প্রযুক্তি ডেস্ক : নেদারল্যান্ডসের ছোট একটি শহরে ৮০’র দশকে সক্রিয় ছিল এক ‘শয়তান উপাসক যৌন নীপিড়ক’ দল, আর তাদের অত্যাচারের শিকার হয়েছে শহরটির শিশুরা এমন নানা ষড়যন্ত্রতত্ত্ব ছাড়চ্ছে টুইটারে। সমাধান চেয়ে শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে ওই শহর।
বোডেগ্রাভেন-রেউইজক নামে পরিচিত ওই শহরটির অবস্থান নেদারল্যান্ডসের মাঝামাঝি। ৩৫ হাজার অধিবাসী আছেন শহরটিতে।
শহরটিকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রতত্ত্ব ছড়াতে শুরু করে ২০০০ সালের দিকে। আর এর কেন্দ্রে রয়েছেন তিনজন ব্যক্তি। এরা বিভিন্ন গল্প ছড়াতে শুরু করেন যে ৮০’র দশকে শিশুদের যৌন নীপিড়ন ও হত্যার ঘটনা ঘটেছিল সেখানে।
গল্পের মূল হোতার ভাষ্যমতে, বোডেগ্রাভেনের একদল লোকের যৌন নিপীড়নের সাক্ষী হওয়া তার শৈশব স্মৃতির অংশ।
এই সব গল্পের কারণে ‘অশান্তির’ সৃষ্টি হয়েছে বোডেগ্রাভেন শহরে। স্থানীয় কবরস্থানে গিয়ে লোকজনের ভিড় করার পাশাপাশি নাম না জানা বিভিন্ন শিশুর কবরে ফুল ও লিখিত বার্তা দিয়েছেন এসব তত্ত্বে বিশ্বাসী লোকদের একটি দল। তাদের কথা হচ্ছে, ‘শয়তান চক্রের’ শিকার ওই সব শিশু।
শুক্রবার ‘দ্য হেগ ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে’ শুনানির আগে এই প্রসঙ্গে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি টুইটারের আইনজীবি জেনস ভ্যান ডেন ব্রিংক।
এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে গত বছর এই আদালতই প্রশ্নবিদ্ধ ওই সব ব্যক্তির টুইট, হুমকি ও এই গল্প সম্পর্কিত অন্যান্য কনটেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
এই রায়ের পরও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে বোডেগ্রাভেন শহরের বিভিন্ন গল্প। ফলে, স্বয়ং টুইটারকেই আদালতে নিতে বাধ্য হয়েছে শহরটি।
“ষড়যন্ত্রতত্ত্ববাদীরা তাদের বার্তা না সরালে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মগুলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে।” –শুক্রবার ডাচ সংবাদপত্র ‘দে ভক্সক্রান্ত’কে বলেন বোডেগ্রাভেন শহরের আইনজীবি সিস ভান দে জান্দেন।
ভ্যান দে জান্দেন আরও বলেন, কেবল ওই তিন ব্যক্তির পোস্ট নয় বরং বোডেগ্রাভেনের গল্প সম্পর্কিত সকল বার্তা সক্রিয়ভাবে খুঁজে সেগুলো মুছে ফেলতে জুলাই মাসেই টুইটারকে অনুরোধ করেছে শহরটি। তবে, টুইটারের দিক থেকে এর বিপরীতে কোনো উত্তর মেলেনি।
বোডেনগ্রাভেন নিয়ে গল্প ছড়ানো ব্যক্তিরা বর্তমানে কারাগারে আছেন, তবে সেটি এই গল্পের কারণে নয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটা ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হুগো দে জংগেসহ বেশ কিছু ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি এবং অন্যান্য প্ররোচনার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তারা।