ঢাকা ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

ট্রাম্প-কমলার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

  • আপডেট সময় : ০৯:০১:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪
  • ৭১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮ কোটি ২০ লাখ মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনাসহ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটাররা রয়েছেন, যাঁদের ভোটে নির্ধারিত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন। এ নির্বাচনে মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তাঁদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে এরই মধ্যে ৪০ লাখের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ভোটের দিন বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্র সুনসান অবস্থায় দেখা যাবে।
গত সোমবার বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে মোটামুটি ৮ কোটি ২০ লাখের বেশি ভোট পড়েছে। এই সংখ্যা চার বছর আগের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট নিবন্ধিত ভোটের অর্ধেকের কিছু বেশি। আর এটি হয়েছে রিপাবলিকান ভোটারদের কারণে। তাঁরা গতবারের নির্বাচনের তুলনায় এবার অনেক বেশি আগাম ভোট দিয়েছেন। ডেমোক্রাটরা আগাম ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকে এগিয়ে। এবার রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দলের ন্যাশনাল কমিটির প্রচারের পর ডেমোক্র্যাটদের মোকাবিলা করতে মাঠে নেমেছেন রিপাবলিকানরা। কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন আবার কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে বিঘ্ন ঘটা নির্বাচনের একটি স্বাভাবিক দৃশ্য। তবে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে আগাম ভোট এবং ডাকযোগে ভোটে সাধারণত কোনো ধরনের সমস্যা হয় না। গত মাসে নর্থ ক্যারোলাইনার পশ্চিমাঞ্চলসহ রাজ্যের বেশ কিছু অংশ হারিকেন হেলেনের আঘাতে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে বিদ্যুৎ, পানিসংকট তৈরি হয়। রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে যায়। এ অবস্থায় রাজ্যের রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত আইনসভা আগাম ভোট গ্রহণে কিছু পরিবর্তন আনে। এতে উপকৃত হন অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা। গত শনিবার আগাম ভোট দেওয়ার সময় শেষ হয়। এতে দেখা যায়, ৪৪ লাখের বেশি ভোট পড়েছে, যা মোট ভোটের প্রায় ৫৭ শতাংশ। তবে সোমবারের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, হারিকেনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গরাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় ২৫টি কাউন্টিতে প্রায় ৫৯ শতাংশ আগাম ভোট পড়েছে। নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের নির্বাচন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক কারেন ব্রিনসন বেল বলেন, হারিকেনে ক্ষতিগ্রস্ত কাউন্টিগুলোর ভোটার ও নির্বাচনী কর্মীরা ‘আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা’। জর্জিয়ায় রিপাবলিকানরা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর ডাকযোগে আসা ব্যালট গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। তবে গত সপ্তাহের শেষের দিকে একজন বিচারপতি তাঁদের সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কেবল কি প্রেসিডেন্টই নির্বাচিত হচ্ছেন? নির্বাচনের সব মনোযোগ প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থীদের দিকে থাকলেও মঙ্গলবার ভোটাররা কংগ্রেসের নতুন সদস্যদেরকেও বেছে নেবেন। একইদিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নর ও আইন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ রিপাবরিকানদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তারা এবারের নির্বাচনে তা ধরে রাখার পাশাপাশি সেনেটেও নিয়ন্ত্রণও করায়ত্ব করার চেষ্টা করবে।
অপরদিকে ডেমোক্রাটরা সেনেটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পাশাপাশি প্রতিনিধি পরিষদে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে। দুই কক্ষেই রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারলে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট যদি ডেমোক্র্যাট হন, সেক্ষেত্রে তার পরিকল্পনায় বাধ সাধা কিংবা তাতে বিলম্ব ঘটাতে পারবে কংগ্রেস। প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ আসনের সবগুলোতে এবং সেনেটের ১০০ আসনের মধ্যে ৩৪টিতে ভোট হচ্ছে মঙ্গলবার।
কার কী প্রতিশ্রুতি: ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। অর্থনীতি থেকে শুরু করে অভিবাসন কিংবা পররাষ্ট্র- প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের নীতি বা দৃষ্টিভঙ্গির দিকে যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, বহির্বিশ্বও চোখ রাখছে। এবারের নির্বাচনি প্রচারে হ্যারিস এবং ট্রাম্প বিভিন্ন বিষয়ে তাদের অবস্থানের নিরিখে ভোটারদের সমর্থন কুড়িয়েছেন। মূল্যস্ফীতি, কর, গর্ভপাত, অভিবাসন, পররাষ্ট্রনীতি ও বাণিজ্য ইস্যুতে দুই প্রার্থী ভিন্ন দৃষ্টিকোণ তুলে ধরেছেন।
কমলা হ্যারিস বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে প্রথম দিন থেকেই তার অগ্রাধিকার হবে শ্রমজীবী পরিবারের জন্য খাবার ও বাসস্থান খরচ কমানো। নিত্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দাম নির্ধারণের প্রবণতা বন্ধ করা এবং প্রথমবার বাড়ি কেনায় সহায়তা ও আবাসন খাতে প্রণোদনা দেয়ার কথাও বলেন তিনি। ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছেন মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সবকিছু মানুষের ক্রয় সামর্থ্যের মধ্যে আনার। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠালে আবাসনের ওপর চাপ কমবে বলে মনে করেন তিনি। আমদানি পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপেরও আভাস দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এর ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যদিকে, করের ক্ষেত্রে- বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বছরে চার লাখ ডলারের বেশি আয় করা আমেরিকানদের ওপর কর বাড়াতে চান হ্যারিস। যদিও কোনো কোনো পরিবারের করের বোঝা লাঘব করতে, সন্তানের বিপরীতে কর ছাড়ের ব্যবস্থা রাখার কথাও বলেছেন তিনি। ট্রাম্পও বিপুল পরিমাণ করছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছেন। তবে সেটি তার ২০১৭ সালের কর কমানোর নীতিরই আরেক রূপ, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধনীদের জন্যই সহায়ক ছিল। হ্যারিস গর্ভপাতের অধিকারকে তার প্রচারের কেন্দ্রে রেখেছিলেন। সারাদেশের নারীদের জন্য প্রজনন অধিকার সুরক্ষা আইনের পক্ষে তিনি কথা বলছেন। ট্রাম্প গর্ভপাত বিষয়ে বলেছেন, নারীদেরকে যাতে গর্ভপাতের কথা ভাবতে না হয় সেটি তিনি নিশ্চিত করবেন। তবে সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের সময়ে নিয়োগ দেওয়া তিন বিচারকের হাতেই যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল হয়েছিল। সে কারণে গর্ভপাত ইস্যুতে নারীদের মন জয় করতে হিমশিম খেতে হয়েছে ট্রাম্পকে। নর্থ ক্যারোলাইনার সমাবেশে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছে, মেক্সিকো যদি সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অভিবাসীসের অনুপ্রেবেশ বন্ধের ব্যবস্থা না করে, তাহলে সব ধরনের মেক্সিকান পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। আর পেনসিলভেইনিয়ার সমাবেশে হ্যারিস বলেছেন, ‘নতুন করে শুরুর জন্য’ আমেরিকা প্রস্তুত। তথ্যসূত্র: সিএনএন ও বিবিসি
আরও ১০ রাজ্যে ভোট শুরু: যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি রাজ্যে ভোট ইতোমধ্যেই চলছে। আর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় আরও ১০ রাজ্যে ভোট শুরু হয়েছে। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি রাজ্যে এখন ভোট চলছে। মাত্র ভোট শুরু হওয়া রাজ্যগুলো হল: অ্যালাবামা, আইওয়া, কানসাস, মিনেসোটা, মিসিসিপি, নর্থ ডেকোটা, ওকলাহোমা, সাউথ ডেকোটা, টেক্সাস, উইসকনসিন।
‘আমরা যখন লড়ি, আমরা জিতি’: হ্যারিস: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস পেনসিলভেইনিয়া রাজ্যে তার শেষ প্রচার সমাবেশে একতার শক্তি ও নারী অধিকারের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা যখন লড়ি, আমরা জিতি।” সমাবেশে উপস্থিত জনতাকেও সমস্বরে তার এই কথার সঙ্গে গলা মেলানোর ডাক দেন হ্যারিস। জনতার সামনে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “আমরা কি আমেরিকার প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করি? আপনারা কি এর জন্য লড়তে প্রস্তুত? কারণ, আমরা যখন লড়ি, তখন আমরা জয়ী হই।” ভাষণে হ্যারিস বলেন, পরাজিত অবস্থা থেকে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। কিন্তু জয়ের আসনে পৌঁছাবেন। “আমাদের এই জীবনকালে গুরুত্বপূর্ণ ভোটের দিনের মুহূর্তটি আমাদের অনুকূলেই আছে। এ নির্বাচন হতে পারে ইতিহাসে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন,” বলেন তিনি।
হ্যারিস নয়, ‘অশুভ ডেমোক্র্যাট ব্যবস্থার’ বিরুদ্ধে লড়ছি: ট্রাম্প: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি কমলা হ্যারিস নয়, অশুভ ডেমোক্র্যাট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়ছেন। মিশিগানে শেষ প্রচার সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ওয়াশিংটনে এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থাকে পরাজিত করব। কারণ, আমি কমলার বিরুদ্ধে লড়ছি না। অশুভ ডেমোক্র্যাট সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়ছি। এরা দুষ্টু লোক।” এই যাত্রা অবিশ্বাস্য হবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এ যাত্রা হবে দুঃখেরও। কারণ, এটাই হবে শেষবার। মঙ্গলবারের নির্বাচনে না জিতলে আগামীতে আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। মিশিগনে শেষ দিনের প্রচারে তিনি তাই বলেছেন, “এটিই তার শেষ প্রচার।” তবে জরিপে জনমর্থনের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে ট্রাম্প এও বলেছেন যে তিনি আশাবাদী। ট্রাম্প বলেন, “সুসংবাদ আছে। আমরা যাকিছু করছি তা আমাদেরকে জয় পাওয়ার অবস্থানেই নিয়ে যাচ্ছে।”
হ্যারিস ও ট্রাম্পকে জনপ্রিয় তারকাদের সমর্থন: যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনি প্রচারের শেষ দিনগুলোতে বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় তারকার সমর্থন কুড়িয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প দুজনই। ফিলাডেলফিয়ায় হ্যারিস তার শেষ প্রচার সমাবেশে মঞ্চে ওঠার আগে তার সমর্থকদের মধ্যে নেতৃত্বের সারিতে ছিলেন পপ তারকা লেডি গাগা এবং জনপ্রিয় মার্কিন টক শো উপস্থাপিকা অপরাহ উইনফ্রে। এর আগে গত সপ্তাহে লাস ভেগাসে হ্যারিসের সঙ্গে দেখা যায় পপ তারকা জেনিফার লোপেজকে। অভিনেতা হ্যারিসন ফোর্ড এবং এনবিএ স্টার লেবর্ন জেমসও হ্যারিসকে সমর্থন দিয়েছেন। এ তালিকায় আরও আছেন অভিনেতা মেরিল স্ট্রিপ, জুলিয়া রবার্টস, জেনিফার গার্নার এবং কমেডিয়ান ক্রিস রকও। সুপারস্টার গায়িকা বিয়ন্সে এবং টেলর সুইফটও হ্যারিসকে সমর্থন দিয়েছেন। ওদিকে, জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট উপস্থাপক জো রোগান সমর্থন দিয়েছেন ট্রাম্পকে। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এ সমর্থন দেন। জো রোগান গত মাসে তার তিন ঘণ্টার একটি শো’তে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অতিথি হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন। এক্সে তিনি লেখেন “আমি ট্রাম্পকে সমর্থন করছি।” অন্য যে তারকারা ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন অভিনেতা ডেনিস কায়েদ, ন্যাশনাল ফুটবল লিগ (এনএফএল) স্টার হ্যারিসন বাটকার, কান্ট্রি মিউজিকের জনপ্রিয় গায়ক জেসন আলডিন, গায়ক টেড নুজেন্ট, তারকা কিড রক এবং রেসলার হাল্ক হোগান।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ট্রাম্প-কমলার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

আপডেট সময় : ০৯:০১:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮ কোটি ২০ লাখ মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনাসহ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটাররা রয়েছেন, যাঁদের ভোটে নির্ধারিত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন। এ নির্বাচনে মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তাঁদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে এরই মধ্যে ৪০ লাখের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ভোটের দিন বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্র সুনসান অবস্থায় দেখা যাবে।
গত সোমবার বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে মোটামুটি ৮ কোটি ২০ লাখের বেশি ভোট পড়েছে। এই সংখ্যা চার বছর আগের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট নিবন্ধিত ভোটের অর্ধেকের কিছু বেশি। আর এটি হয়েছে রিপাবলিকান ভোটারদের কারণে। তাঁরা গতবারের নির্বাচনের তুলনায় এবার অনেক বেশি আগাম ভোট দিয়েছেন। ডেমোক্রাটরা আগাম ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকে এগিয়ে। এবার রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দলের ন্যাশনাল কমিটির প্রচারের পর ডেমোক্র্যাটদের মোকাবিলা করতে মাঠে নেমেছেন রিপাবলিকানরা। কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন আবার কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে বিঘ্ন ঘটা নির্বাচনের একটি স্বাভাবিক দৃশ্য। তবে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে আগাম ভোট এবং ডাকযোগে ভোটে সাধারণত কোনো ধরনের সমস্যা হয় না। গত মাসে নর্থ ক্যারোলাইনার পশ্চিমাঞ্চলসহ রাজ্যের বেশ কিছু অংশ হারিকেন হেলেনের আঘাতে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে বিদ্যুৎ, পানিসংকট তৈরি হয়। রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে যায়। এ অবস্থায় রাজ্যের রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত আইনসভা আগাম ভোট গ্রহণে কিছু পরিবর্তন আনে। এতে উপকৃত হন অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা। গত শনিবার আগাম ভোট দেওয়ার সময় শেষ হয়। এতে দেখা যায়, ৪৪ লাখের বেশি ভোট পড়েছে, যা মোট ভোটের প্রায় ৫৭ শতাংশ। তবে সোমবারের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, হারিকেনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গরাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় ২৫টি কাউন্টিতে প্রায় ৫৯ শতাংশ আগাম ভোট পড়েছে। নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের নির্বাচন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক কারেন ব্রিনসন বেল বলেন, হারিকেনে ক্ষতিগ্রস্ত কাউন্টিগুলোর ভোটার ও নির্বাচনী কর্মীরা ‘আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা’। জর্জিয়ায় রিপাবলিকানরা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর ডাকযোগে আসা ব্যালট গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। তবে গত সপ্তাহের শেষের দিকে একজন বিচারপতি তাঁদের সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কেবল কি প্রেসিডেন্টই নির্বাচিত হচ্ছেন? নির্বাচনের সব মনোযোগ প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থীদের দিকে থাকলেও মঙ্গলবার ভোটাররা কংগ্রেসের নতুন সদস্যদেরকেও বেছে নেবেন। একইদিন অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নর ও আইন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ রিপাবরিকানদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তারা এবারের নির্বাচনে তা ধরে রাখার পাশাপাশি সেনেটেও নিয়ন্ত্রণও করায়ত্ব করার চেষ্টা করবে।
অপরদিকে ডেমোক্রাটরা সেনেটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পাশাপাশি প্রতিনিধি পরিষদে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে। দুই কক্ষেই রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারলে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট যদি ডেমোক্র্যাট হন, সেক্ষেত্রে তার পরিকল্পনায় বাধ সাধা কিংবা তাতে বিলম্ব ঘটাতে পারবে কংগ্রেস। প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ আসনের সবগুলোতে এবং সেনেটের ১০০ আসনের মধ্যে ৩৪টিতে ভোট হচ্ছে মঙ্গলবার।
কার কী প্রতিশ্রুতি: ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। অর্থনীতি থেকে শুরু করে অভিবাসন কিংবা পররাষ্ট্র- প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের নীতি বা দৃষ্টিভঙ্গির দিকে যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, বহির্বিশ্বও চোখ রাখছে। এবারের নির্বাচনি প্রচারে হ্যারিস এবং ট্রাম্প বিভিন্ন বিষয়ে তাদের অবস্থানের নিরিখে ভোটারদের সমর্থন কুড়িয়েছেন। মূল্যস্ফীতি, কর, গর্ভপাত, অভিবাসন, পররাষ্ট্রনীতি ও বাণিজ্য ইস্যুতে দুই প্রার্থী ভিন্ন দৃষ্টিকোণ তুলে ধরেছেন।
কমলা হ্যারিস বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে প্রথম দিন থেকেই তার অগ্রাধিকার হবে শ্রমজীবী পরিবারের জন্য খাবার ও বাসস্থান খরচ কমানো। নিত্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দাম নির্ধারণের প্রবণতা বন্ধ করা এবং প্রথমবার বাড়ি কেনায় সহায়তা ও আবাসন খাতে প্রণোদনা দেয়ার কথাও বলেন তিনি। ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছেন মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সবকিছু মানুষের ক্রয় সামর্থ্যের মধ্যে আনার। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠালে আবাসনের ওপর চাপ কমবে বলে মনে করেন তিনি। আমদানি পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপেরও আভাস দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এর ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যদিকে, করের ক্ষেত্রে- বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বছরে চার লাখ ডলারের বেশি আয় করা আমেরিকানদের ওপর কর বাড়াতে চান হ্যারিস। যদিও কোনো কোনো পরিবারের করের বোঝা লাঘব করতে, সন্তানের বিপরীতে কর ছাড়ের ব্যবস্থা রাখার কথাও বলেছেন তিনি। ট্রাম্পও বিপুল পরিমাণ করছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছেন। তবে সেটি তার ২০১৭ সালের কর কমানোর নীতিরই আরেক রূপ, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধনীদের জন্যই সহায়ক ছিল। হ্যারিস গর্ভপাতের অধিকারকে তার প্রচারের কেন্দ্রে রেখেছিলেন। সারাদেশের নারীদের জন্য প্রজনন অধিকার সুরক্ষা আইনের পক্ষে তিনি কথা বলছেন। ট্রাম্প গর্ভপাত বিষয়ে বলেছেন, নারীদেরকে যাতে গর্ভপাতের কথা ভাবতে না হয় সেটি তিনি নিশ্চিত করবেন। তবে সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের সময়ে নিয়োগ দেওয়া তিন বিচারকের হাতেই যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল হয়েছিল। সে কারণে গর্ভপাত ইস্যুতে নারীদের মন জয় করতে হিমশিম খেতে হয়েছে ট্রাম্পকে। নর্থ ক্যারোলাইনার সমাবেশে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছে, মেক্সিকো যদি সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অভিবাসীসের অনুপ্রেবেশ বন্ধের ব্যবস্থা না করে, তাহলে সব ধরনের মেক্সিকান পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। আর পেনসিলভেইনিয়ার সমাবেশে হ্যারিস বলেছেন, ‘নতুন করে শুরুর জন্য’ আমেরিকা প্রস্তুত। তথ্যসূত্র: সিএনএন ও বিবিসি
আরও ১০ রাজ্যে ভোট শুরু: যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি রাজ্যে ভোট ইতোমধ্যেই চলছে। আর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় আরও ১০ রাজ্যে ভোট শুরু হয়েছে। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি রাজ্যে এখন ভোট চলছে। মাত্র ভোট শুরু হওয়া রাজ্যগুলো হল: অ্যালাবামা, আইওয়া, কানসাস, মিনেসোটা, মিসিসিপি, নর্থ ডেকোটা, ওকলাহোমা, সাউথ ডেকোটা, টেক্সাস, উইসকনসিন।
‘আমরা যখন লড়ি, আমরা জিতি’: হ্যারিস: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস পেনসিলভেইনিয়া রাজ্যে তার শেষ প্রচার সমাবেশে একতার শক্তি ও নারী অধিকারের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা যখন লড়ি, আমরা জিতি।” সমাবেশে উপস্থিত জনতাকেও সমস্বরে তার এই কথার সঙ্গে গলা মেলানোর ডাক দেন হ্যারিস। জনতার সামনে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “আমরা কি আমেরিকার প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করি? আপনারা কি এর জন্য লড়তে প্রস্তুত? কারণ, আমরা যখন লড়ি, তখন আমরা জয়ী হই।” ভাষণে হ্যারিস বলেন, পরাজিত অবস্থা থেকে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। কিন্তু জয়ের আসনে পৌঁছাবেন। “আমাদের এই জীবনকালে গুরুত্বপূর্ণ ভোটের দিনের মুহূর্তটি আমাদের অনুকূলেই আছে। এ নির্বাচন হতে পারে ইতিহাসে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন,” বলেন তিনি।
হ্যারিস নয়, ‘অশুভ ডেমোক্র্যাট ব্যবস্থার’ বিরুদ্ধে লড়ছি: ট্রাম্প: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি কমলা হ্যারিস নয়, অশুভ ডেমোক্র্যাট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়ছেন। মিশিগানে শেষ প্রচার সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ওয়াশিংটনে এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থাকে পরাজিত করব। কারণ, আমি কমলার বিরুদ্ধে লড়ছি না। অশুভ ডেমোক্র্যাট সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়ছি। এরা দুষ্টু লোক।” এই যাত্রা অবিশ্বাস্য হবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এ যাত্রা হবে দুঃখেরও। কারণ, এটাই হবে শেষবার। মঙ্গলবারের নির্বাচনে না জিতলে আগামীতে আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। মিশিগনে শেষ দিনের প্রচারে তিনি তাই বলেছেন, “এটিই তার শেষ প্রচার।” তবে জরিপে জনমর্থনের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে ট্রাম্প এও বলেছেন যে তিনি আশাবাদী। ট্রাম্প বলেন, “সুসংবাদ আছে। আমরা যাকিছু করছি তা আমাদেরকে জয় পাওয়ার অবস্থানেই নিয়ে যাচ্ছে।”
হ্যারিস ও ট্রাম্পকে জনপ্রিয় তারকাদের সমর্থন: যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনি প্রচারের শেষ দিনগুলোতে বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় তারকার সমর্থন কুড়িয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প দুজনই। ফিলাডেলফিয়ায় হ্যারিস তার শেষ প্রচার সমাবেশে মঞ্চে ওঠার আগে তার সমর্থকদের মধ্যে নেতৃত্বের সারিতে ছিলেন পপ তারকা লেডি গাগা এবং জনপ্রিয় মার্কিন টক শো উপস্থাপিকা অপরাহ উইনফ্রে। এর আগে গত সপ্তাহে লাস ভেগাসে হ্যারিসের সঙ্গে দেখা যায় পপ তারকা জেনিফার লোপেজকে। অভিনেতা হ্যারিসন ফোর্ড এবং এনবিএ স্টার লেবর্ন জেমসও হ্যারিসকে সমর্থন দিয়েছেন। এ তালিকায় আরও আছেন অভিনেতা মেরিল স্ট্রিপ, জুলিয়া রবার্টস, জেনিফার গার্নার এবং কমেডিয়ান ক্রিস রকও। সুপারস্টার গায়িকা বিয়ন্সে এবং টেলর সুইফটও হ্যারিসকে সমর্থন দিয়েছেন। ওদিকে, জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট উপস্থাপক জো রোগান সমর্থন দিয়েছেন ট্রাম্পকে। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এ সমর্থন দেন। জো রোগান গত মাসে তার তিন ঘণ্টার একটি শো’তে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অতিথি হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন। এক্সে তিনি লেখেন “আমি ট্রাম্পকে সমর্থন করছি।” অন্য যে তারকারা ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন অভিনেতা ডেনিস কায়েদ, ন্যাশনাল ফুটবল লিগ (এনএফএল) স্টার হ্যারিসন বাটকার, কান্ট্রি মিউজিকের জনপ্রিয় গায়ক জেসন আলডিন, গায়ক টেড নুজেন্ট, তারকা কিড রক এবং রেসলার হাল্ক হোগান।