ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

টিপ পরায় শিক্ষক লাঞ্ছনায় অভিযুক্ত সেই পুলিশ কনস্টেবল বরখাস্ত

  • আপডেট সময় : ১২:৫২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : টিপ পরায় তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দারকে লাঞ্ছনা ও অশালীন আচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গতকাল সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে খবরটি যেভাবে আসছে, তাতে পুলিশের তদন্ত নিয়ে যাতে শতভাগ বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে ও গাফিলতির অভিযোগ না ওঠে সে জন্য ওই অভিযুক্ত কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ঘটনার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে জোরালো তদন্ত ও অভিযুক্ত শনাক্ত করেছে। পুলিশ তদন্তে আন্তরিক, গাফিলতির সুযোগ নেই, এটা এরই মধ্যে প্রমাণিত। তবে যিনি ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন তাকে প্রমাণ করতে হবে। আমাদের ইনকোয়ারি কমিটি হয়েছে।
এর আগে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় শিক্ষিকা হেনস্তার ঘটনায় ওই পুলিশ কনস্টেবলকে চিহ্নিত করে হেফাজতে নেওয়া হয়। শিক্ষিকাকে হেনস্তার বিষয় স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য নাজমুল তারেক। এ বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তদন্ত ও ঘটনার সত্যতা তুলে আনা হবে বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার। তিনি গতকাল সোমবার সকালে সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
বিপ্লব বলেন, “ওই কনস্টেবলের নাম নাজমুল তারেক। ঘটনার সাথে জড়িত হিসেবে তাকে চিহ্নিত করেছি আমরা। শিক্ষক যে জিডি করেছিলেন, তার যথাযথ তদন্ত হবে।”
ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ঢাকার পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডিসি বিপ্লব বলেন, অভিযোগে ওই নারী কিন্তু পুলিশ সদস্যের নাম ও পদবি বলেননি। শুধু একজন পুলিশ সদস্যের কথা বলেছেন।
‘অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা খুব গুরুত্বসহ তদন্ত শুরু করি। শুরু থেকে ডিএমপি কমিশনার, আইজিপি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ঘটনার যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দেন। পুরো তেজগাঁওয়ে কর্মরত পুলিশের সব সদস্য নিয়ে আমরা একযোগে তদন্তে নামি। সবার নিরলস প্রচেষ্টায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই।’ অভিযুক্ত নাজমুল তারেক কনস্টেবল জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত তিনি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ও অ্যানালগ সব পর্যায়ে তদন্ত করে কনস্টেবল নাজমুলের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছি। তার মোটরসাইকেল নম্বর ধরেও নাম পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ কী?- জানতে চাইলে উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, সব জায়গায় ঘটনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সংসদেও আলোচনা হয়েছে। তবে আলোচনা হোক বা না হোক, আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করি। এক্ষেত্রেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।
ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগকারী শিক্ষিকা ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি জিডি করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই জিডির তদন্ত করা হবে।
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য নাজমুল তারেক কী জানিয়েছেন?- এমন প্রশ্নে ডিসি বিপ্লব বলেন, আমরা অভিযুক্ত কনস্টেবল নাজমুল তারেকের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযোগকারী নারীর সঙ্গে একটি ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন।
টিপ পরা, ইভটিজিং সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পর্কে কিছু জানা গেছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা ঘটেছে, সেটার সত্যতা আমরা পেয়েছি। এখন টিপ পরা বা ইভটিজিং সংক্রান্ত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করবো। আমাদের প্রাথমিক কাজ ছিল অভিযুক্তকে শনাক্ত করা। যেহেতু জিডিতে অভিযুক্তের নাম, পদবি, ও মোটরসাইকেলের নম্বর পরিপূর্ণ ছিল না। শুধু সংক্ষিপ্ত বিবরণী ছিল। তবে আমরা চেষ্টা করে পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি।
প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদে নারীরা : কপালে টিপ পরা নিয়ে রাজধানীর ফার্মমেট এলাকায় এক শিক্ষককে হেনস্তার ঘটনায় জড়িত পুলিশ কনস্টেবলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার নারীরা।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘নারী প্রগতি সংঘ’ ব্যানারে এক মানবন্ধন থেকে নারী হয়রানি বন্ধে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বানও জানানো হয়। নানা ধরনের প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন নারীরা। তাতে লেখা ছিলো ‘টিপ পরা না পরা নারীর ইচ্ছা’, ‘নারীর সমান অধিকারের বিরোধিতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের সংবিধানের বিরোধিতা’, ‘জেন্ডার সংবেদনশীল ও নারীবান্ধব পুলিশ চাই’, ‘হয়রানিকারী পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’, ‘নারীবিরোধী অপশক্তি জাতীয় অগ্রগতির শত্রু’।
সংবিধানে নারী পুরুষের সমঅবস্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নারী প্রগতি সংঘের নেত্রী নাসরিন বেগম বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের রয়েছে, সেখানে নারীরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে না, স্বাধীনভাবে জীবন-যাপন করতে পারবে না, স্বাধীনভাবে কাজ-কর্ম করতে পারবে না- সেটা কোনো দিন হতে পারে না।”
হেনস্থাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রোববার সংসদে দাবি জানান অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তফা। নারী প্রগতি সংঘের নেতা নাসরিন বেগম বলেন, তাদের এই মানববন্ধন শুধু নারীর টিপ পরা সংক্রান্ত বিষয়ে নয়, নারীর প্রতিদিনের জীবনের হয়রানি বন্ধের দাবি নিয়ে তারা এসেছেন।
“আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে এভাবে গলা টিপে ধরেছে, তারা কারা? আমরা একদিকে নারীর স্বাধীনতার কথা বলি, অন্যদিকে আমি কপালে টিপ পরব কি পরব না তাও ওদের অনুমতি নিতে হবে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া পোশাক কর্মী আমেনা বেগম বলেন, “আমি কি পরব, আমি কীভাবে চলব তা ঠিক করবে কে? আমি ঘোমটা দেব কি দেব না তার জন্য একজন সরকারি লোক আমাকে শাসাবে?”
মানববন্ধনে আসা পরিচ্ছন্নতা কর্মী নাসের আহমেদ বলেন, “যারা জনগণের নিরাপত্তা দেবেন, তারা যদি একজন কলেজ শিক্ষক বলুন বা আমার বোন পরিচ্ছন্নতা কর্মী বলুন, তার প্রতি এমনটি ব্যবহার করেন, তাহলে আমরা যাবো কোথায়?”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

টিপ পরায় শিক্ষক লাঞ্ছনায় অভিযুক্ত সেই পুলিশ কনস্টেবল বরখাস্ত

আপডেট সময় : ১২:৫২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : টিপ পরায় তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দারকে লাঞ্ছনা ও অশালীন আচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গতকাল সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে খবরটি যেভাবে আসছে, তাতে পুলিশের তদন্ত নিয়ে যাতে শতভাগ বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে ও গাফিলতির অভিযোগ না ওঠে সে জন্য ওই অভিযুক্ত কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ঘটনার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে জোরালো তদন্ত ও অভিযুক্ত শনাক্ত করেছে। পুলিশ তদন্তে আন্তরিক, গাফিলতির সুযোগ নেই, এটা এরই মধ্যে প্রমাণিত। তবে যিনি ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন তাকে প্রমাণ করতে হবে। আমাদের ইনকোয়ারি কমিটি হয়েছে।
এর আগে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় শিক্ষিকা হেনস্তার ঘটনায় ওই পুলিশ কনস্টেবলকে চিহ্নিত করে হেফাজতে নেওয়া হয়। শিক্ষিকাকে হেনস্তার বিষয় স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য নাজমুল তারেক। এ বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তদন্ত ও ঘটনার সত্যতা তুলে আনা হবে বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার। তিনি গতকাল সোমবার সকালে সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
বিপ্লব বলেন, “ওই কনস্টেবলের নাম নাজমুল তারেক। ঘটনার সাথে জড়িত হিসেবে তাকে চিহ্নিত করেছি আমরা। শিক্ষক যে জিডি করেছিলেন, তার যথাযথ তদন্ত হবে।”
ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ঢাকার পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডিসি বিপ্লব বলেন, অভিযোগে ওই নারী কিন্তু পুলিশ সদস্যের নাম ও পদবি বলেননি। শুধু একজন পুলিশ সদস্যের কথা বলেছেন।
‘অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা খুব গুরুত্বসহ তদন্ত শুরু করি। শুরু থেকে ডিএমপি কমিশনার, আইজিপি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ঘটনার যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দেন। পুরো তেজগাঁওয়ে কর্মরত পুলিশের সব সদস্য নিয়ে আমরা একযোগে তদন্তে নামি। সবার নিরলস প্রচেষ্টায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই।’ অভিযুক্ত নাজমুল তারেক কনস্টেবল জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত তিনি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ও অ্যানালগ সব পর্যায়ে তদন্ত করে কনস্টেবল নাজমুলের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছি। তার মোটরসাইকেল নম্বর ধরেও নাম পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ কী?- জানতে চাইলে উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, সব জায়গায় ঘটনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সংসদেও আলোচনা হয়েছে। তবে আলোচনা হোক বা না হোক, আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করি। এক্ষেত্রেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।
ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগকারী শিক্ষিকা ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি জিডি করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই জিডির তদন্ত করা হবে।
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য নাজমুল তারেক কী জানিয়েছেন?- এমন প্রশ্নে ডিসি বিপ্লব বলেন, আমরা অভিযুক্ত কনস্টেবল নাজমুল তারেকের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযোগকারী নারীর সঙ্গে একটি ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন।
টিপ পরা, ইভটিজিং সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পর্কে কিছু জানা গেছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা ঘটেছে, সেটার সত্যতা আমরা পেয়েছি। এখন টিপ পরা বা ইভটিজিং সংক্রান্ত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করবো। আমাদের প্রাথমিক কাজ ছিল অভিযুক্তকে শনাক্ত করা। যেহেতু জিডিতে অভিযুক্তের নাম, পদবি, ও মোটরসাইকেলের নম্বর পরিপূর্ণ ছিল না। শুধু সংক্ষিপ্ত বিবরণী ছিল। তবে আমরা চেষ্টা করে পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি।
প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদে নারীরা : কপালে টিপ পরা নিয়ে রাজধানীর ফার্মমেট এলাকায় এক শিক্ষককে হেনস্তার ঘটনায় জড়িত পুলিশ কনস্টেবলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার নারীরা।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘নারী প্রগতি সংঘ’ ব্যানারে এক মানবন্ধন থেকে নারী হয়রানি বন্ধে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বানও জানানো হয়। নানা ধরনের প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন নারীরা। তাতে লেখা ছিলো ‘টিপ পরা না পরা নারীর ইচ্ছা’, ‘নারীর সমান অধিকারের বিরোধিতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের সংবিধানের বিরোধিতা’, ‘জেন্ডার সংবেদনশীল ও নারীবান্ধব পুলিশ চাই’, ‘হয়রানিকারী পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’, ‘নারীবিরোধী অপশক্তি জাতীয় অগ্রগতির শত্রু’।
সংবিধানে নারী পুরুষের সমঅবস্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নারী প্রগতি সংঘের নেত্রী নাসরিন বেগম বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের রয়েছে, সেখানে নারীরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে না, স্বাধীনভাবে জীবন-যাপন করতে পারবে না, স্বাধীনভাবে কাজ-কর্ম করতে পারবে না- সেটা কোনো দিন হতে পারে না।”
হেনস্থাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রোববার সংসদে দাবি জানান অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তফা। নারী প্রগতি সংঘের নেতা নাসরিন বেগম বলেন, তাদের এই মানববন্ধন শুধু নারীর টিপ পরা সংক্রান্ত বিষয়ে নয়, নারীর প্রতিদিনের জীবনের হয়রানি বন্ধের দাবি নিয়ে তারা এসেছেন।
“আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে এভাবে গলা টিপে ধরেছে, তারা কারা? আমরা একদিকে নারীর স্বাধীনতার কথা বলি, অন্যদিকে আমি কপালে টিপ পরব কি পরব না তাও ওদের অনুমতি নিতে হবে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া পোশাক কর্মী আমেনা বেগম বলেন, “আমি কি পরব, আমি কীভাবে চলব তা ঠিক করবে কে? আমি ঘোমটা দেব কি দেব না তার জন্য একজন সরকারি লোক আমাকে শাসাবে?”
মানববন্ধনে আসা পরিচ্ছন্নতা কর্মী নাসের আহমেদ বলেন, “যারা জনগণের নিরাপত্তা দেবেন, তারা যদি একজন কলেজ শিক্ষক বলুন বা আমার বোন পরিচ্ছন্নতা কর্মী বলুন, তার প্রতি এমনটি ব্যবহার করেন, তাহলে আমরা যাবো কোথায়?”