প্রত্যাশা ডেস্ক: কুষ্টিয়ায় টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে বেধড়ক মারধরের শিকার নারী চিকিৎসক শারমিন সুলতানা বাড়ি ফিরেছেন। গত সোমবার (৫ মে) রাত সাড়ে ১১টার পর পুলিশ থানা থেকে স্বামীর জিম্মায় তাঁকে হস্তান্তর করে। রাতেই তিনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
চিকিৎসক শারমিন সুলতানার বাড়ি ফেরার তথ্য নিশ্চিত করে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ওই নারী চিকিৎসককে যাঁরা মারধর করেছেন, তাঁরা জোরালোভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি যে এই নারী চিকিৎসকই তাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কোনো প্রমাণও দেখাতে পারেননি। আর চিকিৎসক দম্পতি যদি কোনো মামলা দেন, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শারমিন সুলতানার স্বামী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মাসুদ রানা বলেন, টোটালি ফেক ঘটনায় মারধর করা হয়েছে। আমরা নারী নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা করব।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া শহরের অর্জুনদাস আগরওয়ালা সড়কে লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়মিত চেম্বার করেন চিকিৎসক শারমিন সুলতানা। গত দুপুরে লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেম্বারে যাওয়ার পর আগে থেকে সেখানে অবস্থান করা একদল নারী তাঁর ওপর হামলা করেন। সেখানে ১৫ থেকে ২০ জন নারী তাঁকে টেনেহিঁচড়ে সড়কের ওপর নিয়ে যান। সেখানে চুলের মুঠি ধরে তাঁর ওপর হামলা করেন। বেশ কয়েকজন তাঁর পোশাক ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতারণার নানা অভিযোগ তুলে কয়েকজন মারধরও করেন তাঁকে।
খবর পেয়ে ওই নারী চিকিৎসককে উদ্ধার করতে এসে তাঁর স্বামীও মারধরের শিকার হন। পরে পুলিশ গিয়ে এই দম্পতিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। যাঁরা মারধর করেছিলেন, তাঁরাও থানায় যান। সোমবার বিকেল থেকেই হামলার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। মারধরে অংশ নেওয়া একাধিক নারী অভিযোগ করেন, চিকিৎসা নিতে এলে ওই নারী চিকিৎসক চাকরি দেওয়ার কথা, বিদেশে পাঠানোর কথাসহ নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তিনি চাকরি দিতে পারেননি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।
মঙ্গলবার সকালে ওসি মোশাররফ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, প্রতারণার অভিযোগ করা নারীরা সোমবার রাতে থানায় এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা কথা হয়। টাকা লেনদেনের ঘটনা মেহেরপুরে ঘটেছে বলে তাঁরা জানান। তবে এই টাকা লেনদেনের কোনো অডিও-ভিডিও বা ডকুমেন্ট বা বিকাশে লেনদেন করেছেন কি না, সে বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই। আর এই নারী চিকিৎসকই সেই চিকিৎসক কি না, সেটাও আইডেন্টি করতে পারেননি। জোরালোভাবে বলতে পারেনি। তাঁরা অনুমাননির্ভর বলছেন বলে জানান ওসি মোশাররফ হোসেন।