ঢাকা ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

ডিএসইর সূচক ও লেনদেনে বড় পতন

  • আপডেট সময় : ১২:২৮:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

পুঁজিবাজার ডেস্ক : কোভিড ১৯ মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের কারণে বিশ্বের পুঁজিবাজারের মতো বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের গতিও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে৷ বিদায়ী বছরে ডিএসইতে মূল্য সূচকের সাথে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। আলোচ্য বছরে ডিএিইর গড় লেনদেন কমেছে ৩৪.৮৬ শতাংশ। সূত্র জানায়, ২০২২ সালে ডিএসইতে ২৪৪ কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ২৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ২০২১ সালে ডিএসইতে ২৪০ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে তিন লাখ ৫৪ হাজার ৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার। বিদায়ী বছরে কমেছে ডিএসর গড় লেনদেনের পরিমাণ। ২০২২ সালে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে ৯৬০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ২০২১ সালে গড় লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ডিএসইর গড় লেনদেন কমেছে ৫১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ৩৫ শতাংশ।
মূল্য সূচক
বছরজুড়ে ডিএসইর মূল্য সূচকও কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্য সূচক ডিএসই ব্রড ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) আগের বছরের চেয়ে ৫৪৯.৮৫ পয়েন্ট বা ৮.১৪ শতাংশ কমে ৬২০৬.৮১ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ কার্যদিবস ডিএসইএক্স ছিল ছয় হাজার ৭৫৬.৬৫ পয়েন্টে।
২০২২ সালে ডিএসইএক্স মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ৭১০৫.৬৯ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনি¤œ ছিল ৫৯৮০.৫১ পয়েন্ট৷
ডিএসইর সেরা ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই ৩০ সূচক (ডিএস৩০) ৩৩৭.২৮ পয়েন্ট বা ১৩.৩২ শতাংশ কমে ২১৯৫.৩০ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷ ২০২১ সালের শেষ কার্যদিবস ডিএসই-৩০ সূচক ছিল দুই হাজার ৫৩২.৫৮ পয়েন্টে।
২০২২ সালে ডিএস৩০ মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ২৬৩৫.৩৮ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনি¤œ ছিল ২১৪৫.২৫ পয়েন্ট৷
একই বছর ডিএসইএক্স শরীয়াহ্ সূচক (ডিএসইএস) ৭২.২৯ পয়েন্ট বা ৫.০৫ শতাংশ কমে ১৩৫৮.৮৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷ ২০২১ সালের শেষ কার্যদিবস ডিএসই শরিয়াহ সূচক ছিল এক হাজার ৪৩১.১২ পয়েন্টে।
২০২২ সালে ডিএসইএস মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ১৫২২.৯৮ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনি¤œ ছিল ১৩০৮.২০ পয়েন্ট৷
ডিএসইর পিই রেশিও কমেছে ১৪%
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০২২ সালে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই রেশিও কমেছে। বছরের ব্যবধানে ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ১৩.৫৬ শতাংশ।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এ তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ সমূহের মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই দাঁড়ায় ১৪.০৮ পয়েন্ট৷ অপরদিকে ২০২১ সালে সামগ্রিক বাজার মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই ছিল ১৬.২৯ পয়েন্ট৷ এই হিসাবে ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ২.২১ পয়েন্ট বা ১৩.৫৬ শতাংশ। খাতওয়ারী সর্বনি¤œ অবস্থানের দিক থেকে মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই ছিল ব্যাংকিং খাতের। এই খাতের মার্কেট পিই ৭.৭৩ পয়েন্ট৷ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মার্কেট পিই ৯.১৫ পয়েন্ট, বিবিধ খাতের মার্কেট পিই ১১.৭৭ পয়েন্ট, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতের ১২.০৪, টেলিকমিউনিকেশন খাতের মার্কেট পিই ১৫.১০ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতের মার্কেট পিই ১৫.৮১ পয়েন্ট, বীমা খাতের মার্কেট পিই ১৭.১৩ পয়েন্ট, বস্ত্র খাতের মার্কেট পিই ১৭.৩০ পয়েন্ট, ওষুধ-রসায়ন খাতের মার্কেট পিই ১৭.৯৬ পয়েন্ট, আর্থিক খাতের পিই ১৯.১১ পযেন্ট, সেবা-আবাসন খাতের মার্কেট পিই ১৯.২৫ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতের মার্কেট পিই ১৯.৯১ পয়েন্ট, খাদ্য খাতের মার্কেট পিই ২১.২৩ পয়েন্ট, সিরামিক খাতের মার্কেট পিই ৩০.৬৫ পয়েন্ট, আইটি-খাতের মার্কেট পিই ৩০.৮০ পয়েন্ট, ট্যানারি খাতের মার্কেট পিই ৩৬.৯৯ পয়েন্ট, পাট খাতের মার্কেট পিই ৬৫.৬০ পয়েন্ট, কাগজ খাতের মার্কেট পিই ৬৭.২১ পয়েন্ট, এবং ভ্রমণ খাতের ২৬৬.৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে৷
ডিএসইর মোবাইল লেনদেন কমেছে
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০২২ সালে মোবাইলে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। বছরের ব্যবধানে মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন ১২ হাজার ৬০১ কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা কম হয়েছে। তবে আলোচ্য বছরে বেড়েছে মোবাইল লেনদেনকারীর সংখ্যা। আলোচ্য বছরে ডিএসইর মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা ৪৫টি বা ০.০৫৮ শতাংশ বেড়েছে।
এ বছর মোবাইলের মাধ্যমে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ হাজার ৭৯ কোটি ৮৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০২১ সালে মোবাইলের মাধ্যমে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৬৮১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এ হিসাবে ডিএসইতে মোবাইল লেনদেন কমেছে ১২ হাজার ৬০১ কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ২০২২ সালে এর মধ্যে ক্রয়ের পরিমান ছিল ১৫ হাজার ৩৫৩ কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বিক্রয়ের পরিমান ছিল ১৪ হাজার ৭২৬ কোটি ৩৫ লাখ ২০ হাজার টাকা৷ যা মোট লেনদেনের ১২.৮৩ শতাংশ৷ ২০২১ সালে ক্রয়ের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৭৮২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৮৯৮ কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা মোট লেনদেনের ১২.০৬ শতাংশ৷ ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে মোট ১৩.১০ মিলিয়ন আদেশ প্রেরণ করে৷ এর মধ্যে ১ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার আদেশ কার্যকর হয়৷ অপরদিকে ২০২১ সালে মোবাইলের মাধ্যমে মোট ১ কোটি ৭৬ লাখ ৪০ হাজার আদেশ প্রেরণ করে৷ এর মধ্যে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার আদেশ কার্যকর হয়৷ ২০২২ সাল শেষে মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৭১০৩ জনে। অপরদিকে ২০২১ সালে মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা ছিল ৭৭০৫৮ জন৷ অর্থাৎ বছর শেষে ডিএসইর মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা ৪৫টি বা ০.০৫৮ শতাংশ বেড়েছে।
ডিএসইর ব্লকে লেনদেন বেড়েছে ১.৪৪%
ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে লেনদেন বেড়েছে। আলোচ্য বছরে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২০২ কোটি টাকা বা ১.৪৪ শতাংশ। সূত্র জানায়, ২০২২ সালে শেষ কার্যদিবস ব্লক মার্কেটে লেনদেন দাঁড়ায় ১৪ হাজার ২,৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার৷ আর ২০২১ সালের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত ব্লক মার্কেটে লেনদেন হয়েছিল ১৪ হাজার ০৫১ কোট ০৮ লাখ ৩০ হাজার টাকার। এহিসাবে বছরের ব্যবধানে ব্লক মার্কেটে লেনদেন ২০২ কোট ১১ লাখ ২০ টাকার টাকা বা ১.৪৪ শতাংশ বেড়েছে।
বেড়েছে এসএমই কোম্পানি
বিদায়ী বছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেড়েছে এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা। ২০২২ সালে ডিএসইর এসএমই প্লাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫টি। কোম্পানিগুলোর মোট লেনদেনের পরিমাণ ২ হাজার ৪৪৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, বছর শেষে এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বাজার মূলধনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৯০ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ২০২২ সালে এসএমই উদ্যোক্তারা ৬টি কোম্পানির (মামুন এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেড, কৃষিবিদ সিড লি., স্টার অ্যাডেসিভস লিমিটেড, বিডি পেইন্টস লিমিটেড, আছিয়া সি ফুডস লি. এবং নিয়ালকো অ্যালোস লিঃ) মাধ্যমে ৬১১ মিলিয়ন টাকা মূলধন উওোলন করে৷ অপরদিকে ২০২১ সালে ৪টি কোম্পানি ৫৩০ মিলিয়ন টাকা মূলধন উওোলন করেছিল৷ প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ডিএসই ২০২১ সালে ৬টি এসএমই কোম্পানি নিয়ে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্মে লেনদেনের শুভসুচনা করে৷
কমেছে আইপিও আর রাইটের পরিমাণ
পুঁজিবাজারে মন্দার কারণে বিদায়ী বছরে কমেছে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ও রাইট শেয়ার ইস্যুর পরমাণ। ২০২২ সালে আইপিওর মাধ্যমে ৬টি কোম্পানি মাত্র ৭১৩ কোটি ৭৮ লাখ ১০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে। যেখানে ২০২১ সালে ১৯টি কোম্পানি ১ হাজার ৮৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আপিওর মাধ্যমে সংগ্রহ করেছিল। সূত্র জানায়, ২০২২ সালে ৬টি কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে ৭১৩ কোটি ৭৮ লাখ ১০ হাজার টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ এর মধ্যে ২টি কোম্পানি প্রিমিয়াম বাবদ মূলধন সংগ্রহ করে ৮৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এছাড়াও ১টি পারপিচ্যুয়াল বন্ড এবং ১টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে ৭৫ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করে এবং ১ পারপিচ্যুয়াল বন্ড প্রাইভেট প্লেসম্যান্টের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ অপরদিকে, ২০২১ সালে ১৯টি কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও’র মাধ্যমে মোট ১ হাজার ৮৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা মূলধন সংগ্রহ করা হয়৷ এর মধ্যে ১৪টি কোম্পানি (৩টি কোম্পানির প্রিমিয়ামসহ) ১ হাজার ২৩৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মূলধন উত্তোলন করে৷ একটি সুকুক বন্ড ৪২৫ কোটি এবং ৪টি পারপিচ্যুয়াল বন্ড ২,০০০ মিলিয়ন মূলধন সংগ্রহ করেছিল৷
রাইট শেয়ার ইস্যু
২০২২ সাল ১টি কোম্পানি ১ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মোট ১০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ অপরদিকে ২০২১ সালে ২টি কোম্পানি ৫ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৫১.৮৪ মিলিয়ন রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৭৭ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ এর প্রিমিয়াম বাবদ মূলধন সংগ্রহ করে ২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা। –

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যে ভাইকে জেল থেকে বের করেছি, সেই আমার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করল…

ডিএসইর সূচক ও লেনদেনে বড় পতন

আপডেট সময় : ১২:২৮:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২

পুঁজিবাজার ডেস্ক : কোভিড ১৯ মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের কারণে বিশ্বের পুঁজিবাজারের মতো বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের গতিও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে৷ বিদায়ী বছরে ডিএসইতে মূল্য সূচকের সাথে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। আলোচ্য বছরে ডিএিইর গড় লেনদেন কমেছে ৩৪.৮৬ শতাংশ। সূত্র জানায়, ২০২২ সালে ডিএসইতে ২৪৪ কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ২৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ২০২১ সালে ডিএসইতে ২৪০ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে তিন লাখ ৫৪ হাজার ৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার। বিদায়ী বছরে কমেছে ডিএসর গড় লেনদেনের পরিমাণ। ২০২২ সালে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে ৯৬০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ২০২১ সালে গড় লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ডিএসইর গড় লেনদেন কমেছে ৫১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ৩৫ শতাংশ।
মূল্য সূচক
বছরজুড়ে ডিএসইর মূল্য সূচকও কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্য সূচক ডিএসই ব্রড ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) আগের বছরের চেয়ে ৫৪৯.৮৫ পয়েন্ট বা ৮.১৪ শতাংশ কমে ৬২০৬.৮১ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ কার্যদিবস ডিএসইএক্স ছিল ছয় হাজার ৭৫৬.৬৫ পয়েন্টে।
২০২২ সালে ডিএসইএক্স মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ৭১০৫.৬৯ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনি¤œ ছিল ৫৯৮০.৫১ পয়েন্ট৷
ডিএসইর সেরা ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই ৩০ সূচক (ডিএস৩০) ৩৩৭.২৮ পয়েন্ট বা ১৩.৩২ শতাংশ কমে ২১৯৫.৩০ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷ ২০২১ সালের শেষ কার্যদিবস ডিএসই-৩০ সূচক ছিল দুই হাজার ৫৩২.৫৮ পয়েন্টে।
২০২২ সালে ডিএস৩০ মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ২৬৩৫.৩৮ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনি¤œ ছিল ২১৪৫.২৫ পয়েন্ট৷
একই বছর ডিএসইএক্স শরীয়াহ্ সূচক (ডিএসইএস) ৭২.২৯ পয়েন্ট বা ৫.০৫ শতাংশ কমে ১৩৫৮.৮৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়৷ ২০২১ সালের শেষ কার্যদিবস ডিএসই শরিয়াহ সূচক ছিল এক হাজার ৪৩১.১২ পয়েন্টে।
২০২২ সালে ডিএসইএস মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ১৫২২.৯৮ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনি¤œ ছিল ১৩০৮.২০ পয়েন্ট৷
ডিএসইর পিই রেশিও কমেছে ১৪%
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০২২ সালে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই রেশিও কমেছে। বছরের ব্যবধানে ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ১৩.৫৬ শতাংশ।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এ তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ সমূহের মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই দাঁড়ায় ১৪.০৮ পয়েন্ট৷ অপরদিকে ২০২১ সালে সামগ্রিক বাজার মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই ছিল ১৬.২৯ পয়েন্ট৷ এই হিসাবে ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ২.২১ পয়েন্ট বা ১৩.৫৬ শতাংশ। খাতওয়ারী সর্বনি¤œ অবস্থানের দিক থেকে মূল্য আয় অনুপাত বা মার্কেট পিই ছিল ব্যাংকিং খাতের। এই খাতের মার্কেট পিই ৭.৭৩ পয়েন্ট৷ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মার্কেট পিই ৯.১৫ পয়েন্ট, বিবিধ খাতের মার্কেট পিই ১১.৭৭ পয়েন্ট, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতের ১২.০৪, টেলিকমিউনিকেশন খাতের মার্কেট পিই ১৫.১০ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতের মার্কেট পিই ১৫.৮১ পয়েন্ট, বীমা খাতের মার্কেট পিই ১৭.১৩ পয়েন্ট, বস্ত্র খাতের মার্কেট পিই ১৭.৩০ পয়েন্ট, ওষুধ-রসায়ন খাতের মার্কেট পিই ১৭.৯৬ পয়েন্ট, আর্থিক খাতের পিই ১৯.১১ পযেন্ট, সেবা-আবাসন খাতের মার্কেট পিই ১৯.২৫ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতের মার্কেট পিই ১৯.৯১ পয়েন্ট, খাদ্য খাতের মার্কেট পিই ২১.২৩ পয়েন্ট, সিরামিক খাতের মার্কেট পিই ৩০.৬৫ পয়েন্ট, আইটি-খাতের মার্কেট পিই ৩০.৮০ পয়েন্ট, ট্যানারি খাতের মার্কেট পিই ৩৬.৯৯ পয়েন্ট, পাট খাতের মার্কেট পিই ৬৫.৬০ পয়েন্ট, কাগজ খাতের মার্কেট পিই ৬৭.২১ পয়েন্ট, এবং ভ্রমণ খাতের ২৬৬.৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে৷
ডিএসইর মোবাইল লেনদেন কমেছে
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০২২ সালে মোবাইলে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। বছরের ব্যবধানে মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন ১২ হাজার ৬০১ কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা কম হয়েছে। তবে আলোচ্য বছরে বেড়েছে মোবাইল লেনদেনকারীর সংখ্যা। আলোচ্য বছরে ডিএসইর মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা ৪৫টি বা ০.০৫৮ শতাংশ বেড়েছে।
এ বছর মোবাইলের মাধ্যমে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ হাজার ৭৯ কোটি ৮৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০২১ সালে মোবাইলের মাধ্যমে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৬৮১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এ হিসাবে ডিএসইতে মোবাইল লেনদেন কমেছে ১২ হাজার ৬০১ কোটি ৭৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ২০২২ সালে এর মধ্যে ক্রয়ের পরিমান ছিল ১৫ হাজার ৩৫৩ কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বিক্রয়ের পরিমান ছিল ১৪ হাজার ৭২৬ কোটি ৩৫ লাখ ২০ হাজার টাকা৷ যা মোট লেনদেনের ১২.৮৩ শতাংশ৷ ২০২১ সালে ক্রয়ের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৭৮২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৮৯৮ কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা মোট লেনদেনের ১২.০৬ শতাংশ৷ ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে মোট ১৩.১০ মিলিয়ন আদেশ প্রেরণ করে৷ এর মধ্যে ১ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার আদেশ কার্যকর হয়৷ অপরদিকে ২০২১ সালে মোবাইলের মাধ্যমে মোট ১ কোটি ৭৬ লাখ ৪০ হাজার আদেশ প্রেরণ করে৷ এর মধ্যে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার আদেশ কার্যকর হয়৷ ২০২২ সাল শেষে মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৭১০৩ জনে। অপরদিকে ২০২১ সালে মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা ছিল ৭৭০৫৮ জন৷ অর্থাৎ বছর শেষে ডিএসইর মোবাইলে লেনদেনকারীর সংখ্যা ৪৫টি বা ০.০৫৮ শতাংশ বেড়েছে।
ডিএসইর ব্লকে লেনদেন বেড়েছে ১.৪৪%
ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে লেনদেন বেড়েছে। আলোচ্য বছরে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২০২ কোটি টাকা বা ১.৪৪ শতাংশ। সূত্র জানায়, ২০২২ সালে শেষ কার্যদিবস ব্লক মার্কেটে লেনদেন দাঁড়ায় ১৪ হাজার ২,৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার৷ আর ২০২১ সালের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত ব্লক মার্কেটে লেনদেন হয়েছিল ১৪ হাজার ০৫১ কোট ০৮ লাখ ৩০ হাজার টাকার। এহিসাবে বছরের ব্যবধানে ব্লক মার্কেটে লেনদেন ২০২ কোট ১১ লাখ ২০ টাকার টাকা বা ১.৪৪ শতাংশ বেড়েছে।
বেড়েছে এসএমই কোম্পানি
বিদায়ী বছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেড়েছে এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা। ২০২২ সালে ডিএসইর এসএমই প্লাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫টি। কোম্পানিগুলোর মোট লেনদেনের পরিমাণ ২ হাজার ৪৪৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, বছর শেষে এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বাজার মূলধনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৯০ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ২০২২ সালে এসএমই উদ্যোক্তারা ৬টি কোম্পানির (মামুন এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেড, কৃষিবিদ সিড লি., স্টার অ্যাডেসিভস লিমিটেড, বিডি পেইন্টস লিমিটেড, আছিয়া সি ফুডস লি. এবং নিয়ালকো অ্যালোস লিঃ) মাধ্যমে ৬১১ মিলিয়ন টাকা মূলধন উওোলন করে৷ অপরদিকে ২০২১ সালে ৪টি কোম্পানি ৫৩০ মিলিয়ন টাকা মূলধন উওোলন করেছিল৷ প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ডিএসই ২০২১ সালে ৬টি এসএমই কোম্পানি নিয়ে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্মে লেনদেনের শুভসুচনা করে৷
কমেছে আইপিও আর রাইটের পরিমাণ
পুঁজিবাজারে মন্দার কারণে বিদায়ী বছরে কমেছে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ও রাইট শেয়ার ইস্যুর পরমাণ। ২০২২ সালে আইপিওর মাধ্যমে ৬টি কোম্পানি মাত্র ৭১৩ কোটি ৭৮ লাখ ১০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে। যেখানে ২০২১ সালে ১৯টি কোম্পানি ১ হাজার ৮৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আপিওর মাধ্যমে সংগ্রহ করেছিল। সূত্র জানায়, ২০২২ সালে ৬টি কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে ৭১৩ কোটি ৭৮ লাখ ১০ হাজার টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ এর মধ্যে ২টি কোম্পানি প্রিমিয়াম বাবদ মূলধন সংগ্রহ করে ৮৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এছাড়াও ১টি পারপিচ্যুয়াল বন্ড এবং ১টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে ৭৫ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করে এবং ১ পারপিচ্যুয়াল বন্ড প্রাইভেট প্লেসম্যান্টের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ অপরদিকে, ২০২১ সালে ১৯টি কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও’র মাধ্যমে মোট ১ হাজার ৮৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা মূলধন সংগ্রহ করা হয়৷ এর মধ্যে ১৪টি কোম্পানি (৩টি কোম্পানির প্রিমিয়ামসহ) ১ হাজার ২৩৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মূলধন উত্তোলন করে৷ একটি সুকুক বন্ড ৪২৫ কোটি এবং ৪টি পারপিচ্যুয়াল বন্ড ২,০০০ মিলিয়ন মূলধন সংগ্রহ করেছিল৷
রাইট শেয়ার ইস্যু
২০২২ সাল ১টি কোম্পানি ১ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মোট ১০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ অপরদিকে ২০২১ সালে ২টি কোম্পানি ৫ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৫১.৮৪ মিলিয়ন রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৭৭ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূলধন সংগ্রহ করে৷ এর প্রিমিয়াম বাবদ মূলধন সংগ্রহ করে ২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা। –