ঢাকা ১০:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ডা. ফয়েজ হত্যা,শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এ অভিযোগ দাখিল করেন ফয়েজ আহমেদের ছেলে ডা. হাসানুল বান্না।

আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের পর এসংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে ডা. ফয়েজ আহমেদের নিজ বাসার ছাদে নিয়ে আঘাত করে, গুলি করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমেদ অত্যন্ত মানবিক ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

তার সন্তান ডা. হাসানুল বান্না আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনীত অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক এ.ডি.জি র‌্যাব মে. জে. জিয়াউল আহসান, র‌্যাব-১১ এর সাবেক সি.ই.ও তারেক সাইদ মোহাম্মদসহ ৪১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে র‌্যাবের স্টিকার যুক্ত একটি গাড়িতে করে বাসায় এসে লোহার গেট ভেঙে ফেলে এবং ভিকটিম ডা. ফয়েজ আহমেদকে নিজের বাসার দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে ধরে নিয়ে বিল্ডিংয়ের ছাদে নিয়ে যায়।

এ সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যরা (আসামিরা) বিল্ডিং ঢুকে সকল কক্ষের দরজার তালা ভেঙে তল্লাশি ও ভাঙচুর চালায়। ডা. ফয়েজ আহমেদকে ছাদে নিয়ে তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার সম্মুখ ভাগ ও নাকে মুখেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশে আসামি তারেক সাইদ মোহাম্মদ তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ডা. ফয়েজ আহমেদের ডান হাঁটুর ওপরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে, তাতে ওই স্থানে গভীর ক্ষত হয়ে ব্যাপক রক্তপাত হয়।

এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ডা. ফয়েজ আহমেদকে তৃতীয় তলার ছাদের ওপর থেকে উপুড় করে (অর্থাৎ মাথা নিচের দিকে দিয়ে) বিল্ডিংয়ের সামনের অংশের নিচে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তার মরদেহ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে রেখে আসে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক সংগঠিত মানবতা বিরোধী অপরাধটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজকের অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে ওই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার কামনা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তখন বিএনপি জামায়াতসহ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছিল। সে আন্দোলন দমন ও নির্মূলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীসহ বিরোধীদের দমনে হত্যা-গুমের আশ্রয় নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ডা. ফয়েজকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঢাকায় কাউন্টার থেকে চলবে ২১ কোম্পানির গোলাপী বাস

ডা. ফয়েজ হত্যা,শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৮:৪৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এ অভিযোগ দাখিল করেন ফয়েজ আহমেদের ছেলে ডা. হাসানুল বান্না।

আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের পর এসংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে ডা. ফয়েজ আহমেদের নিজ বাসার ছাদে নিয়ে আঘাত করে, গুলি করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমেদ অত্যন্ত মানবিক ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

তার সন্তান ডা. হাসানুল বান্না আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনীত অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক এ.ডি.জি র‌্যাব মে. জে. জিয়াউল আহসান, র‌্যাব-১১ এর সাবেক সি.ই.ও তারেক সাইদ মোহাম্মদসহ ৪১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে র‌্যাবের স্টিকার যুক্ত একটি গাড়িতে করে বাসায় এসে লোহার গেট ভেঙে ফেলে এবং ভিকটিম ডা. ফয়েজ আহমেদকে নিজের বাসার দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে ধরে নিয়ে বিল্ডিংয়ের ছাদে নিয়ে যায়।

এ সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যরা (আসামিরা) বিল্ডিং ঢুকে সকল কক্ষের দরজার তালা ভেঙে তল্লাশি ও ভাঙচুর চালায়। ডা. ফয়েজ আহমেদকে ছাদে নিয়ে তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার সম্মুখ ভাগ ও নাকে মুখেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশে আসামি তারেক সাইদ মোহাম্মদ তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ডা. ফয়েজ আহমেদের ডান হাঁটুর ওপরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে, তাতে ওই স্থানে গভীর ক্ষত হয়ে ব্যাপক রক্তপাত হয়।

এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ডা. ফয়েজ আহমেদকে তৃতীয় তলার ছাদের ওপর থেকে উপুড় করে (অর্থাৎ মাথা নিচের দিকে দিয়ে) বিল্ডিংয়ের সামনের অংশের নিচে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তার মরদেহ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে রেখে আসে। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক সংগঠিত মানবতা বিরোধী অপরাধটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজকের অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে ওই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার কামনা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তখন বিএনপি জামায়াতসহ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছিল। সে আন্দোলন দমন ও নির্মূলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীসহ বিরোধীদের দমনে হত্যা-গুমের আশ্রয় নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ডা. ফয়েজকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।