ঢাকা ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

ট্রাম্প-মোদি ফোনালাপ, ফেব্রুয়ারিতে দুই নেতার বৈঠক

  • আপডেট সময় : ০৬:১৭:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ন্যায্যতার ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে এসব কথা বলেছেন ট্রাম্প। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

দুই নেতার ফোনালাপকে ফলপ্রসূ বলে আখ্যায়িত করে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আওতা ও ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইন্দো প্যাসিফিক, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের নিরাপত্তার বিষয়ে দুই নেতাই একমত হয়েছেন। আলাপকালে মার্কিন নিরাপত্তা সরঞ্জাম ক্রয়ের বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে দিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেছেন, মোদির সঙ্গে অভিবাসন বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ফেব্রুয়ারির কোনও এক সময় যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে দুই নেতার মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বজায় ছিল। তবে দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনি প্রচারণাকালে বাণিজ্যের বিষয়ে ভারতকে আগ্রাসী বলে অভিহিত করেন তিনি। বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিকভাবে অন্যায্যতার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেছেন, বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করতে তিনি চড়া শুল্ক আরোপ করতে দ্বিধাবোধ করবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩/২৪ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের আর্থিক মূল্য ১১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছিল। এই সময়ে ভারতের উদ্বৃত্ত ছিল ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ট্রাম্পের রোষ থেকে রেহাই পায়নি ব্রিকস গোষ্ঠীও। নিজস্ব মুদ্রা চালু করে মার্কিন ডলারকে দুর্বল করার কোনও চেষ্টা করলে তাদের একহাত দেখে নেওয়ার হুমকি নিয়েছেন ট্রাম্প। ভারত ও চীন এই ব্রিকস গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আবার বেইজিংয়ের আধিপত্য ঠেকাতে ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারও দিল্লি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্পকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে মোদি বলেছেন, দুপক্ষের জন্যই কল্যাণকর এমন বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে তুলতে তারা উভয়েই অঙ্গীকারবদ্ধ।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষাসহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প ও মোদি। যোগাযোগ নিয়মিত বজায় রাখার বিষয়ে তারা সম্মত হয়েছেন। পাশাপাশি দুজনের জন্যই সুবিধাজনক কোনও একটা সময়ে সশরীরের সাক্ষাতের বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা।

চার দেশীয় জোট কোয়াডের বিষয়ে ট্রাম্প ও মোদি নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার এই জোটের চলতি বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলন ভারত আয়োজন করতে যাচ্ছে।

 

ফেব্রুয়ারিতে বৈঠক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য আমেরিকায় যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী মাসে হোয়াইট হাউজে এ বৈঠক হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ফ্লোরিডায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেন, সোমবার সকালে মোদীর সঙ্গে আমার দীর্ঘ সময় ফোনালাপ হয়েছে। তিনি সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতেই হোয়াইট হাউজে আসছেন। ভারতের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

ফোনালাপ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে মোদী লেখেন, আমরা এমন একটা ভরসাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর, যা দুই দেশের জন্য লাভজনক হবে। আমাদের দুই দেশের নাগরিকদের কল্যাণ, বিশ্বশান্তি, সমৃদ্ধি ও বিশ্বের সুরক্ষার জন্য একসঙ্গে কাজ করবো আমরা।

আগের আমলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শেষ বিদেশ সফর ছিল ভারতে। তার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর মধ্যে ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলা বিশ্বের শীর্ষ তিন নেতার মধ্যে একজন ছিলেন মোদী।

এদিকে, ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হলো যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩-২৪ সালে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যের অঙ্কটা ১১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে, চীনকে সামলাতেও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৌশলগতভাবে ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই মুহূর্তে তাদের মধ্যে আলোচনা অত্যন্ত জরুরি অন্য আরেকটি কারণে। যেটি হলো শুল্ক ইস্যু। সূত্র: এনডিটিভি

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ট্রাম্প-মোদি ফোনালাপ, ফেব্রুয়ারিতে দুই নেতার বৈঠক

আপডেট সময় : ০৬:১৭:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ন্যায্যতার ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে এসব কথা বলেছেন ট্রাম্প। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

দুই নেতার ফোনালাপকে ফলপ্রসূ বলে আখ্যায়িত করে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আওতা ও ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইন্দো প্যাসিফিক, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের নিরাপত্তার বিষয়ে দুই নেতাই একমত হয়েছেন। আলাপকালে মার্কিন নিরাপত্তা সরঞ্জাম ক্রয়ের বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে দিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেছেন, মোদির সঙ্গে অভিবাসন বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ফেব্রুয়ারির কোনও এক সময় যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে দুই নেতার মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বজায় ছিল। তবে দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনি প্রচারণাকালে বাণিজ্যের বিষয়ে ভারতকে আগ্রাসী বলে অভিহিত করেন তিনি। বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিকভাবে অন্যায্যতার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেছেন, বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করতে তিনি চড়া শুল্ক আরোপ করতে দ্বিধাবোধ করবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩/২৪ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের আর্থিক মূল্য ১১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছিল। এই সময়ে ভারতের উদ্বৃত্ত ছিল ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ট্রাম্পের রোষ থেকে রেহাই পায়নি ব্রিকস গোষ্ঠীও। নিজস্ব মুদ্রা চালু করে মার্কিন ডলারকে দুর্বল করার কোনও চেষ্টা করলে তাদের একহাত দেখে নেওয়ার হুমকি নিয়েছেন ট্রাম্প। ভারত ও চীন এই ব্রিকস গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আবার বেইজিংয়ের আধিপত্য ঠেকাতে ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারও দিল্লি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্পকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে মোদি বলেছেন, দুপক্ষের জন্যই কল্যাণকর এমন বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে তুলতে তারা উভয়েই অঙ্গীকারবদ্ধ।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষাসহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প ও মোদি। যোগাযোগ নিয়মিত বজায় রাখার বিষয়ে তারা সম্মত হয়েছেন। পাশাপাশি দুজনের জন্যই সুবিধাজনক কোনও একটা সময়ে সশরীরের সাক্ষাতের বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা।

চার দেশীয় জোট কোয়াডের বিষয়ে ট্রাম্প ও মোদি নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার এই জোটের চলতি বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলন ভারত আয়োজন করতে যাচ্ছে।

 

ফেব্রুয়ারিতে বৈঠক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য আমেরিকায় যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী মাসে হোয়াইট হাউজে এ বৈঠক হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ফ্লোরিডায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেন, সোমবার সকালে মোদীর সঙ্গে আমার দীর্ঘ সময় ফোনালাপ হয়েছে। তিনি সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতেই হোয়াইট হাউজে আসছেন। ভারতের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

ফোনালাপ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে মোদী লেখেন, আমরা এমন একটা ভরসাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর, যা দুই দেশের জন্য লাভজনক হবে। আমাদের দুই দেশের নাগরিকদের কল্যাণ, বিশ্বশান্তি, সমৃদ্ধি ও বিশ্বের সুরক্ষার জন্য একসঙ্গে কাজ করবো আমরা।

আগের আমলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শেষ বিদেশ সফর ছিল ভারতে। তার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর মধ্যে ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলা বিশ্বের শীর্ষ তিন নেতার মধ্যে একজন ছিলেন মোদী।

এদিকে, ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হলো যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩-২৪ সালে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যের অঙ্কটা ১১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে, চীনকে সামলাতেও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৌশলগতভাবে ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই মুহূর্তে তাদের মধ্যে আলোচনা অত্যন্ত জরুরি অন্য আরেকটি কারণে। যেটি হলো শুল্ক ইস্যু। সূত্র: এনডিটিভি