ক্রীড়া ডেস্ক : প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কাল মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-নিউজিল্যান্ড। দুই দলেই তারকা-মহাতারকায় ভরপুর। কোহলি-উইলিয়ামসন, বুমরাহ-বোল্ট ছাড়াও তারকার অভাব নেই। তাই একনজরে দেখে নেওয়া যাক ফাইনালের মঞ্চে স্পটলাইট থাকবে দুই দলের যেসব খেলোয়াড়ের ওপর।
বিরাট কোহলি (ভারত) : মহেন্দ্র সিং ধোনির পর ভারতের দায়িত্ব পান বিরাট কোহলি। গত তিন-চার বছরে টেস্টে ভারতকে শক্তিশালী এক দলে পরিণত করেছেন তিনি। দেশের বাইরে বিদেশের মাটিতে টেস্ট জয়ের জন্য দলকে গড়ে তুলেছেন। দলকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা এনে দিতে পারলেই অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বড় অর্জন হবে কিং কোহলির।
ইংল্যান্ডের মাটিতে কোহলি ব্যাট হাতে মোটামুটি সফল। ১০ ম্যাচের ২০ ইনিংসে ২টি সেঞ্চুরি ও ৩টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৭২৭ রান করেছেন। গড়- ৩৬.৩৫। ২০১৮ সালে সর্বশেষ সফরেই করেছিলেন ৫৯৩ রান। তাই অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে জ্বলে উঠতে পারলে, তার ব্যাটে হাসবে ভারত।
ঋসভ পন্থ (ভারত) : গত কয়েক বছরে বিশ্ব ক্রিকেটে দুর্দান্ত উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রশংসা পেয়েছেন ঋসভ পন্থ। যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে মেলে ধরতে পারদর্শী এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। আক্রমণাত্মক মুডে প্রতিপক্ষ বোলারদের দুমড়ে-মুচড়ে দিতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে ভারতের বড় ফ্যাক্টর হতে পারেন পন্থ। ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড সফরে তিনি ৩ টেস্টের ৬ ইনিংসে ১টি সেঞ্চুরি করেছেন। ওভালে খেলেন ১১৪ রানের নান্দনিক ইনিংস। এছাড়া সাম্প্রতিক ফর্মও তাকে আত্মবিশ্বাসী রেখেছে। অনুশীলন ম্যাচে সেঞ্চুরিও করেছেন।
জসপ্রিত বুমরাহ (ভারত) : ভারতের পেস আক্রমণের অন্যতম ভরসার নাম জসপ্রিত বুমরাহ। ভারতকে ফাইনালের মঞ্চে তুলতে তার বড় ভূমিকা ছিল। তার বৈচিত্র্যময় বোলিং অ্যাকশন ও বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং যেকোনো প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইন-আপকে কাঁপিয়ে দিতে পারে। ইংল্যান্ডের মাটিতে তিন টেস্ট খেলেছেন বুমরাহ। শিকার করেছেন ১৪ উইকেট। নটিংহামে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তিও গড়েছেন এই ডান-হাতি পেসার।
কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড) : আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ে দুই নম্বরে আছেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবেই নয়, অধিনায়কের দায়িত্বটা শক্ত হাতে পালন করছেন। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন-আপে অন্যতম ভরসার নাম উইলিয়ামসন। গ্রীষ্মে দুটি ডাবল-সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। হ্যামিল্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৫১ ও ক্রাইস্টচার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৩৮ রানের দুটি দর্শনীয় ইনিংস খেলেন। অবশ্য ইংল্যান্ডের মাটিতে খুব বেশি সফল নন উইলিয়ামসন।
৫ ম্যাচের ১০ ইনিংসে ২৬.১০ গড়ে করেছেন ২৬১ রান। আছে ১টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরি। একমাত্র সেঞ্চুরিটি লর্ডসের মাটিতে।তবে ফাইনালের মঞ্চে উইলিয়ামসনের খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কনুইর ইনজুরির কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টেস্টে খেলতে পারেননি উইলিয়ামসন। ফাইনালের আগে উইলিয়ামসনকে এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি নিউজিল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে তাকে খেলানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে কিউইরা, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
রস টেইলর (নিউজিল্যান্ড) : নিউজিল্যান্ড দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রস টেইলর। তাকে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন-আপের মেরুদ- বলা হয়। স্পিন খেলতে পারদর্শী টেইলরকে নিয়ে পরিকল্পনা সাজাবে নিউজিল্যান্ড। কারণ ফাইনালে ভারতের একাদশে থাকতে পারে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার মতো দুই স্পিনার। ইংল্যান্ডের মাটিতে ৯ টেস্টের ১৮ ইনিংসে ৬৫০ রান করেছেন টেইলর। আছে ১টি সেঞ্চুরি ও ৪টি হাফ-সেঞ্চুরি। ব্যাটিং গড়- ৪০.৬২। ২০০৮ সালে ম্যানচেস্টারে ১৫৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন টেইলর।
ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড) : ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। তার ইনসুইং প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের মাথাব্যথার কারণ। সেটির প্রমাণ আবারও দেখা গেছে বার্মিংহামের টেস্টে। ১১৯ রান খরচায় দুই ইনিংসে নিয়েছেন ৬ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৪টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২টি। নিউজিল্যান্ডকে জয় এনে দিতে বোল্টের বড় অবদান ছিল। ফাইনালের আগে বোল্টের এমন ফর্ম নিয়ে ভাবতে হবে ভারতের ব্যাটসম্যানদের। শুধুমাত্র বর্তমান ফর্মই নয়, ইংল্যান্ডের মাটিতে বিধ্বংসী রূপে ধরা দিতে পারেন বোল্ট। এখান ৫ টেস্টের ১০ ইনিংসে নিয়েছেন ২৭ উইকেট। গড়- ২২.৪০।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্পটলাইটে থাকা খেলোয়াড়রা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ