ঢাকা ১০:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি করতো তারা, গ্রেফতার ৭

  • আপডেট সময় : ০৪:৫১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁতিবাজারে সোনা কেনাবেচা করতে আসা ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারীদের টার্গেট করতো একটি চক্র। চক্রটি ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতো। এ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চক্রের প্রধান দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউছার আহমেদ, কামাল হাওলাদারসহ তাদের সহযোগী আব্দুর রহমান হাওলাদার, মেহেদী হাসান ওরফে হাসান, বাবুল হাওলাদার, রমিজ তালুকদার ও জান্নাতুল ফেরদৌস।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোড ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ-সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।

ডিসি মাসুদ আলম বলেন, বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজারের পাশে লেগুনাস্ট্যান্ড থেকে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। এসময় চক্রের আরো পাঁচ সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে মাইক্রোবাস, ডিবি লেখা জ্যাকেট, ওয়াকি-টকি, ভুয়া পুলিশ আইডি কার্ড, হ্যান্ডকাফ, খেলনা পিস্তল, পকেট রাউটার, মোবাইল, এক্সপেন্ডেবল লাঠি ও লেজার লাইট উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, চক্রটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীর তাঁতিবাজার এলাকায় আসা সোনা ব্যবসায়ী ও ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করতো। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ডাকাতি করতো।

ডাকাতদল রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের দক্ষিণ পাশে লেগুনাস্ট্যান্ডের সামনে ডাকাতি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শাহবাগ থানার একটি দল অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় চার-পাঁচজন ডাকাত সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গ্রেফতার ও পলাতকদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।

গ্রেফতার আসামিদের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, দ্বীন ইসলামের নামে দশটি, আব্দুর রহমানের নামে তিনটি, মেহেদী হাসানের নামে চারটি, বাবুল হাওলাদারের নামে দুটি ও রমিজ তালুকদারের নামে চারটি ডাকাতি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার আসামিদের সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কোন কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চাকরিচ্যুত হয়ে অপরাধে জড়িয়েছেন বেশি প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাকরি চুতরাই অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।

প্রতারক চক্রের সদস্যরা কোন কৌশলে ভুক্তভোগীদের টার্গেট করে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি রমনা বলেন, তাদের প্রচুর পেইড সোর্স আছে। তারা সোর্সের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের টার্গেট করে। তার কোনো ডাকাতি করলো বা তারা কোন সফল অপারেশন করে সে ক্ষেত্রে টাকার ভাগ সোর্সেরা বেশি পায়। যদি অপরাধীরা এক লাখ টাকা করে ভাগ পায়, সে ক্ষেত্রে সোর্সেরা দেড় লাখ টাকা পায়। আমরা অনেক সময় দেখেছি বিভিন্ন ব্যাংকে কাজ করার বা টাকা তোলার ভান করে। কিন্তু আসলে তারা সে সময় ব্যাংকে আসা বয়স্ক ব্যক্তি, একা ব্যক্তি বা বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলন করতে আসা ব্যক্তিদের ওপর টার্গেট করে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যোগসাজশে অপরাধ চক্রগুলো কাজ করে কি না জানতে চাইলে মাসুদ আলম বলেন, অপরাধচক্রের সদস্যের কারো সঙ্গে যোগসাজশ নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এক অপরাধী দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউসার আহমেদ সে পুলিশের ইন্সপেক্টরের আইডি কার্ড বানিয়ে নিয়েছে। দেখে বোঝাও যায় না ভুয়া আইডি কার্ড। তার নামে শুধু ১০টি ডাকাতি মামলা রয়েছে।

ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য সাধারণ মানুষ কীভাবে চিনবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনবহুল এলাকা থেকে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য পরিচয়ে তুলে নিতে আসে, সে সময় আশপাশে ব্যক্তিরা জানতে চাইবেন কোন বিভাগে ও কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

এসি/আপ্র/০৪/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি করতো তারা, গ্রেফতার ৭

আপডেট সময় : ০৪:৫১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁতিবাজারে সোনা কেনাবেচা করতে আসা ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারীদের টার্গেট করতো একটি চক্র। চক্রটি ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতো। এ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চক্রের প্রধান দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউছার আহমেদ, কামাল হাওলাদারসহ তাদের সহযোগী আব্দুর রহমান হাওলাদার, মেহেদী হাসান ওরফে হাসান, বাবুল হাওলাদার, রমিজ তালুকদার ও জান্নাতুল ফেরদৌস।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোড ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ-সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।

ডিসি মাসুদ আলম বলেন, বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজারের পাশে লেগুনাস্ট্যান্ড থেকে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। এসময় চক্রের আরো পাঁচ সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে মাইক্রোবাস, ডিবি লেখা জ্যাকেট, ওয়াকি-টকি, ভুয়া পুলিশ আইডি কার্ড, হ্যান্ডকাফ, খেলনা পিস্তল, পকেট রাউটার, মোবাইল, এক্সপেন্ডেবল লাঠি ও লেজার লাইট উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, চক্রটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীর তাঁতিবাজার এলাকায় আসা সোনা ব্যবসায়ী ও ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করতো। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ডাকাতি করতো।

ডাকাতদল রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের দক্ষিণ পাশে লেগুনাস্ট্যান্ডের সামনে ডাকাতি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শাহবাগ থানার একটি দল অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় চার-পাঁচজন ডাকাত সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গ্রেফতার ও পলাতকদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।

গ্রেফতার আসামিদের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, দ্বীন ইসলামের নামে দশটি, আব্দুর রহমানের নামে তিনটি, মেহেদী হাসানের নামে চারটি, বাবুল হাওলাদারের নামে দুটি ও রমিজ তালুকদারের নামে চারটি ডাকাতি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার আসামিদের সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কোন কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চাকরিচ্যুত হয়ে অপরাধে জড়িয়েছেন বেশি প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাকরি চুতরাই অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।

প্রতারক চক্রের সদস্যরা কোন কৌশলে ভুক্তভোগীদের টার্গেট করে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি রমনা বলেন, তাদের প্রচুর পেইড সোর্স আছে। তারা সোর্সের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের টার্গেট করে। তার কোনো ডাকাতি করলো বা তারা কোন সফল অপারেশন করে সে ক্ষেত্রে টাকার ভাগ সোর্সেরা বেশি পায়। যদি অপরাধীরা এক লাখ টাকা করে ভাগ পায়, সে ক্ষেত্রে সোর্সেরা দেড় লাখ টাকা পায়। আমরা অনেক সময় দেখেছি বিভিন্ন ব্যাংকে কাজ করার বা টাকা তোলার ভান করে। কিন্তু আসলে তারা সে সময় ব্যাংকে আসা বয়স্ক ব্যক্তি, একা ব্যক্তি বা বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলন করতে আসা ব্যক্তিদের ওপর টার্গেট করে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যোগসাজশে অপরাধ চক্রগুলো কাজ করে কি না জানতে চাইলে মাসুদ আলম বলেন, অপরাধচক্রের সদস্যের কারো সঙ্গে যোগসাজশ নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এক অপরাধী দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউসার আহমেদ সে পুলিশের ইন্সপেক্টরের আইডি কার্ড বানিয়ে নিয়েছে। দেখে বোঝাও যায় না ভুয়া আইডি কার্ড। তার নামে শুধু ১০টি ডাকাতি মামলা রয়েছে।

ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য সাধারণ মানুষ কীভাবে চিনবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনবহুল এলাকা থেকে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য পরিচয়ে তুলে নিতে আসে, সে সময় আশপাশে ব্যক্তিরা জানতে চাইবেন কোন বিভাগে ও কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

এসি/আপ্র/০৪/০৯/২০২৫