নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের টিকা বিক্রির সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
গতকাল রোববার রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, “এটা আইনি প্রক্রিয়া। যে লোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও এ ঘটনায় আলাদা তদন্ত করছে। কেউ এ ঘটনায় জড়িত কি না- তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর নির্ভর করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত বুধবার রাতে দক্ষিণখানে একটি ফার্মেসি থেকে বিজয় কৃষ্ণ তালুকদার নামে এক প্যারামেডিককে মডার্নার টিকার দুটি ভায়ালসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে মডার্নার টিকার দুটি বাক্সও উদ্ধার করা হয়।
বিজয় কৃষ্ণ দক্ষিণখানের চালাবন এলাকার হাজীপাড়ায় থাকেন। সেখানে তিনি ‘দরিদ্র পারিবারিক সেবা সংস্থা ক্লিনিক’ নামে একটি ক্লিনিক এবং ফার্মেসি পরিচালনা করেন। টাকার বিনিময়ে টিকা বিক্রির অভিযোগে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। দেশে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে, সরকারি ব্যবস্থাপনায়। বাংলাদেশ মর্ডানার টিকা পেয়েছে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে।
ওই টিকার ভায়াল বিজয় কৃষ্ণ তালুকদারের হাতে কীভাবে গেল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে স্বাস্থ্যের লোকজন জড়িত না হলে টিকার ভায়াল বাইরে এনে বিক্রি করা সম্ভব না বলেই তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা।
রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, নিবন্ধন করেও অনেকে টিকা পাচ্ছেন না। টিকার জট খুলতে কেন্দ্রগুলোতে বুথ বাড়ানো এবং প্রয়োজনে সাবসেন্টার করার নির্দেশনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে। “যারা নিবন্ধন করেছেন তারা সবাই ট্কিা পাবেন। দয়া করে এসএমএস না এলে কেউ টিকাদান কেন্দ্রে যাবেন না।”
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদসহ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
টিকার বুথ বাড়ানোর নির্দেশনা : করোনার টিকাদান কর্মসূচি নির্বিঘœ করতে দেশের প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে বুথ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কেন্দ্রগুলোতে বুথ বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের এরই মধ্যে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।
গতকাল রোববার বেলা ১১টায় রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে সাংবাদিকদের এই নির্দেশনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড়ের চিত্রের খবর আমাদের কাছে আসছে। টিকার এই জট খুলতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কেন্দ্রগুলোতে বুথ বাড়ানো এবং প্রয়োজনে সাবসেন্টার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করেছেন এমন অনেকেই এখনও টিকার জন্য অপেক্ষা করছেন। যাদের টিকার এসএমএস যেতে দেরি হচ্ছে তারাও দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকা পেয়ে যাবেন। এই প্রক্রিয়াটা আরও সহজ ও নির্বিঘœ করতে টিকাদান কেন্দ্রে বুথ সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা টিকার জন্য অপেক্ষা করেও টিকা নিতে পারছেন না, তাদেরকে ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে আমাদের প্রস্তুতি সব সময় থাকবে। কারণ, দেশে এখনও শনাক্তের হার ১৬ শতাংশের বেশি। করোনায় সবাইকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
টিকা বিক্রিতে স্বাস্থ্যের কেউ থাকলে ব্যবস্থা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ