ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : চারতলা বিশিষ্ট ডুপ্লেক্স বাড়ি। সারি সারি আম-কাঁঠাল ও লিচুর বাগান। সঙ্গে গরু-ছাগল আর ভেড়ার খামার৷ পাশেই দুই তলা বিশিষ্ট দুটি বাড়ি। নিচে রাখা হয়েছে গাড়ি আর চারপাশে ধান ও সবজি ক্ষেতে সবুজের সমাহার৷ দৃষ্টি কাড়া এই রাজপ্রাসাদ ও খামার বাড়ির মালিক নোয়াখালীর অধিবাসী পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ওবায়দুল হক ৷ জানা যায়, ১০ বছর আগে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে ২২ বিঘা জমি কেনেন ওবায়দুল হক৷ সেখানে গড়ে তুলেন ডুপ্লেক্স বাড়ি ও গবাদি পশুর খামার। খামারে ধান-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেন তিনি৷ পরে একই গ্রামের বারঢালি, কালমেঘ ও উপজেলার পাড়িয়া গ্রামে আরো ২০ বিঘা জমি কেনেন তিনি৷ বাড়ির নিচে অরক্ষিত থাকা গাড়িটির মালিকানা সরকারি। মাঝেমধ্যে এই খামারবাড়িতে আসতেন এই কর্মকর্তা। স্থানীয়দের সঙ্গে দেখা হলেই জিজ্ঞেস করতেন জমি বিক্রি করলে কেনার কথা৷ বিভিন্ন স্থানে এরকম আরো ১৭টি খামারবাড়ির গল্পও শোনাতেন তাদের। মূল ফটকের পাশে করেছিলেন বিদেশি কুকুর রাখার ঘর। পুলিশের দাপট আর কুকুরের ভয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি পড়শিরা৷ তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে এত সম্পদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা৷ স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, বাইরের কেউ ভিতরে যেতে পারতনা৷ গেটের সঙ্গে যে রুম সেখানে বিদেশি কুকুর রাখা হয়েছিল৷ চারতলা বাড়ি, বাগান, গরু-ছাগল আর ভেড়ার খামার আছে৷ মিনি রাজপ্রাসাদ বানিয়েছেন তিনি৷ একজন পুলিশের এত টাকা আয়ের উৎস জানা জরুরি। আমরা এলাকাবাসী এটির সঠিক তদন্ত চাই৷ আরেক বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, আমি উনাকে চাকরির কথা জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বলেছেন আমি পুলিশে চাকরি করি। দেখা হলেই বলতেন আশেপাশে কোনো জমি আছে নাকি৷ যত দাম হোক তিনি জমি কিনে নিতেন৷ একজন পুলিশের কর্মকর্তা হয়ে কিভাবে এত টাকা তিনি আয় করেন৷ এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। জানা গেছে, মাসিক বেতনে চারজন ও অস্থায়ী ৫-৮ জন শ্রমিক কাজ করেন খামারবাড়িতে। বাড়িটির তত্বাবধানে রয়েছেন ম্যানেজার লিটন আহমেদ৷ মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রেখে কর্মীদেও পরিচালনা করে থাকেন তিনি৷ এ বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত দাবী করেন স্থানীয়রা।
ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ কর্মকর্তার রাজপ্রাসাদ
জনপ্রিয় সংবাদ