ঢাকা ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার

  • আপডেট সময় : ০২:২৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ জুলাই ২০২২
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে কমলাপুর রেল স্টেশনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গতকাল শনিবার অগ্রিম ঈদের টিকিট দেওয়ার দ্বিতীয় দিন ছিল। সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। প্রিয়জনদের নিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য শুক্রবার বিকেল থেকেই রেলস্টেশনে অবস্থান নিয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ। এদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন, যারা বৃহস্পতিবার লাইন দিয়েও প্রথম দিন (শুক্রবার) টিকিট পাননি।
পুরুষদের পাশাপাশি প্রচুর নারীরাও আগাম টিকিটের জন্য লাইন ধরে অপেক্ষা করেছেন। ঈদের আগে সড়কপথে যানজট থাকবে, তাছাড়া গরম-বৃষ্টির কারণে ভোগান্তি এড়ানোর আশঙ্কায় মানুষজন ট্রেনে বাড়ি যেতে আগ্রহী। আর সে কারণেই প্রতি ঈদের আগে ট্রেনের আগাম টিকিট কাটার জন্য হাজারো বিড়ম্বনা স্বত্বেও মানুষ ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন।
কমলাপুর স্টেশনে নিরাপত্তায় কাজ করছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা। আর কালোবাজারে টিকিট বিক্রি বন্ধে পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে র‌্যাবের উপস্থিতিও।
গত শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ১ জুলাই দেওয়া হয়েছে ৫ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট, আজ ২ জুলাই দেওয়া হচ্ছে ৬ জুলাইয়ের, ৩ জুলাই ৭ জুলাইয়ের, ৪ জুলাই ৮ জুলাইয়ের এবং ৫ জুলাই দেওয়া হবে ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের আগাম টিকিট।
অপরদিকে, ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। ওইদিন ১১ জুলাইয়ের টিকিট দেওয়া হবে। ৮ তারিখ ১২ জুলাইয়ের, ৯ তারিখ ১৩ জুলাইয়ের, ১১ তারিখ ১৪ জুলাই এবং ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। তবে ১০ তারিখ ঈদের কারণে কোনও ট্রেন চলাচল করবে না। ১ জুলাই সীমিত কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলাচল করবে।
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট। ঢাকায় মোট ছয়টি স্টেশন এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে থেকে ঈদের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট। রাজধানীর ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে পাওয়া যাচ্ছে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট। গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের ঈদ স্পেশাল ট্রেন ছাড়বে।
কাউন্টারের বদলে অনলাইনে টিকিট কাটার ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি: রেলমন্ত্রী : প্রতি ঈদেই কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় হাজার হাজার মানুষকে। চাহিদার তুলনায় সক্ষমতা কম থাকায় একটি টিকিট পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিতে কাউন্টারের বদলে পুরোপুরি অনলাইনে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
গতকাল শনিবার কমলাপুর রেলস্টেশনে ইসলামী ব্যাংকের দেওয়া ট্রলি গ্রহণ অনুষ্ঠানে এ পরিকল্পনার কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশে কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কাটার সিস্টেম এখন আর নেই। এখন সব অনলাইনে। আমরাও সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’
টিকিট প্রত্যাশীদের ভোগান্তির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, চাহিদার তুলনায় আমাদের যে সক্ষমতা এবং সেটার যে ফারাক, সেটা যতক্ষণ পর্যন্ত কমাতে না পারব ততদিন পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থেকে আমরা উত্তরণ করতে পারব না। ইতোমধ্যে অনলাইনে টিকিট বিক্রির একটা পর্যায় শুরুর কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত ঈদের আগে ‘সহজ ডটকম’ দায়িত্ব নিয়েছে। তারা কাজ করছে। ডিজিটাল অপব্যবহার যেন আমরা সংশোধন করতে পারি, তার জন্য আমরা চেষ্টা করব। এবারও যে ত্রুটিগুলো ধরা পড়বে, সেগুলো যেন আগামী বছর না হয় সেই ব্যবস্থা করব। এদিকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে টিকিট প্রত্যাশীদের এমন ভিড় দেখা যায়। টিকিট বিক্রি শুরুর প্রথম দিন শুক্রবারও অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড় ছিল। সরেজমিনে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারের সামনে অপেক্ষায় আছেন শত শত নারী-পুরুষ। এদের অনেকেই রাত থেকে অপেক্ষা করছিলেন। শুক্রবার যারা টিকিট নিতে পারেননি এমন মানুষও আছেন অপেক্ষমাণদের মধ্যে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে অনেকেই বসে পড়েছেন মেঝেতে। কাউকে শুয়ে পড়তেও দেখা গেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার

আপডেট সময় : ০২:২৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে কমলাপুর রেল স্টেশনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গতকাল শনিবার অগ্রিম ঈদের টিকিট দেওয়ার দ্বিতীয় দিন ছিল। সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। প্রিয়জনদের নিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য শুক্রবার বিকেল থেকেই রেলস্টেশনে অবস্থান নিয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ। এদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন, যারা বৃহস্পতিবার লাইন দিয়েও প্রথম দিন (শুক্রবার) টিকিট পাননি।
পুরুষদের পাশাপাশি প্রচুর নারীরাও আগাম টিকিটের জন্য লাইন ধরে অপেক্ষা করেছেন। ঈদের আগে সড়কপথে যানজট থাকবে, তাছাড়া গরম-বৃষ্টির কারণে ভোগান্তি এড়ানোর আশঙ্কায় মানুষজন ট্রেনে বাড়ি যেতে আগ্রহী। আর সে কারণেই প্রতি ঈদের আগে ট্রেনের আগাম টিকিট কাটার জন্য হাজারো বিড়ম্বনা স্বত্বেও মানুষ ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন।
কমলাপুর স্টেশনে নিরাপত্তায় কাজ করছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা। আর কালোবাজারে টিকিট বিক্রি বন্ধে পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে র‌্যাবের উপস্থিতিও।
গত শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ১ জুলাই দেওয়া হয়েছে ৫ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট, আজ ২ জুলাই দেওয়া হচ্ছে ৬ জুলাইয়ের, ৩ জুলাই ৭ জুলাইয়ের, ৪ জুলাই ৮ জুলাইয়ের এবং ৫ জুলাই দেওয়া হবে ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের আগাম টিকিট।
অপরদিকে, ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। ওইদিন ১১ জুলাইয়ের টিকিট দেওয়া হবে। ৮ তারিখ ১২ জুলাইয়ের, ৯ তারিখ ১৩ জুলাইয়ের, ১১ তারিখ ১৪ জুলাই এবং ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। তবে ১০ তারিখ ঈদের কারণে কোনও ট্রেন চলাচল করবে না। ১ জুলাই সীমিত কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলাচল করবে।
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট। ঢাকায় মোট ছয়টি স্টেশন এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে থেকে ঈদের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট। রাজধানীর ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে পাওয়া যাচ্ছে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট। গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের ঈদ স্পেশাল ট্রেন ছাড়বে।
কাউন্টারের বদলে অনলাইনে টিকিট কাটার ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি: রেলমন্ত্রী : প্রতি ঈদেই কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় হাজার হাজার মানুষকে। চাহিদার তুলনায় সক্ষমতা কম থাকায় একটি টিকিট পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিতে কাউন্টারের বদলে পুরোপুরি অনলাইনে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
গতকাল শনিবার কমলাপুর রেলস্টেশনে ইসলামী ব্যাংকের দেওয়া ট্রলি গ্রহণ অনুষ্ঠানে এ পরিকল্পনার কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশে কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কাটার সিস্টেম এখন আর নেই। এখন সব অনলাইনে। আমরাও সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’
টিকিট প্রত্যাশীদের ভোগান্তির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, চাহিদার তুলনায় আমাদের যে সক্ষমতা এবং সেটার যে ফারাক, সেটা যতক্ষণ পর্যন্ত কমাতে না পারব ততদিন পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থেকে আমরা উত্তরণ করতে পারব না। ইতোমধ্যে অনলাইনে টিকিট বিক্রির একটা পর্যায় শুরুর কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত ঈদের আগে ‘সহজ ডটকম’ দায়িত্ব নিয়েছে। তারা কাজ করছে। ডিজিটাল অপব্যবহার যেন আমরা সংশোধন করতে পারি, তার জন্য আমরা চেষ্টা করব। এবারও যে ত্রুটিগুলো ধরা পড়বে, সেগুলো যেন আগামী বছর না হয় সেই ব্যবস্থা করব। এদিকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে টিকিট প্রত্যাশীদের এমন ভিড় দেখা যায়। টিকিট বিক্রি শুরুর প্রথম দিন শুক্রবারও অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড় ছিল। সরেজমিনে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারের সামনে অপেক্ষায় আছেন শত শত নারী-পুরুষ। এদের অনেকেই রাত থেকে অপেক্ষা করছিলেন। শুক্রবার যারা টিকিট নিতে পারেননি এমন মানুষও আছেন অপেক্ষমাণদের মধ্যে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে অনেকেই বসে পড়েছেন মেঝেতে। কাউকে শুয়ে পড়তেও দেখা গেছে।