ঢাকা ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে যা হলো

  • আপডেট সময় : ০৩:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ভলোদিমিরি জেলেনস্কি ও ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে দিনভর কয়েক দফায় বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন। জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, প্রায় ৪০ মিনিট ফোনে কথা বলেন দুই নেতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি টেলিফোনে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন।

গত শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর সোমবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের ও জেলেনস্কি ছাড়াও বৈঠকে অংশ নেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ , ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্জ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব ও ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুট।

পুতিন–জেলেনস্কির বৈঠক হচ্ছে?
জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, তিনি পুতিনকে ফোন করে রুশ নেতা আর জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছেন। ট্রাম্প বলেন, এমন একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর তিনি একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করবেন। পুতিন-জেলেনস্কির সঙ্গে এই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও থাকবেন।

তবে কবে কোথায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলেননি। ইউরোপীয় নেতারা হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে বসার আগে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ট্রাম্পের কিছু কথোপকথন রেকর্ড করা হয়েছিল।

তাতে শোনা যায়, ট্রাম্প ম্যাক্রোঁকে বলেন, আমার মনে হয় সে (পুতিন) একটা চুক্তি করতে চায়। বিষয়টি যতই অদ্ভুত শোনায় না কেন সে আমার জন্য হলেও একটা চুক্তি করতে চায়। বুঝতে পারছেন?

তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের পর চরম দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে এক টেবিলে আলোচনায় বসানো কতটা সহজ হবে সেটা এখনো অনিশ্চিত।

মাসের পর মাস ধরে জেলেনস্কি পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। যদিও অনেকের মতে, জেলেনস্কি আসলে প্রমাণ করতে চাচ্ছিলেন যে রাশিয়া আসলে শান্তি চায় না।

কেননা জেলেনস্কির বিশ্বাস, ক্রেমলিন এমন কোনো বৈঠকে আগ্রহী নয়। অন্যদিকে মস্কো বারবারই পুতিন–জেলেনস্কি বৈঠকের ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র অস্পষ্টভাবে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, পুতিন জেলেনস্কি বৈঠকে উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব কি না তা বিবেচনা করা যেতে পারে।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে কী বলছেন ইউরোপীয় নেতারা
হোয়াইট হাউজে আলোচিত এই বৈঠকে একটি টেবিলের চারপাশজুড়ে বসেছিলেন ইউরোপীয় নেতারা। সঙ্গে ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ঠিক মধ্যখানে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে জেলেনস্কির সঙ্গে এদিন বৈঠক করেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকে বসেন। এ সময় ইউরোপীয় নেতারা যুদ্ধ বন্ধ ও ইউক্রেন তথা ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চয়তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন।

এই বৈঠকেই গুরুত্ব পায় যুদ্ধবিরতি বা স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি। ট্রাম্প সেখানে বলেন- যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার আগে যুদ্ধবিরতি জরুরি নয়।

যুদ্ধ চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে ইউক্রেন বারবার শান্তি আলোচনার শর্ত হিসেবে যুদ্ধবিরতি জরুরি বলে জানিয়েছিল। একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তির চেয়ে যুদ্ধবিরতিকে প্রাথমিকভাবে কিছুটা সহজ মনে করা হয়। কেননা, শান্তিচুক্তি করতে মাসের পর মাস লাগবে, এর মধ্যে রাশিয়ার হামলা চালানোরও আশঙ্কা রয়েছে।

বৈঠকে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, আমি জানি না এটা (যুদ্ধবিরতি) কতটা জরুরি। তবে ইউরোপীয় নেতারা এর বিরোধিতা করেন। সবচেয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডনিখ মের্জ।

তিনি বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারি না যে পরবর্তী বৈঠক যুদ্ধবিরতি ছাড়া হবে। তাই চলুন, এ নিয়েই কাজ করি এবং রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করি। পরে জেলেনস্কিকে যখন বক্তব্য রাখতে বলা হয়, তখন তিনি তার আগের মতো যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিয়ে পুনরাবৃত্তি করেননি।

নিরাপত্তার নিশ্চয়তার ইঙ্গিত ট্রাম্পের
ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেছেন, যুদ্ধ অবসানের যেকোনো চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে কোনো সহযোগিতা করবে। তবে কী ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

ট্রাম্প সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেননি, তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই সম্ভাবনাকে উড়িয়েও দেননি। ট্রাম্প বলেন, ইউরোপের প্রতিরক্ষার বিষয়টিই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রও এতে যুক্ত থাকবে। আমরা তাদের ভালো সুরক্ষা দিবো।

নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে এটি এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের সবচেয়ে স্পষ্ট বক্তব্য যা রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো চুক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প আরো বলেন, গত সপ্তাহে আলাস্কা বৈঠকে পুতিন মেনে নিয়েছেন যে শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা থাকবে।

সোমবারের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চয়তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে ৯০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তি হবে। এতে এমন মার্কিন অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে যা এখন ইউক্রেনের কাছে নেই— যেমন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী ব্যবস্থা ইত্যাদি।

তিনি আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের ড্রোন কিনবে, যা দেশীয় ড্রোন উৎপাদনের অর্থায়নে সহায়তা করবে।জেলেনস্কি জানান, কিয়েভের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিস্তারিত চুক্তি ১০ দিনের মধ্যেই তৈরি হতে পারে।

এসি/

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার খোলামেলা পোশাকে বিতর্কে জড়ালেন পাকিস্তানি অভিনেত্রী

ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে যা হলো

আপডেট সময় : ০৩:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ভলোদিমিরি জেলেনস্কি ও ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে দিনভর কয়েক দফায় বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন। জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, প্রায় ৪০ মিনিট ফোনে কথা বলেন দুই নেতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি টেলিফোনে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন।

গত শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর সোমবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের ও জেলেনস্কি ছাড়াও বৈঠকে অংশ নেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ , ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্জ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব ও ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুট।

পুতিন–জেলেনস্কির বৈঠক হচ্ছে?
জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, তিনি পুতিনকে ফোন করে রুশ নেতা আর জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছেন। ট্রাম্প বলেন, এমন একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর তিনি একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করবেন। পুতিন-জেলেনস্কির সঙ্গে এই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও থাকবেন।

তবে কবে কোথায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলেননি। ইউরোপীয় নেতারা হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে বসার আগে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ট্রাম্পের কিছু কথোপকথন রেকর্ড করা হয়েছিল।

তাতে শোনা যায়, ট্রাম্প ম্যাক্রোঁকে বলেন, আমার মনে হয় সে (পুতিন) একটা চুক্তি করতে চায়। বিষয়টি যতই অদ্ভুত শোনায় না কেন সে আমার জন্য হলেও একটা চুক্তি করতে চায়। বুঝতে পারছেন?

তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের পর চরম দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে এক টেবিলে আলোচনায় বসানো কতটা সহজ হবে সেটা এখনো অনিশ্চিত।

মাসের পর মাস ধরে জেলেনস্কি পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। যদিও অনেকের মতে, জেলেনস্কি আসলে প্রমাণ করতে চাচ্ছিলেন যে রাশিয়া আসলে শান্তি চায় না।

কেননা জেলেনস্কির বিশ্বাস, ক্রেমলিন এমন কোনো বৈঠকে আগ্রহী নয়। অন্যদিকে মস্কো বারবারই পুতিন–জেলেনস্কি বৈঠকের ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র অস্পষ্টভাবে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, পুতিন জেলেনস্কি বৈঠকে উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব কি না তা বিবেচনা করা যেতে পারে।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে কী বলছেন ইউরোপীয় নেতারা
হোয়াইট হাউজে আলোচিত এই বৈঠকে একটি টেবিলের চারপাশজুড়ে বসেছিলেন ইউরোপীয় নেতারা। সঙ্গে ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ঠিক মধ্যখানে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে জেলেনস্কির সঙ্গে এদিন বৈঠক করেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকে বসেন। এ সময় ইউরোপীয় নেতারা যুদ্ধ বন্ধ ও ইউক্রেন তথা ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চয়তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন।

এই বৈঠকেই গুরুত্ব পায় যুদ্ধবিরতি বা স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি। ট্রাম্প সেখানে বলেন- যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার আগে যুদ্ধবিরতি জরুরি নয়।

যুদ্ধ চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে ইউক্রেন বারবার শান্তি আলোচনার শর্ত হিসেবে যুদ্ধবিরতি জরুরি বলে জানিয়েছিল। একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তির চেয়ে যুদ্ধবিরতিকে প্রাথমিকভাবে কিছুটা সহজ মনে করা হয়। কেননা, শান্তিচুক্তি করতে মাসের পর মাস লাগবে, এর মধ্যে রাশিয়ার হামলা চালানোরও আশঙ্কা রয়েছে।

বৈঠকে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, আমি জানি না এটা (যুদ্ধবিরতি) কতটা জরুরি। তবে ইউরোপীয় নেতারা এর বিরোধিতা করেন। সবচেয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডনিখ মের্জ।

তিনি বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারি না যে পরবর্তী বৈঠক যুদ্ধবিরতি ছাড়া হবে। তাই চলুন, এ নিয়েই কাজ করি এবং রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করি। পরে জেলেনস্কিকে যখন বক্তব্য রাখতে বলা হয়, তখন তিনি তার আগের মতো যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিয়ে পুনরাবৃত্তি করেননি।

নিরাপত্তার নিশ্চয়তার ইঙ্গিত ট্রাম্পের
ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেছেন, যুদ্ধ অবসানের যেকোনো চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে কোনো সহযোগিতা করবে। তবে কী ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

ট্রাম্প সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেননি, তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই সম্ভাবনাকে উড়িয়েও দেননি। ট্রাম্প বলেন, ইউরোপের প্রতিরক্ষার বিষয়টিই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রও এতে যুক্ত থাকবে। আমরা তাদের ভালো সুরক্ষা দিবো।

নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে এটি এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের সবচেয়ে স্পষ্ট বক্তব্য যা রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো চুক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প আরো বলেন, গত সপ্তাহে আলাস্কা বৈঠকে পুতিন মেনে নিয়েছেন যে শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা থাকবে।

সোমবারের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চয়তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে ৯০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তি হবে। এতে এমন মার্কিন অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে যা এখন ইউক্রেনের কাছে নেই— যেমন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী ব্যবস্থা ইত্যাদি।

তিনি আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের ড্রোন কিনবে, যা দেশীয় ড্রোন উৎপাদনের অর্থায়নে সহায়তা করবে।জেলেনস্কি জানান, কিয়েভের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিস্তারিত চুক্তি ১০ দিনের মধ্যেই তৈরি হতে পারে।

এসি/