ঢাকা ১১:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধে মাস্কের দুই হাজার কোটি ডলার ক্ষতি

  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধে মাস্কের দুই হাজার কোটি ডলার ক্ষতি

প্রত্যাশা ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার এক সময়ের ঘনিষ্ট সহচর ইলন মাস্কের বিরোধ প্রকাশ্যে আসার পর থেকে দুই হাজার কোটি ডলার হারিয়েছেন মার্কিন এই ধনকুবের। টেসলার বিনিয়োগকারীরা হারিয়েছেন ১০ হাজার কোটি ডলার।

মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস-এর বিশ্লেষণ বলছে, ট্রাম্পের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে এই পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে স্রেফ এক মাসে।

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মাস্কের জটিল সম্পর্ক নিয়ে টেসলার শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া বিনিয়োগকারী ইভানা ডেলেভস্কা বলেছেন, সরকারের সঙ্গে মাস্কের এই সম্পর্কের কারণে বড় লাভের সুযোগ থাকলেও এক্ষেত্রে অনেক বড় ঝুঁকিও রয়েছে।

সম্প্রতি নিজেদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টেসলা, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘হতাশাজনক’ বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। টেসলার আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার (৭ জুলাই) দিনে টেসলার শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ।

গত সপ্তাহে কোম্পানিটি বলেছিল, এপ্রিলে থেকে জুন অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রান্তিকে গাড়ি সরবরাহ ১৪ শতাংশ কমেছে টেসলার। ফলে বর্তমানে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি বিওয়াইডি’র চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে মার্কিন এই ইভি নির্মাতা। অ্যাক্সিওসের বিশ্লেষণ অনুসারে, জুন মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত টেসলার শেয়ার মূল্য কমেছে ১৪ শতাংশ। সদ্য আইনে পরিণত হওয়া ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল’ কর বিলের বিরোধিতা করেছেন মাস্ক। এমনকি এ বিল যুক্তরাষ্ট্রকে ‘দেউলিয়া’ বানাবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। এ বিরোধিতার কারণে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের ভাঙন শুরু হয় মাস্কের। ফলে আগে যেটি ছিল ঘনিষ্ঠ মিত্রতা এখন তা আর্থিক ক্ষতি ও প্রকাশ্য বিরোধে পরিণত হয়েছে বলে প্রতিবেদেনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।

ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতাতে ২৫ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন এ প্রযুক্তি টাইকুন। শুরুতে তার এমন সমর্থনকে অর্থনৈতিকভাবে খুবই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করেছিলেন অনেকে। কারণ, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হন মাস্ক, যার সম্পদের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। ওই সময় বিনিয়োগকারীরা খুবই আশাবাদী ছিলেন যে, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মাস্ক ও তার বিভিন্ন কোম্পানির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি ইনিশিয়েটিভ’ বা ডিওজিই-এর অঘোষিত প্রধান হিসেবেও ছিলেন মার্কিন এই টেক বিলিয়নেয়ার। এ প্রকল্পের কাজ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার অর্থ, তথ্য ও কর্মীদের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখা। সেই সময় এসব কাজ মাস্কের বিভিন্ন কোম্পানির ওপরও প্রভাব ফেলে।

ইন্ডিপেনডেন্ট লিখেছে, বর্তমানে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আরো বেড়েছে মাস্কের, এমনকি সাবেক রিপাবলিকান মিত্রদের চ্যালেঞ্জ করার জন্য নতুন এক রাজনৈতিক দল গঠনের হুমকিও দিয়েছেন মাস্ক। ফলে তার ব্যবসায়িক বিভিন্ন কোম্পানি, যেমন স্পেসএক্স আরো বড় ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

এদিকে, স্পেসএক্স প্রধানত ফেডারেল সরকারের সঙ্গে চুক্তির ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল এবং ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে পাঠানোর জন্য মহাকাশযান সরবরাহের দিকে অনেক বিনিয়োগ করেছে তারা। ফলে তার কোম্পানির সরকারি চুক্তিতে প্রভাব ফেলতে পারে ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের এই রাজনৈতিক ঝামেলা। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশাল’-এ এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, মাস্কের এক বন্ধুকে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নাসার প্রধান করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। কারণ ওই ব্যক্তি প্রকৃত ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের জন্য আগে কখনো কিছুই করেননি। ওই পোস্টে মাস্ক সম্পর্কেও তার একই ধরনের সংশয় রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধে মাস্কের দুই হাজার কোটি ডলার ক্ষতি

আপডেট সময় : ০৮:০৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার এক সময়ের ঘনিষ্ট সহচর ইলন মাস্কের বিরোধ প্রকাশ্যে আসার পর থেকে দুই হাজার কোটি ডলার হারিয়েছেন মার্কিন এই ধনকুবের। টেসলার বিনিয়োগকারীরা হারিয়েছেন ১০ হাজার কোটি ডলার।

মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস-এর বিশ্লেষণ বলছে, ট্রাম্পের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে এই পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে স্রেফ এক মাসে।

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মাস্কের জটিল সম্পর্ক নিয়ে টেসলার শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া বিনিয়োগকারী ইভানা ডেলেভস্কা বলেছেন, সরকারের সঙ্গে মাস্কের এই সম্পর্কের কারণে বড় লাভের সুযোগ থাকলেও এক্ষেত্রে অনেক বড় ঝুঁকিও রয়েছে।

সম্প্রতি নিজেদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টেসলা, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘হতাশাজনক’ বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। টেসলার আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার (৭ জুলাই) দিনে টেসলার শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ।

গত সপ্তাহে কোম্পানিটি বলেছিল, এপ্রিলে থেকে জুন অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রান্তিকে গাড়ি সরবরাহ ১৪ শতাংশ কমেছে টেসলার। ফলে বর্তমানে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি বিওয়াইডি’র চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে মার্কিন এই ইভি নির্মাতা। অ্যাক্সিওসের বিশ্লেষণ অনুসারে, জুন মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত টেসলার শেয়ার মূল্য কমেছে ১৪ শতাংশ। সদ্য আইনে পরিণত হওয়া ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল’ কর বিলের বিরোধিতা করেছেন মাস্ক। এমনকি এ বিল যুক্তরাষ্ট্রকে ‘দেউলিয়া’ বানাবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। এ বিরোধিতার কারণে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের ভাঙন শুরু হয় মাস্কের। ফলে আগে যেটি ছিল ঘনিষ্ঠ মিত্রতা এখন তা আর্থিক ক্ষতি ও প্রকাশ্য বিরোধে পরিণত হয়েছে বলে প্রতিবেদেনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।

ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতাতে ২৫ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন এ প্রযুক্তি টাইকুন। শুরুতে তার এমন সমর্থনকে অর্থনৈতিকভাবে খুবই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করেছিলেন অনেকে। কারণ, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হন মাস্ক, যার সম্পদের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। ওই সময় বিনিয়োগকারীরা খুবই আশাবাদী ছিলেন যে, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মাস্ক ও তার বিভিন্ন কোম্পানির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি ইনিশিয়েটিভ’ বা ডিওজিই-এর অঘোষিত প্রধান হিসেবেও ছিলেন মার্কিন এই টেক বিলিয়নেয়ার। এ প্রকল্পের কাজ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার অর্থ, তথ্য ও কর্মীদের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখা। সেই সময় এসব কাজ মাস্কের বিভিন্ন কোম্পানির ওপরও প্রভাব ফেলে।

ইন্ডিপেনডেন্ট লিখেছে, বর্তমানে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আরো বেড়েছে মাস্কের, এমনকি সাবেক রিপাবলিকান মিত্রদের চ্যালেঞ্জ করার জন্য নতুন এক রাজনৈতিক দল গঠনের হুমকিও দিয়েছেন মাস্ক। ফলে তার ব্যবসায়িক বিভিন্ন কোম্পানি, যেমন স্পেসএক্স আরো বড় ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

এদিকে, স্পেসএক্স প্রধানত ফেডারেল সরকারের সঙ্গে চুক্তির ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল এবং ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে পাঠানোর জন্য মহাকাশযান সরবরাহের দিকে অনেক বিনিয়োগ করেছে তারা। ফলে তার কোম্পানির সরকারি চুক্তিতে প্রভাব ফেলতে পারে ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের এই রাজনৈতিক ঝামেলা। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশাল’-এ এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, মাস্কের এক বন্ধুকে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নাসার প্রধান করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। কারণ ওই ব্যক্তি প্রকৃত ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের জন্য আগে কখনো কিছুই করেননি। ওই পোস্টে মাস্ক সম্পর্কেও তার একই ধরনের সংশয় রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ