ঢাকা ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

ডা. প্রাণ গোপালের মেয়ে ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ, সেনা হস্তক্ষেপে মুক্ত

  • আপডেট সময় : ০৫:৩৯:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক অনিন্দিতা দত্তকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে বাসায় পৌঁছ দিয়েছেন সেনা সদস্যরা, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের মেয়ে।

রোববার (১৬ মার্চ) বেলা আড়াইটার পর সেনা সদস্যরা ডা. অনিন্দিতাকে ধানমন্ডিতে তার বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন।

সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, বেলা আড়াইটার পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা ডা. অনিন্দিতা দত্তকে বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন। আমি যতদূর জেনেছি আমাদের প্রশাসন আর্মি কল করেছিল। এছাড়া পুলিশও এসেছিল ঘটনাস্থলে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই চিকিৎসককে হাসপাতাল থেকে বের করে ধানমন্ডি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন।

তার আগে সকাল ৮টায় অফিসে আসার পর থেকে এক দল লোক অনিন্দিতা দত্তকে ক্যান্সার ভবনে তার কার্যালয়ে আটকে রেখেছিলেন।

দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. শেখ ফরহাদ একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, প্রাণ গোপাল স্যারের মেয়ে এখানে চাকরি করেন। তাকে এখানে আটক করা হয়েছে। কারা কারা যেন মিডিয়াও নিয়ে এসেছে।

আমরাও উনার সঙ্গে বন্দি হয়ে আছি এখানে। ঘটনাস্থলে আর্মিও এসেছে। আমরাও ঝামেলায় আছি। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।

কারা, কী কারণে ডা. অনিন্দিতা দত্তকে আটকে রাখা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি ডা. শেখ ফরহাদ।

ডা. অনিন্দিতা দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ ব্লকে, ক্যান্সার ভবনে।

তার বাবা ডা. প্রাণ গোপাল ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএসএমএমইউর উপাচার্য ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি কুমিল্লা-৭ আসনের উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) বদলে বিশ্ববিদ্যালয়টির নামকরণ হয় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেছেন, ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর প্রাণ গোপাল দত্তের বিরুদ্ধে ঢাকা ও কুমিল্লায় কয়েকটি মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় আসামি করা হয়েছে অনিন্দিতা দত্তকেও।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের পর থেকে অনিন্দিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছিলেন না। দুদিন ধরে তিনি আসা শুরু করেছেন।

ওই চিকিৎসক বলেন, সকালে এক দল লোক এসে ক্যান্সার ভবনের চার তলার একটি কক্ষে অনিন্দিতাকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ ও বেলা দেড়টার দিকে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন।

শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, আমরাও এমন একটা ঘটনা শুনেছি। সেখানে পুলিশ আছে, আর্মি আছে।

অনিন্দিতা দত্তকে যারা অবরুদ্ধ করেছিলেন তাদের একজন রুবেল আহমেদ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অনিন্দিতা দত্তকে তারা অনেকদিন ধরে খুঁজছেন, কিন্তু পাচ্ছিলেন না। রোববার সকালে মামলার বাদী তাদের জানিয়েছেন অনিন্দিতা দত্ত এখানে (বিশ্ববিদ্যালয়ে) অফিস করছেন।

ইনফরমেশন পেয়ে সকাল ৭টা থেকে আমরা এখানে অবস্থান করছি। আমাদের শাহবাগের ছাত্রদলের ছেলেপেলে যারা আছে তারা এখানে অবস্থান করেছেন। যারা আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট যারা আছে তারা আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছিল, লুকাইতে চাচ্ছিল।

রুবেল আহমেদ নিজেকে শাহবাগ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, সাদ্দামের নেতৃত্বে তারা এখানে এসেছেন।

জানতে চাইলে শাহবাগ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের আজ দুটো প্রোগ্রাম। একটা খিলগাঁওয়ে আরেকটা ঢাকা মেডিকেলে। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনো নেতাকর্মী যায়নি। কারণ সেখানে গেলে আমি অথবা সভাপতি জানতাম।

দলীয় পদ নেই, মিছিল মিটিংয়ে আসে এমন অনেক লোক আছে। তাদের কেউ কি না আমি খোঁজ নিচ্ছি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডা. প্রাণ গোপালের মেয়ে ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ, সেনা হস্তক্ষেপে মুক্ত

আপডেট সময় : ০৫:৩৯:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক অনিন্দিতা দত্তকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে বাসায় পৌঁছ দিয়েছেন সেনা সদস্যরা, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের মেয়ে।

রোববার (১৬ মার্চ) বেলা আড়াইটার পর সেনা সদস্যরা ডা. অনিন্দিতাকে ধানমন্ডিতে তার বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন।

সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, বেলা আড়াইটার পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা ডা. অনিন্দিতা দত্তকে বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন। আমি যতদূর জেনেছি আমাদের প্রশাসন আর্মি কল করেছিল। এছাড়া পুলিশও এসেছিল ঘটনাস্থলে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই চিকিৎসককে হাসপাতাল থেকে বের করে ধানমন্ডি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন।

তার আগে সকাল ৮টায় অফিসে আসার পর থেকে এক দল লোক অনিন্দিতা দত্তকে ক্যান্সার ভবনে তার কার্যালয়ে আটকে রেখেছিলেন।

দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. শেখ ফরহাদ একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, প্রাণ গোপাল স্যারের মেয়ে এখানে চাকরি করেন। তাকে এখানে আটক করা হয়েছে। কারা কারা যেন মিডিয়াও নিয়ে এসেছে।

আমরাও উনার সঙ্গে বন্দি হয়ে আছি এখানে। ঘটনাস্থলে আর্মিও এসেছে। আমরাও ঝামেলায় আছি। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।

কারা, কী কারণে ডা. অনিন্দিতা দত্তকে আটকে রাখা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি ডা. শেখ ফরহাদ।

ডা. অনিন্দিতা দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ ব্লকে, ক্যান্সার ভবনে।

তার বাবা ডা. প্রাণ গোপাল ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএসএমএমইউর উপাচার্য ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি কুমিল্লা-৭ আসনের উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) বদলে বিশ্ববিদ্যালয়টির নামকরণ হয় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেছেন, ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর প্রাণ গোপাল দত্তের বিরুদ্ধে ঢাকা ও কুমিল্লায় কয়েকটি মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় আসামি করা হয়েছে অনিন্দিতা দত্তকেও।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের পর থেকে অনিন্দিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছিলেন না। দুদিন ধরে তিনি আসা শুরু করেছেন।

ওই চিকিৎসক বলেন, সকালে এক দল লোক এসে ক্যান্সার ভবনের চার তলার একটি কক্ষে অনিন্দিতাকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ ও বেলা দেড়টার দিকে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন।

শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, আমরাও এমন একটা ঘটনা শুনেছি। সেখানে পুলিশ আছে, আর্মি আছে।

অনিন্দিতা দত্তকে যারা অবরুদ্ধ করেছিলেন তাদের একজন রুবেল আহমেদ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অনিন্দিতা দত্তকে তারা অনেকদিন ধরে খুঁজছেন, কিন্তু পাচ্ছিলেন না। রোববার সকালে মামলার বাদী তাদের জানিয়েছেন অনিন্দিতা দত্ত এখানে (বিশ্ববিদ্যালয়ে) অফিস করছেন।

ইনফরমেশন পেয়ে সকাল ৭টা থেকে আমরা এখানে অবস্থান করছি। আমাদের শাহবাগের ছাত্রদলের ছেলেপেলে যারা আছে তারা এখানে অবস্থান করেছেন। যারা আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট যারা আছে তারা আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছিল, লুকাইতে চাচ্ছিল।

রুবেল আহমেদ নিজেকে শাহবাগ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, সাদ্দামের নেতৃত্বে তারা এখানে এসেছেন।

জানতে চাইলে শাহবাগ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের আজ দুটো প্রোগ্রাম। একটা খিলগাঁওয়ে আরেকটা ঢাকা মেডিকেলে। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনো নেতাকর্মী যায়নি। কারণ সেখানে গেলে আমি অথবা সভাপতি জানতাম।

দলীয় পদ নেই, মিছিল মিটিংয়ে আসে এমন অনেক লোক আছে। তাদের কেউ কি না আমি খোঁজ নিচ্ছি।