ঢাকা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ ‘কোনো কৌতুক নয়’

  • আপডেট সময় : ০৪:৪৭:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড কেনার যে অভিপ্রায় সম্প্রতি জানিয়েছেন ট্রাম্প ,তাকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক সাক্ষাৎকারে এ ইস্যুতে ট্রাম্পের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মার্কিন সাংবাদিক মেগিন কেলির টেলিভিশন শোতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রুবিও। সেখানে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গ্রিনল্যান্ড কিনতে চান এবং যদি তার এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দ্বীপটির দখল নিতে পারেন তিনি।

এটা কোনো কৌতুক নয়। এটা কেবল ভোগদখলের উদ্দেশ্যে কোনো ভূমি অধিকার করা নয়। এর সঙ্গে আমাদের জাতীয় স্বার্থ জড়িত এবং বিষয়টি অবশ্যই সমাধান হওয়া প্রয়োজন।

সাক্ষাৎকারে মার্কো রুবিও আরও বলেন, সামনের বছরগুলোতে উত্তর মেরুর আর্কটিক সাগর বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্যপথ হয়ে উঠবে এবং সেক্ষেত্রে চীন সেই পথ দখলের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করতে পারে।

২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকবেন ২০২৮ সাল পর্যন্ত। এই চার বছর সময়ের মধ্যে ওয়াশিংটন গ্রিনল্যান্ড কিনতে পারবে কি না- সাংবাদিক মেগিন কেলির এ প্রশ্নের উত্তরে রুবিও বলেন, অবশ্যই এ ব্যাপারে আমাদের প্রেসিডেন্ট ভালো বলতে পারবেন; যেহেতু তিনি এ ব্যাপারটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন, স্বাভাবিক ভাবেই কিছু পরিকল্পনা তার রয়েছে। আর সত্যি বলতে এখন পর্যন্ত আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো কৌশল গ্রহণ করি নি। তবে এটুকু আমি বলতে পারি যে চার বছর পরে এ ইস্যুতে আমাদের অবস্থান খুবই দৃঢ় ও গোছানো থাকবে।

এদিকে রুবিওর এই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার হওয়ার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেডে বলেন, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং এ ভূখণ্ড দখল করার জন্য বলপ্রয়োগের চেষ্টা করা হলে জনগণ তা প্রতিরোধ করবে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভীয় অঞ্চলের দেশ ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ। ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপ ভূখণ্ডের জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ৫৮৩ জন। এই জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই ইনুইট জাতিগোষ্ঠীভুক্ত। এ দ্বীপের বাসিন্দারা ডেনমার্ক এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিক।

গত ২৫ ডিসেম্বর প্রথমবার প্রকাশ্যে ট্রাম্প জানান, গ্রিনল্যান্ড কিনতে চায় ওয়াশিংটন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ সংক্রান্ত এক পোস্টে তিনি বলেন, সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এখন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা জরুরি।

এদিকে ট্রাম্প এই পোস্ট দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেডে বলেন, “গ্রিনল্যান্ড আমাদের। আমরা বিক্রির জন্য নই এবং কখনও এমনটা ঘটবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি এবং নিশ্চিতভাবেই তা আমরা বৃথা যেতে দেবো না।” সূত্র: রয়টার্স

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ ‘কোনো কৌতুক নয়’

আপডেট সময় : ০৪:৪৭:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড কেনার যে অভিপ্রায় সম্প্রতি জানিয়েছেন ট্রাম্প ,তাকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক সাক্ষাৎকারে এ ইস্যুতে ট্রাম্পের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মার্কিন সাংবাদিক মেগিন কেলির টেলিভিশন শোতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রুবিও। সেখানে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গ্রিনল্যান্ড কিনতে চান এবং যদি তার এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দ্বীপটির দখল নিতে পারেন তিনি।

এটা কোনো কৌতুক নয়। এটা কেবল ভোগদখলের উদ্দেশ্যে কোনো ভূমি অধিকার করা নয়। এর সঙ্গে আমাদের জাতীয় স্বার্থ জড়িত এবং বিষয়টি অবশ্যই সমাধান হওয়া প্রয়োজন।

সাক্ষাৎকারে মার্কো রুবিও আরও বলেন, সামনের বছরগুলোতে উত্তর মেরুর আর্কটিক সাগর বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্যপথ হয়ে উঠবে এবং সেক্ষেত্রে চীন সেই পথ দখলের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করতে পারে।

২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকবেন ২০২৮ সাল পর্যন্ত। এই চার বছর সময়ের মধ্যে ওয়াশিংটন গ্রিনল্যান্ড কিনতে পারবে কি না- সাংবাদিক মেগিন কেলির এ প্রশ্নের উত্তরে রুবিও বলেন, অবশ্যই এ ব্যাপারে আমাদের প্রেসিডেন্ট ভালো বলতে পারবেন; যেহেতু তিনি এ ব্যাপারটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন, স্বাভাবিক ভাবেই কিছু পরিকল্পনা তার রয়েছে। আর সত্যি বলতে এখন পর্যন্ত আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো কৌশল গ্রহণ করি নি। তবে এটুকু আমি বলতে পারি যে চার বছর পরে এ ইস্যুতে আমাদের অবস্থান খুবই দৃঢ় ও গোছানো থাকবে।

এদিকে রুবিওর এই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার হওয়ার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেডে বলেন, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং এ ভূখণ্ড দখল করার জন্য বলপ্রয়োগের চেষ্টা করা হলে জনগণ তা প্রতিরোধ করবে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভীয় অঞ্চলের দেশ ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ। ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপ ভূখণ্ডের জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ৫৮৩ জন। এই জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই ইনুইট জাতিগোষ্ঠীভুক্ত। এ দ্বীপের বাসিন্দারা ডেনমার্ক এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিক।

গত ২৫ ডিসেম্বর প্রথমবার প্রকাশ্যে ট্রাম্প জানান, গ্রিনল্যান্ড কিনতে চায় ওয়াশিংটন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ সংক্রান্ত এক পোস্টে তিনি বলেন, সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এখন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা জরুরি।

এদিকে ট্রাম্প এই পোস্ট দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেডে বলেন, “গ্রিনল্যান্ড আমাদের। আমরা বিক্রির জন্য নই এবং কখনও এমনটা ঘটবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি এবং নিশ্চিতভাবেই তা আমরা বৃথা যেতে দেবো না।” সূত্র: রয়টার্স