ঢাকা ০৩:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

টিকায় থামবে ওমিক্রন?

  • আপডেট সময় : ০২:০১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক জাগানো করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ এর বিরুদ্ধে বিদ্যমান কোভিড টিকা কতটা কার্যকর তা জানার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশেষজ্ঞরা এটুকু ধারণা করতে পারছেন যে এ ধরনটি আরও বেশি সংক্রামক এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। ওমিক্রনের সামনে টিকার প্রতিরোধ কতটা টিকবে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ফাইজার ও মডার্নার মত যেসব টিকা এমআরএনএ কৌশলে তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্য বদলে নেওয়ার সুযোগ থাকার কথা। ফাইজার ও মডার্নাও বলেছে, প্রয়োজনে টিকার প্রক্রিয়াগত দিকটি নতুন করে সাজানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরন বা ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত করার কথা জানান গত মঙ্গলবার।গবেষকরা করোনাভাইরাসের এই নতুন ভ্যারিয়েন্টকে চিহ্নিত করছেন বি.১.১.৫২৯ নামে। তবে আলোচনার সুবিধার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দিয়েছে ‘ওমিক্রন’। জাতিসংঘের এই সংস্থা ওমিক্রনকে তালিকাভুক্ত করেছে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে। করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি শনাক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করায় সারা বিশ্বে আতঙ্কের ঢেউ বইছে। বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে এর বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা করছে। সিয়াটলের ফ্রেড হাচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের জীববিজ্ঞানী জেসি ব্লুম বলেন, “এই ভ্যারিয়েন্ট কতটা ছড়াচ্ছে এবং টিকার ক্ষেত্রে কী করা প্রয়োজনটা, সে বিষয়ে সম্ভবত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমরা আরও ভালো একটা ধারণা পেয়ে যাব।”
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মডার্না ও ফাইজারের পাশাপাশি জনসন অ্যান্ড জনসন ইতোমধ্যে ওমিক্রনের কৃত্রিম একটি সংস্করণের বিরুদ্ধে তাদের টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার পরিকল্পনা করেছে। ফাইজারের মুখপাত্র জেরিকা পিটস বলেন, “ফাইজারের বিজ্ঞানীরা ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যমান টিকার পরিবর্তন করতে পারবে এবং নতুন ভ্যরিয়্যান্টের জন্য ১০০ দিনের মধ্যে টিকা সরবরাহ করতে পারবে।”
মডার্না বলছে, নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পরপরই গত মঙ্গলবার তাদের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ড. স্টিফেন হোগে দাবি করেন, এ ধরনটির বিরুদ্ধে তাদের কোম্পানি সবার আগে কাজ শুরু করেছে। করোনাভাইরাসের বহুবার রূপ বদল বা মিউটেশনের প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, “এটা একটা ফ্রাঙ্কেনস্টাইন। এটা আমাদের সতর্কতার সমস্ত ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে।”
স্টিফেন হোগে বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, তবে দুই মাসের মধ্যে মডার্না তার টিকার নতুন সংস্করণ আনতে পারবে এবং কার্যকারিতা পরীক্ষার ফল জানাতে পারবে তিন মাসের মধ্যে।
টিকার তৃতীয় ডোজ বা ‘বুস্টার ডোজ’ নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম কি না কোম্পানি দুটি সেটাও পরীক্ষা করার পরিকল্পানা করেছে। এর আগের ধরনগুলোর ক্ষেত্রে ফাইজার এবং মডার্নার টিকার বুস্টার ডোজ অ্যান্টিবডির মাত্রা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে দেখা গেছে। নিউ ইয়র্কের রকফেলার ইউনিভার্সিটির রোগতত্ত্ববিদ মাইকেল নুসেঞ্জভিগ জানান, তিনি এবং তার সহকর্মীরা ‘ওমিক্রন’ এর বিরুদ্ধে এমআরএনএ টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়া তারা জনসন অ্যান্ড জনসন এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পরীক্ষাও করবেন জানিয়ে এক মাসের মধ্যে ফলাফল পাওয়ার আশা জানিয়েছেন এই রোগতত্ত্ববিদ। তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ‘ওমিক্রন’ এর জন্য টিকা তৈরি করা গেলে, সেটা ‘অলৌকিক’ ব্যাপার হবে বলেও তার ভাষ্য। জীববিজ্ঞানী জেসি ব্লুম বলেন, ধারণার চেয়েও দ্রত গতিতে রূপ পাল্টাচ্ছে করোনাভাইরাস। তাই ‘ওমিক্রন’ এর বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকা কার্যকর হলেও নতুন সংস্করণের প্রয়োজন হতে পারে এবং সেটা খুব দ্রত।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

টিকায় থামবে ওমিক্রন?

আপডেট সময় : ০২:০১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক জাগানো করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ এর বিরুদ্ধে বিদ্যমান কোভিড টিকা কতটা কার্যকর তা জানার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশেষজ্ঞরা এটুকু ধারণা করতে পারছেন যে এ ধরনটি আরও বেশি সংক্রামক এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। ওমিক্রনের সামনে টিকার প্রতিরোধ কতটা টিকবে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ফাইজার ও মডার্নার মত যেসব টিকা এমআরএনএ কৌশলে তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্য বদলে নেওয়ার সুযোগ থাকার কথা। ফাইজার ও মডার্নাও বলেছে, প্রয়োজনে টিকার প্রক্রিয়াগত দিকটি নতুন করে সাজানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরন বা ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত করার কথা জানান গত মঙ্গলবার।গবেষকরা করোনাভাইরাসের এই নতুন ভ্যারিয়েন্টকে চিহ্নিত করছেন বি.১.১.৫২৯ নামে। তবে আলোচনার সুবিধার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দিয়েছে ‘ওমিক্রন’। জাতিসংঘের এই সংস্থা ওমিক্রনকে তালিকাভুক্ত করেছে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে। করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি শনাক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করায় সারা বিশ্বে আতঙ্কের ঢেউ বইছে। বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে এর বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা করছে। সিয়াটলের ফ্রেড হাচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের জীববিজ্ঞানী জেসি ব্লুম বলেন, “এই ভ্যারিয়েন্ট কতটা ছড়াচ্ছে এবং টিকার ক্ষেত্রে কী করা প্রয়োজনটা, সে বিষয়ে সম্ভবত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমরা আরও ভালো একটা ধারণা পেয়ে যাব।”
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মডার্না ও ফাইজারের পাশাপাশি জনসন অ্যান্ড জনসন ইতোমধ্যে ওমিক্রনের কৃত্রিম একটি সংস্করণের বিরুদ্ধে তাদের টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার পরিকল্পনা করেছে। ফাইজারের মুখপাত্র জেরিকা পিটস বলেন, “ফাইজারের বিজ্ঞানীরা ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যমান টিকার পরিবর্তন করতে পারবে এবং নতুন ভ্যরিয়্যান্টের জন্য ১০০ দিনের মধ্যে টিকা সরবরাহ করতে পারবে।”
মডার্না বলছে, নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পরপরই গত মঙ্গলবার তাদের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ড. স্টিফেন হোগে দাবি করেন, এ ধরনটির বিরুদ্ধে তাদের কোম্পানি সবার আগে কাজ শুরু করেছে। করোনাভাইরাসের বহুবার রূপ বদল বা মিউটেশনের প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, “এটা একটা ফ্রাঙ্কেনস্টাইন। এটা আমাদের সতর্কতার সমস্ত ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে।”
স্টিফেন হোগে বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, তবে দুই মাসের মধ্যে মডার্না তার টিকার নতুন সংস্করণ আনতে পারবে এবং কার্যকারিতা পরীক্ষার ফল জানাতে পারবে তিন মাসের মধ্যে।
টিকার তৃতীয় ডোজ বা ‘বুস্টার ডোজ’ নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম কি না কোম্পানি দুটি সেটাও পরীক্ষা করার পরিকল্পানা করেছে। এর আগের ধরনগুলোর ক্ষেত্রে ফাইজার এবং মডার্নার টিকার বুস্টার ডোজ অ্যান্টিবডির মাত্রা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে দেখা গেছে। নিউ ইয়র্কের রকফেলার ইউনিভার্সিটির রোগতত্ত্ববিদ মাইকেল নুসেঞ্জভিগ জানান, তিনি এবং তার সহকর্মীরা ‘ওমিক্রন’ এর বিরুদ্ধে এমআরএনএ টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়া তারা জনসন অ্যান্ড জনসন এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পরীক্ষাও করবেন জানিয়ে এক মাসের মধ্যে ফলাফল পাওয়ার আশা জানিয়েছেন এই রোগতত্ত্ববিদ। তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ‘ওমিক্রন’ এর জন্য টিকা তৈরি করা গেলে, সেটা ‘অলৌকিক’ ব্যাপার হবে বলেও তার ভাষ্য। জীববিজ্ঞানী জেসি ব্লুম বলেন, ধারণার চেয়েও দ্রত গতিতে রূপ পাল্টাচ্ছে করোনাভাইরাস। তাই ‘ওমিক্রন’ এর বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকা কার্যকর হলেও নতুন সংস্করণের প্রয়োজন হতে পারে এবং সেটা খুব দ্রত।