ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: আসছে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য একটি ‘রোডম্যাপ’ বা ‘পথনকশা’ ঘোষণা ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন মনে করে ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে।
“একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর এবং সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ ও অগ্রগতি সম্বলিত পথ নকশা প্রকাশ করা হল।” বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন পক্ষ ডাকসু নির্বাচনের ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিল। শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন পর্যন্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে ৩৭ বার। এর মধ্যে ২৯ বারই হয়েছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ৫০ বছরে। স্বাধীন দেশে ৫৩ বছরে মাত্র ৮ বার ভোট দেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রতি বছর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। ডাকসু মনোনীত পাঁচ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হন। তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও সুযোগের বিষয় তুলে ধরেন সিনেটে। সববেশ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই সংসদের মেয়াদপূর্তির পর পেরিয়ে গেছে আরো পাঁচ বছর। নির্বাচন না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে থাকছে না শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ডাকসু নির্বাচনের দাবি নিয়ে নতুন করে সরব হয় বিভিন্ন পক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথমে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনার কথা বললেও পরে নির্বাচনে বিষয়ে তিনটি কমিটি করে দিয়ে বলে, এসব কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ভোট করা হবে।
* ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন সফলভাবে আয়োজনের বিষয়ে পরামর্শ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশাকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি।
* ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়ন বা সংশোধনের জন্য উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্যের কমিটি।
* ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংশোধন বা পরিমার্জনের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল হককে আহ্বায়ক করে কমিটি।
ঘোষিত রোডম্যাপে বলা হয়েছে, ডাকসুর সংশোধিত গঠনতন্ত্র এবং ডাকসু নির্বাচনের সংশোধিত আচরণবিধির খসড়া ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং বিষয়টি এখন সিন্ডিকেটের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। নির্বাচন সফলভাবে আয়োজনের বিষয়ে পরামর্শ দিতে গঠিত কমিটি বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মত বিনিময় করেছে এবং তাদের সুপারিশ মধ্য এপ্রিলে চূড়ান্ত করা হবে। এ পর্যন্ত যা যা অগ্রগতি হয়েছে, সে বিষয়ে মধ্য এপ্রিলে ছাত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি প্রভোস্ট, ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মধ্য মত বিনিময় করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর মে মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। সব প্রস্তুতি সেরে নির্বাচন কমিশন উপাচার্যের সঙ্গে পরামর্শ করে ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে।