ঢাকা ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডিজিটাল আইডি ছাড়া কাজ করা যাবে না যুক্তরাজ্যে

  • আপডেট সময় : ০৫:৫৩:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে এবার কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ডিজিটাল পরিচয়পত্র চালুর পরিকল্পনা করেছে কিয়ার স্টারমারের লেবার সরকার। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঘোষিত এ উদ্যোগ দেশটিতে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, নাগরিক ও বাসিন্দাদের ডিজিটাল আইডি মোবাইল ফোনে সংরক্ষিত থাকবে। এতে নাম, জন্মতারিখ, ছবি, জাতীয়তা ও আবাসিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে এটি বহন বা দেখানোর কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না, কেবল কর্মক্ষেত্রে এটি বাধ্যতামূলক হবে।

সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাদের এখানে থাকার অধিকার নেই, তারা যেন আর কাজের সুযোগ না পায়, এ ব্যবস্থা সেটি নিশ্চিত করবে। অবৈধ অভিবাসনের অন্যতম প্রলোভন হচ্ছে উপার্জনের সুযোগ, ডিজিটাল আইডি তা বন্ধ করবে।

ডিজিটাল পরিচয় ব্যবস্থার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স, চাইল্ড কেয়ার, কল্যাণভাতা বা কর–সংক্রান্ত সেবার আবেদন সহজ হবে বলেও দাবি করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, ডিজিটাল আইডি যুক্তরাজ্যের জন্য বিশাল এক সুযোগ। এটি যে শুধু সীমান্ত সুরক্ষায় সহায়ক হবে তা না, সাধারণ নাগরিকও নানামুখী সুবিধা পাবেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, এ পরিকল্পনা মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নাগরিক স্বাধীনতার ওপর আঘাত করবে। লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা জানিয়েছে, মানুষকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দিতে বাধ্য করা যাবে না। বিরোধী কনজারভেটিভ দলের নেতা কেমি ব্যাডেনক এক্সে লিখেছেন, আমরা কোনো বাধ্যতামূলক আইডি ব্যবস্থার পক্ষে নই। এ ধরনের পরিকল্পনা আইন মান্যকারী নাগরিকদের অধিকার খর্ব করবে।

অন্যদিকে, ডানপন্থি রিফর্ম ইউকে দল একে ‘প্রতারণামূলক কৌশল’ বলে অভিহিত করেছে। দলটির নেতা নাইজেল ফারাজ বলেন, এতে অবৈধ অভিবাসন রোধ হবে না, বরং এটি সাধারণ নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ ও শাস্তি দিতে ব্যবহৃত হবে।

যুক্তরাজ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র চালুর বিষয়টি নতুন নয়। টনি ব্লেয়ারের আমলে লেবার সরকার এটি চালু করতে চাইলেও উত্তরসূরি গর্ডন ব্রাউন তা বাতিল করেন নাগরিক স্বাধীনতার প্রশ্নে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অভিবাসন ইস্যুতে জনমতের চাপ বাড়তে থাকায় লেবার সরকার ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। লেবারের আসন্ন সম্মেলনের আগ মুহূর্তে এ ঘোষণা রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ইতোমধ্যে আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক না করার দাবিতে ৫ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ একটি অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। তবে সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, নাগরিকদের একটি বড় অংশ ডিজিটাল আইডির পক্ষে মত দিচ্ছেন।

সানা/আপ্র/২৬/০৯/২০২৫

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিজিটাল আইডি ছাড়া কাজ করা যাবে না যুক্তরাজ্যে

আপডেট সময় : ০৫:৫৩:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে এবার কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ডিজিটাল পরিচয়পত্র চালুর পরিকল্পনা করেছে কিয়ার স্টারমারের লেবার সরকার। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঘোষিত এ উদ্যোগ দেশটিতে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, নাগরিক ও বাসিন্দাদের ডিজিটাল আইডি মোবাইল ফোনে সংরক্ষিত থাকবে। এতে নাম, জন্মতারিখ, ছবি, জাতীয়তা ও আবাসিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে এটি বহন বা দেখানোর কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না, কেবল কর্মক্ষেত্রে এটি বাধ্যতামূলক হবে।

সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাদের এখানে থাকার অধিকার নেই, তারা যেন আর কাজের সুযোগ না পায়, এ ব্যবস্থা সেটি নিশ্চিত করবে। অবৈধ অভিবাসনের অন্যতম প্রলোভন হচ্ছে উপার্জনের সুযোগ, ডিজিটাল আইডি তা বন্ধ করবে।

ডিজিটাল পরিচয় ব্যবস্থার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স, চাইল্ড কেয়ার, কল্যাণভাতা বা কর–সংক্রান্ত সেবার আবেদন সহজ হবে বলেও দাবি করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, ডিজিটাল আইডি যুক্তরাজ্যের জন্য বিশাল এক সুযোগ। এটি যে শুধু সীমান্ত সুরক্ষায় সহায়ক হবে তা না, সাধারণ নাগরিকও নানামুখী সুবিধা পাবেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, এ পরিকল্পনা মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নাগরিক স্বাধীনতার ওপর আঘাত করবে। লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা জানিয়েছে, মানুষকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দিতে বাধ্য করা যাবে না। বিরোধী কনজারভেটিভ দলের নেতা কেমি ব্যাডেনক এক্সে লিখেছেন, আমরা কোনো বাধ্যতামূলক আইডি ব্যবস্থার পক্ষে নই। এ ধরনের পরিকল্পনা আইন মান্যকারী নাগরিকদের অধিকার খর্ব করবে।

অন্যদিকে, ডানপন্থি রিফর্ম ইউকে দল একে ‘প্রতারণামূলক কৌশল’ বলে অভিহিত করেছে। দলটির নেতা নাইজেল ফারাজ বলেন, এতে অবৈধ অভিবাসন রোধ হবে না, বরং এটি সাধারণ নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ ও শাস্তি দিতে ব্যবহৃত হবে।

যুক্তরাজ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র চালুর বিষয়টি নতুন নয়। টনি ব্লেয়ারের আমলে লেবার সরকার এটি চালু করতে চাইলেও উত্তরসূরি গর্ডন ব্রাউন তা বাতিল করেন নাগরিক স্বাধীনতার প্রশ্নে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অভিবাসন ইস্যুতে জনমতের চাপ বাড়তে থাকায় লেবার সরকার ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। লেবারের আসন্ন সম্মেলনের আগ মুহূর্তে এ ঘোষণা রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ইতোমধ্যে আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক না করার দাবিতে ৫ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ একটি অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। তবে সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, নাগরিকদের একটি বড় অংশ ডিজিটাল আইডির পক্ষে মত দিচ্ছেন।

সানা/আপ্র/২৬/০৯/২০২৫