মহানগর প্রতিবেদন : গতকাল রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীর মিরপুর, নওগাঁ এবং গাইবন্ধা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন, মো. নাসিমুল ইসলাম, রেহানুর হাসান রাশেদ ও রাইসুল ইসলাম।
তাদের কাছ থেকে হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যববহৃত ছয়টি মোবাইল ফোন সেট, দুটি ল্যাপটপ, একটি সিপিইউ, ক্রিপ্টোকারেন্সি, নগদ টাকা , ইলেকট্রনিক্স কার্ড ও স্বপ্ন ই-ভাউচারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা বিপুল পরিমাণ পণ্য জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, সুপার শপ স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উল্লিখিত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিএমপির সিটিটিসির সাইবাবর ক্রাইম ইনভেটিগেশ বিভাগের একটি দল। এই চক্রটি সুপার স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে ১৮ লাখ টাকা মূল্যের ডিজিটাল ভাউচার তৈরি করে তা আত্মসাৎ করেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, এই চক্রের মূলহোতা নাসিমুল হক একজন প্রকৌশলী। অপররা হলেন রাশেদ এবং রাইসুল। এদের মধ্যে নাসিমুলকে নওগাঁ থেকে, রাশেদকে গাইবান্ধা থেকে ও রাইসুলকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপির এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, সুপার শপ স্বপ্ন তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সারাদেশে ১৮৬টি আউটলেটের সেলস মনিটরিং, ইনভেন্টরি, ম্যানেজমেন্ট,কর্মী ব্যবস্থাপনা, আর্থিক লেনদেনের হিসাব, ডিজিটাল ভাউচার ম্যানেজমেন্টসহ সকল ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেমটি তাই অ্যাডভান্স সাইবার সিকিউরিটি প্রটোকল অনুযায়ী অত্যন্ত সুরক্ষিত করে তৈরি করা হয়েছিল। গত ২৬ জুন থেকে ৯ জুলাইয়ের মধ্যে স্বপ্নের শক্তিশালী সাইবার ব্যবস্থাকে ব্রিচ করে বিপুল অংকের অস্বাভাবিক ও সন্দেহজন ডিজিটাল ভাউচার জেনারেট করা হয়। বিষয়টি স্বপ্নের নজরে এলে তারা ডিএমপির সিটিটিসি বিভাগের সাইবার ক্রাইম ইনভেটিগেশনের কাছে অভিযোগ করেন।
পরে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেটিগেশন বিভাগ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন। সিটি-সাইবার ক্রাইম তদন্ত দলের একটি চৌকস টিম স্বপ্ন সুপার শপের ডিজিটাল সিস্টেমের ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও রির্জাভ এনালাইসিস করে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে হ্যাকার চক্রটির ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট শনাক্ত করে। গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে ডিএমপির এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, এই চক্রটি স্বপ্নের ডিজিটাল সিস্টেম হ্যাক করে ১৮ লাখ টাকা দামের ডিজিটাল ভাউচার ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে ২৫ শতাংশ ছাড়ে কয়েকটি ই-কমার্স ইউজারদের কাছে বিক্রি করে। এভাবে তারা জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি একাউন্টে জমা করে। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে জব্দ করা ডিজিটাল ডিভাইস থেকে ২০ লাখ টাকা সমমূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। ডিএমপির এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, এই সুচতুর এই হক্যারদের কাছ থেকে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমের একসেস রয়েছে। তারা বিভিন্ন ডার্ক ওয়েব মার্কেট থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিনিময়ে ক্রিডেনশিয়াল কেনে, যা ভাউচার তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহত হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।-