নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। বুধবারই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলমের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট তার অপর আদেশে ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধে আনা রিটকারী ও ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলমের সব অভিযোগ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ডাকসুর নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি ওই ট্রাইব্যুনালকে অভিযোগ আমলে নিতে এবং এ বিষয়ে সবার উপস্থিতিতে শুনানি ও অনুসন্ধান করে আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি রুলও জারি করেছিলেন আদালত।
ওই আদেশের কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা বিবিধ আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালত। এর ফলে ডাকসু নির্বাচনে আপাতত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে লেখা একটি আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত তাৎক্ষণিক এ আদেশ দেন।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় পুনরায় মামলাটির বিষয়ে আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন নিয়ে চেম্বার জজ আদালতে গেলে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য মামলার দিন নির্ধারণ করা হলো।
জানা গেছে, নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় এবং হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ২১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এসি/সানা/আপ্র/০২/০৯/২০২৫