ঢাকা ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

ডলারের বিনিময় হার বেঁধে দিল বাফেদা

  • আপডেট সময় : ০২:৩৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত মেনে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ডলার কেনাবেচার অভিন্ন দর ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন-বাফেদা এবং ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি। সোমবার থেকে দেশে আসা রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে ডলারের বিনিময় হার হবে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা। রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ ৯৯ টাকা পাবেন ব্যবসায়ীরা। আর আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হবে রেমিটেন্স ও রপ্তানির বিনিময় হারের গড় করে। গতকাল রোববার এবিবি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম ডলারের এই বিনিময় হার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এই বিনিময় হার সোমবার থেকে কার্যকর হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী সময়ে সময়ে পরিবর্তন আনা হতে পারে। সরবরাহে টান পড়ে চাহিদা বাড়লে গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ডলারের দর বাড়তে থাকে। আর চলতি বছরের মার্চের পর থেকে সংকট তীব্র হলে ক্রমে আকাশচুম্বী হতে থাকে প্রধান এ বিদেশি মুদ্রার দর। এরপর অস্থিরতা কমাতে নীতি সিদ্ধান্তসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ধারাবাহিক এসব উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত ২৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈঠক করে বাফেদা ও ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির সঙ্গে। ওই বৈঠকে নির্দিষ্ট একটি ‘সিলিংয়ের’ মধ্যে আন্তঃব্যাংকে লেনদেনে ডলারের একক দর নির্ধারণের সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছিল বাফেদা। বাংলাদেশ ব্যাংক এর আগে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দর নির্ধারণের বিষয়টি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। নিয়মিত টাকার মান কমানোর পাশাপাশি চাহিদা মেটাতে বড় অঙ্কের ডলারও বিক্রি করে আসছিল। তখনই আলোচনা শুরু হয়েছিল, একক দর নির্ধারণ করবে বাফেদা। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ডলারের বিনিময় হার কেমন হবে সেটির প্রস্তাব দেবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক সেই দর বাস্তবায়নে তদারকি করবে। ওই বৈঠকের পর মে মাসের শেষ সপ্তাহে বাফেদা একটি প্রস্তাবও জমা দেয়। সে অনুযায়ী কিছু সিদ্ধান্ত এলেও পরের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে।
এর মধ্যে ডলারের সংকট আরও বাড়লে এবং আন্তঃব্যাংকে কোনো নির্দিষ্ট দর না থাকায় বাড়তি মুনাফা করতে কিছু ব্যাংক ডলার লেনদেন একেবারে কমিয়ে দেয়। এতে আন্তঃব্যাংক লেনদেন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো দেশের অন্য ব্যাংকে ডলার না পেয়ে আমদানি দায় মেটাতে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে বা অন্য ব্যাংকের কাছ থেকে উচ্চ দরে ডলার কিনতে বাধ্য হয়। কখনও কখনও গ্রাহককেও ডলার সংগ্রহ করতে হয়। এ সময়ে ব্যাংকে নগদ ডলারের দর ওঠে ১০৭ টাকা, আর খোলা বাজারে এক পর্যায়ে তা রেকর্ড ১২১ টাকায় ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে বাফেদার কার্যক্রমে গতি না আসায় আবারও সংগঠনটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। গত ১৪ অগাস্টের বৈঠকে ব্যাংকের নগদ ডলার কেনা ও বেচার ব্যবধান সর্বোচ্চ এক টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে আন্তঃব্যাংক লেনদেন বাজার সক্রিয় করতে আবারও সংগঠনটি প্রস্তাব দেবে বলে জানায়। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর এবিবি ও বাফেদার প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে আবারও বৈঠক করেন। আফজাল করিম সেদিন বলেছিলেন, ডলারের দাম নির্ধারণ করতে রোববার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন তারা। এর ধারাবাহিকতায় রোববার সেই দর বেঁধে দেওয়ার ঘোষণা এল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নুরুল হকের ওপর নৃশংস হামলার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে

ডলারের বিনিময় হার বেঁধে দিল বাফেদা

আপডেট সময় : ০২:৩৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত মেনে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ডলার কেনাবেচার অভিন্ন দর ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন-বাফেদা এবং ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি। সোমবার থেকে দেশে আসা রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে ডলারের বিনিময় হার হবে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা। রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ ৯৯ টাকা পাবেন ব্যবসায়ীরা। আর আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হবে রেমিটেন্স ও রপ্তানির বিনিময় হারের গড় করে। গতকাল রোববার এবিবি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম ডলারের এই বিনিময় হার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এই বিনিময় হার সোমবার থেকে কার্যকর হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী সময়ে সময়ে পরিবর্তন আনা হতে পারে। সরবরাহে টান পড়ে চাহিদা বাড়লে গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ডলারের দর বাড়তে থাকে। আর চলতি বছরের মার্চের পর থেকে সংকট তীব্র হলে ক্রমে আকাশচুম্বী হতে থাকে প্রধান এ বিদেশি মুদ্রার দর। এরপর অস্থিরতা কমাতে নীতি সিদ্ধান্তসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ধারাবাহিক এসব উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত ২৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈঠক করে বাফেদা ও ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির সঙ্গে। ওই বৈঠকে নির্দিষ্ট একটি ‘সিলিংয়ের’ মধ্যে আন্তঃব্যাংকে লেনদেনে ডলারের একক দর নির্ধারণের সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছিল বাফেদা। বাংলাদেশ ব্যাংক এর আগে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দর নির্ধারণের বিষয়টি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। নিয়মিত টাকার মান কমানোর পাশাপাশি চাহিদা মেটাতে বড় অঙ্কের ডলারও বিক্রি করে আসছিল। তখনই আলোচনা শুরু হয়েছিল, একক দর নির্ধারণ করবে বাফেদা। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ডলারের বিনিময় হার কেমন হবে সেটির প্রস্তাব দেবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক সেই দর বাস্তবায়নে তদারকি করবে। ওই বৈঠকের পর মে মাসের শেষ সপ্তাহে বাফেদা একটি প্রস্তাবও জমা দেয়। সে অনুযায়ী কিছু সিদ্ধান্ত এলেও পরের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে।
এর মধ্যে ডলারের সংকট আরও বাড়লে এবং আন্তঃব্যাংকে কোনো নির্দিষ্ট দর না থাকায় বাড়তি মুনাফা করতে কিছু ব্যাংক ডলার লেনদেন একেবারে কমিয়ে দেয়। এতে আন্তঃব্যাংক লেনদেন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো দেশের অন্য ব্যাংকে ডলার না পেয়ে আমদানি দায় মেটাতে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে বা অন্য ব্যাংকের কাছ থেকে উচ্চ দরে ডলার কিনতে বাধ্য হয়। কখনও কখনও গ্রাহককেও ডলার সংগ্রহ করতে হয়। এ সময়ে ব্যাংকে নগদ ডলারের দর ওঠে ১০৭ টাকা, আর খোলা বাজারে এক পর্যায়ে তা রেকর্ড ১২১ টাকায় ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে বাফেদার কার্যক্রমে গতি না আসায় আবারও সংগঠনটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। গত ১৪ অগাস্টের বৈঠকে ব্যাংকের নগদ ডলার কেনা ও বেচার ব্যবধান সর্বোচ্চ এক টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে আন্তঃব্যাংক লেনদেন বাজার সক্রিয় করতে আবারও সংগঠনটি প্রস্তাব দেবে বলে জানায়। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর এবিবি ও বাফেদার প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে আবারও বৈঠক করেন। আফজাল করিম সেদিন বলেছিলেন, ডলারের দাম নির্ধারণ করতে রোববার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন তারা। এর ধারাবাহিকতায় রোববার সেই দর বেঁধে দেওয়ার ঘোষণা এল।