ঢাকা ১২:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

টোলের ৩০৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ,আসামি হাসিনা-কাদেরসহ ৭ সাবেক মন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০৭:৪২:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডকে কাজ দিয়ে সরকারের প্রায় ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক ৭ মন্ত্রীসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১২ অক্টোবর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী তানজিল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির হাসান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান (অর্থ ও পরিকল্পনা), সাবেক সচিব এম এ এন ছিদ্দিক (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়), সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, সাবেক উপসচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আফতাব হোসেন খান, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুস সালাম, সিএনএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও পরিচালক ইকরাম ইকবাল।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডে একক উৎসভিত্তিক দরপত্রে নিয়োগ দিতে পূর্বের টেন্ডার বাতিল করা হয়। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই শুধু সিএনএস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে পাঁচ বছরের জন্য সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা হয় মোট আদায়কৃত টোলের ১৭.৭৫ শতাংশ হারে। এর ফলে সিএনএস লিমিটেড মোট ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিল গ্রহণ করে, যা একই মেয়াদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক বেশি। সেতুতে ২০১০-১৫ এই পাঁচ বছরে MBEL-ATT এই দুটি কোম্পানিকে জয়েন্ট ভেঞার কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে টোল আদায়ে ১৫ কোটি ৫৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯১২ টাকায় নিয়োগ করা হয়। অথচ মেঘনা-গোমতী সেতুতে ২০২২-২৫ এই তিন বছরে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে ভ্যাট ও আইটিসহ ৬৭ কোটি ৫৪ লাখ ৯১ হাজার ৪৬৬ টাকায় নিয়োগ দেওয়া হয়, যা পাঁচ বছরে রূপান্তর করলে হয় ১১২ কোটি ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ১১০ টাকা। বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই নিয়োগের ফলে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৮৯০ টাকা।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ও সিএনএস লিমিটেডের পরিচালকরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও আত্মসাতের মাধ্যমে নিজেদের বা অন্যকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।

ওআ/আপ্র/১২/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

টোলের ৩০৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ,আসামি হাসিনা-কাদেরসহ ৭ সাবেক মন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৭:৪২:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডকে কাজ দিয়ে সরকারের প্রায় ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক ৭ মন্ত্রীসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১২ অক্টোবর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী তানজিল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির হাসান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান (অর্থ ও পরিকল্পনা), সাবেক সচিব এম এ এন ছিদ্দিক (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়), সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, সাবেক উপসচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আফতাব হোসেন খান, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুস সালাম, সিএনএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও পরিচালক ইকরাম ইকবাল।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডে একক উৎসভিত্তিক দরপত্রে নিয়োগ দিতে পূর্বের টেন্ডার বাতিল করা হয়। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই শুধু সিএনএস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে পাঁচ বছরের জন্য সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা হয় মোট আদায়কৃত টোলের ১৭.৭৫ শতাংশ হারে। এর ফলে সিএনএস লিমিটেড মোট ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিল গ্রহণ করে, যা একই মেয়াদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক বেশি। সেতুতে ২০১০-১৫ এই পাঁচ বছরে MBEL-ATT এই দুটি কোম্পানিকে জয়েন্ট ভেঞার কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে টোল আদায়ে ১৫ কোটি ৫৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯১২ টাকায় নিয়োগ করা হয়। অথচ মেঘনা-গোমতী সেতুতে ২০২২-২৫ এই তিন বছরে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে ভ্যাট ও আইটিসহ ৬৭ কোটি ৫৪ লাখ ৯১ হাজার ৪৬৬ টাকায় নিয়োগ দেওয়া হয়, যা পাঁচ বছরে রূপান্তর করলে হয় ১১২ কোটি ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ১১০ টাকা। বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই নিয়োগের ফলে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৮৯০ টাকা।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ও সিএনএস লিমিটেডের পরিচালকরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও আত্মসাতের মাধ্যমে নিজেদের বা অন্যকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।

ওআ/আপ্র/১২/১০/২০২৫