডিম খেতে পারছেন না।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল- মে মাসে বাজারে ব্রয়লার মুরগির ডিমের প্রতিহালি বিক্রি হয়েছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকায়। তবে আগস্ট মাসে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর এক লাফে ডিমের হালি হয় ৬০ টাকা। সরকারের নানান ধরনের পদক্ষেপের কারণে ডিমের হালি নেমে এসেছিল ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়। তবে এটা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাস খানেক ধরে ফের বাড়ছে ডিমের দাম। এখন প্রতিহালি ডিম ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে কমেছে ডিমের বিক্রি। ডিম খাওয়াও কমেছে রেস্তোরাঁগুলোতে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, ২০১২-১৩ সালে বাংলাদেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ৭৬১ দশমিক ৭৪ কোটি এবং ২০২১-২২ সালে এ পরিমাণ দাঁড়ায় ২৩৩৫ দশমিক ৩৫ কোটিতে। অর্থাৎ গত ১০ বছরে বাংলাদেশে ডিমের উৎপাদন তিন গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে ডিম উৎপাদন হয়েছে মোট ২ হাজার ৩৩৫ কোটি; সে হিসাবে বছরে প্রত্যেকের জন্য ডিমের প্রাপ্যতা ছিল ১৩৬টি।
আর তার আগের অর্থবছরে দেশে ডিম উৎপাদন হয় মোট ২ হাজার ৫৭ কোটি, তাতে জনপ্রতি নাগরিকের ডিমের প্রাপ্যতা দাঁড়ায় ১২১টি।
পুষ্টিবিজ্ঞানের ভাষায়, ডিম শুধু প্রোটিনের উৎস নয়, রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন- ডি, বি-সিক্স, বি-টুয়েল্ভ। খনিজ উপাদানের মধ্যে আছে জিঙ্ক, কপার এবং শক্তির আধার আয়রন বা লৌহ।
প্রাণীজ আমিষের সহজলভ্য উৎস ডিম। কিন্তু মাঝেমধ্যেই কারণে-অকারণে দাম বেড়ে যাওয়ায় সবার জন্য তা আর সহজলভ্য থাকছে না।
তবে মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ বাস্তবায়নে জনপ্রতি বছরে ১৬৫টি ডিম সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে সরকার।
কাকরাইল এলাকায় কথা হয় ডিম কিনতে আসা সেলিম আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় ডিমের হালি কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর একটি ডিম কিনতে গেলে তো ১৩ টাকা দিতে হয়। এরকম ঊর্ধ্বমুখী বাজার কতোদিন চলবে! ব্যবসায়ীদের কাছে আমার অনুরোধ যতদ্রুত সম্ভব বাজারের সব পণ্যের দাম নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য ক্রয় করা সহজ করে দেওয়া হোক।’এদিকে আসছে শীতে ডিমের দাম কমবে বলে আশার কথা শোনাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, শীতের ডিমের উৎপাদন বাড়ে। তাই দাম বর্তমানের চেয়ে কমবে। ডিমের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ্ ঢাকা টাইমসকে বলেন, একদিকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে ডলারের দাম বেড়েছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। ফলে আমাদের দেশেও মুরগির খাবারের দাম দিন দিন বেড়েই চলছে।
আমান উল্লাহ্ বলেন, মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খামারিরা মুরগির ডিমের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এখন আমাদেরই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তবে শীতে মুরগির ডিমের উৎপাদন বাড়বে। তখন কিছুটা দাম কমার সম্ভাবনা থাকবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিমের দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতা

আপডেট সময় : ০২:২১:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বল্প আয়ের মানুষের আমিষ পূরণের অন্যতম উৎস ডিম। তবে ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে বর্তমানে ডিম নিয়ে সারাদেশে ব্যবসায়ীদের কারসাজি ও সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। একটি ডিম কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১৩ টাকা। এক হালি ৫০ টাকা। আর এক ডজন ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন মানুষের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খেতে হবে। তবে লাগাতার দাম বাড়ায় নি¤œআয়ের মানুষ পুষ্টি চাহিদা অনুযায়ী ডিম খেতে পারছেন না।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল- মে মাসে বাজারে ব্রয়লার মুরগির ডিমের প্রতিহালি বিক্রি হয়েছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকায়। তবে আগস্ট মাসে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর এক লাফে ডিমের হালি হয় ৬০ টাকা। সরকারের নানান ধরনের পদক্ষেপের কারণে ডিমের হালি নেমে এসেছিল ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়। তবে এটা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাস খানেক ধরে ফের বাড়ছে ডিমের দাম। এখন প্রতিহালি ডিম ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে কমেছে ডিমের বিক্রি। ডিম খাওয়াও কমেছে রেস্তোরাঁগুলোতে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, ২০১২-১৩ সালে বাংলাদেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ৭৬১ দশমিক ৭৪ কোটি এবং ২০২১-২২ সালে এ পরিমাণ দাঁড়ায় ২৩৩৫ দশমিক ৩৫ কোটিতে। অর্থাৎ গত ১০ বছরে বাংলাদেশে ডিমের উৎপাদন তিন গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে ডিম উৎপাদন হয়েছে মোট ২ হাজার ৩৩৫ কোটি; সে হিসাবে বছরে প্রত্যেকের জন্য ডিমের প্রাপ্যতা ছিল ১৩৬টি।
আর তার আগের অর্থবছরে দেশে ডিম উৎপাদন হয় মোট ২ হাজার ৫৭ কোটি, তাতে জনপ্রতি নাগরিকের ডিমের প্রাপ্যতা দাঁড়ায় ১২১টি।
পুষ্টিবিজ্ঞানের ভাষায়, ডিম শুধু প্রোটিনের উৎস নয়, রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন- ডি, বি-সিক্স, বি-টুয়েল্ভ। খনিজ উপাদানের মধ্যে আছে জিঙ্ক, কপার এবং শক্তির আধার আয়রন বা লৌহ।
প্রাণীজ আমিষের সহজলভ্য উৎস ডিম। কিন্তু মাঝেমধ্যেই কারণে-অকারণে দাম বেড়ে যাওয়ায় সবার জন্য তা আর সহজলভ্য থাকছে না।
তবে মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ বাস্তবায়নে জনপ্রতি বছরে ১৬৫টি ডিম সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে সরকার।
কাকরাইল এলাকায় কথা হয় ডিম কিনতে আসা সেলিম আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় ডিমের হালি কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর একটি ডিম কিনতে গেলে তো ১৩ টাকা দিতে হয়। এরকম ঊর্ধ্বমুখী বাজার কতোদিন চলবে! ব্যবসায়ীদের কাছে আমার অনুরোধ যতদ্রুত সম্ভব বাজারের সব পণ্যের দাম নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য ক্রয় করা সহজ করে দেওয়া হোক।’এদিকে আসছে শীতে ডিমের দাম কমবে বলে আশার কথা শোনাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, শীতের ডিমের উৎপাদন বাড়ে। তাই দাম বর্তমানের চেয়ে কমবে। ডিমের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ্ ঢাকা টাইমসকে বলেন, একদিকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে ডলারের দাম বেড়েছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। ফলে আমাদের দেশেও মুরগির খাবারের দাম দিন দিন বেড়েই চলছে।
আমান উল্লাহ্ বলেন, মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খামারিরা মুরগির ডিমের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এখন আমাদেরই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তবে শীতে মুরগির ডিমের উৎপাদন বাড়বে। তখন কিছুটা দাম কমার সম্ভাবনা থাকবে।