ঢাকা ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টিকা কিনতে ৮ হাজার ৮৪ কোটি টাকা দেবে এডিবি

  • আপডেট সময় : ০৯:৪৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে


নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা সংকটেও চলতি অর্থবছরে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ শতাংশ। তবে সব চাবিকাঠি কোভিড-১৯ এর হাতে। টিকা কার্যক্রম জোরদার হলে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চাকা সচল থাকবে। বংলাদেশের জনগণের জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহে ঋণ ও অনুদান মিলে ৯৪ কোটি ডলার দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রতি ডলার সমান ৮৬ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৮৪ কোটি টাকা।
গতকাল বুধবার ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন সহায়তার বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের। এসময় বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এডিবি ইতোমধ্যেই ৬৫ কোটি ডলার ঋণ ও ৭ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে করোনা সংকট মোকাবিলায়। দুই কর্মসূচির আওতায় এডিবি আরো ৫০ কোটি ডলার দেবে এডিবি। এই ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া টিকা কর্মসূচির জন্য দেবে ৯৪ কোটি ডলার। ২০২১ থেকে ২০২৩ অর্থবছরে নানা প্রকল্পে ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারি সামাল দিতে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশে রপ্তানির গতি বাড়ায় প্রবৃদ্ধি বাড়বে। একই সঙ্গে সরকারের দেওয়া প্রণোদনার সুফল মেলার পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। আগামী অর্থবছরে আরও বেড়ে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেমিটেন্সের শক্তিশালী প্রবাহ অব্যাহত থাকায় ব্যক্তিখাতে ভোগব্যয় বাড়বে। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশের উন্নতি হলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগেও গতি আসবে। বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশেও ধীরে ধীরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ধারায় ফিরবে। অঞ্চল হিসেবে এবছর দক্ষিণ এশিয়ার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া সবচেয়ে দ্রুত হবে।
‘২০২০ সালে যেখানে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ৬ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিল, এবার তা ৯ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়বে। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ ভারত যদিও মহামারিতে নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারপরও এবছর সেখানে ১১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। গতবছর ভারতের অর্থনীতি ৮ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল।
প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছর মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে, যা গত অর্থবছর ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, চলতি অর্থবছর ৬ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে করোনার দ্বিতীয় ঢেওয়ের উপর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের চাপে এটি পাঁচ দশমিক পাঁচ থেকে পাঁচ দশমিক আট শতাংশও হতে পারে। করোনার ভ্যাকসিন সংকটের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক কোম্পানির সক্ষমতা রয়েছে। তাই দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে জোর দিতে হবে।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসুকি সোয়াদা বলেন, ভারত যে গতিতে টিকাদান চালিয়ে নিচ্ছে, তাতে আগস্টের মধ্যে সেখানে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে ২০২২ সালেই হয়তো ভারত ‘হার্ড ইমিউনিটিতে’ পৌঁছে যাবে। এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর গতি যতটা হবে বলে আগে ভাবা হয়েছিল, এবছর তার চেয়ে বেশি হবেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে বাড়লে এবং টিকাদানের গতি কাক্সিক্ষত মাত্রায় বাড়ানো না গেলে অঞ্চলিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গতি বাড়ানো কঠিন হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

টিকা কিনতে ৮ হাজার ৮৪ কোটি টাকা দেবে এডিবি

আপডেট সময় : ০৯:৪৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১


নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা সংকটেও চলতি অর্থবছরে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ শতাংশ। তবে সব চাবিকাঠি কোভিড-১৯ এর হাতে। টিকা কার্যক্রম জোরদার হলে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চাকা সচল থাকবে। বংলাদেশের জনগণের জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহে ঋণ ও অনুদান মিলে ৯৪ কোটি ডলার দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রতি ডলার সমান ৮৬ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৮৪ কোটি টাকা।
গতকাল বুধবার ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন সহায়তার বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের। এসময় বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এডিবি ইতোমধ্যেই ৬৫ কোটি ডলার ঋণ ও ৭ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে করোনা সংকট মোকাবিলায়। দুই কর্মসূচির আওতায় এডিবি আরো ৫০ কোটি ডলার দেবে এডিবি। এই ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া টিকা কর্মসূচির জন্য দেবে ৯৪ কোটি ডলার। ২০২১ থেকে ২০২৩ অর্থবছরে নানা প্রকল্পে ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারি সামাল দিতে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশে রপ্তানির গতি বাড়ায় প্রবৃদ্ধি বাড়বে। একই সঙ্গে সরকারের দেওয়া প্রণোদনার সুফল মেলার পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। আগামী অর্থবছরে আরও বেড়ে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেমিটেন্সের শক্তিশালী প্রবাহ অব্যাহত থাকায় ব্যক্তিখাতে ভোগব্যয় বাড়বে। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশের উন্নতি হলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগেও গতি আসবে। বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশেও ধীরে ধীরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ধারায় ফিরবে। অঞ্চল হিসেবে এবছর দক্ষিণ এশিয়ার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া সবচেয়ে দ্রুত হবে।
‘২০২০ সালে যেখানে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ৬ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিল, এবার তা ৯ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়বে। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ ভারত যদিও মহামারিতে নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারপরও এবছর সেখানে ১১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। গতবছর ভারতের অর্থনীতি ৮ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল।
প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছর মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে, যা গত অর্থবছর ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, চলতি অর্থবছর ৬ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে করোনার দ্বিতীয় ঢেওয়ের উপর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের চাপে এটি পাঁচ দশমিক পাঁচ থেকে পাঁচ দশমিক আট শতাংশও হতে পারে। করোনার ভ্যাকসিন সংকটের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক কোম্পানির সক্ষমতা রয়েছে। তাই দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে জোর দিতে হবে।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসুকি সোয়াদা বলেন, ভারত যে গতিতে টিকাদান চালিয়ে নিচ্ছে, তাতে আগস্টের মধ্যে সেখানে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে ২০২২ সালেই হয়তো ভারত ‘হার্ড ইমিউনিটিতে’ পৌঁছে যাবে। এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর গতি যতটা হবে বলে আগে ভাবা হয়েছিল, এবছর তার চেয়ে বেশি হবেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে বাড়লে এবং টিকাদানের গতি কাক্সিক্ষত মাত্রায় বাড়ানো না গেলে অঞ্চলিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গতি বাড়ানো কঠিন হবে।