ঢাকা ০৩:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

টিউলিপ বাংলাদেশি নাগরিক, এখানে এসে মামলা মোকাবিলা করতে হবে: দুদক চেয়ারম্যান

  • আপডেট সময় : ০৮:১০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমাদের কাছে তার বাংলাদেশি এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। তার যে টিআইএন বা ইনকাম ট্যাক্স সার্টিফিকেট সেটা বাংলাদেশের। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে এনবিআরে আয়কর রিটার্নও দাখিল করেছেন। এমন একজন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা আমরাই মোকাবিলা করবো। সেই অভিযোগ তো বাংলাদেশেই দাখিল করবো, নাকি তার বিরুদ্ধে ব্রিটেনে গিয়ে আমরা দাখিল করবো যে এটা ব্রিটেনের মামলা! এটা বাংলাদেশের মামলা। আমরা বাংলাদেশেই করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, টিউলিপ সিদ্দিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি যেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আমাদের বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক সেটা মোকাবিলা করবেন। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এক ব্রিফিংয়ে দুদক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবীর একটি চিঠি পেয়েছি। সেটা মেইল থেকে ডাউনলোড করেছি। সেই চিঠির তথ্য সংবাদ মাধ্যমে বেশ ভালোভাবেই এসেছে। সেখানে বেশ মজার মজার কথা আছে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে দুদক কিংবা বাংলাদেশ কি ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে কিনা। তিনি বলেন, আমার একটা প্রশ্ন- টিউলিপ সিদ্দিকের কেসটা কী এমনই কোনও কেস, যেটা ব্রিটেনের ভঙ্গুর রাজনীতিকে আরও ভঙ্গুর করে তুলবে? আমার মনে হয় এটা আমরা অন্যভাবে দেখতে পারি।’

দুদক চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি তিন বছরের বেশি সময় ব্রিটেনের লন্ডনে কাটিয়েছি। আমি যদি লন্ডনে অপরাধ করে থাকি এবং পালিয়ে হোক আর যেভাবে হোক পরে আমি বাংলাদেশে চলে আসলাম। লন্ডনে যদি একটা মামলা হয় আমার বিরুদ্ধে সেখানে মামলাটা মোকাবিলা করার জন্য কী লন্ডনের কোর্ট ও অ্যান্টি-করাপশন, পুলিশ সবাই কি তাদের দেশ থেকে বাংলাদেশে চলে আসবে? নাকি আমার কাজ হচ্ছে সেখানে গিয়ে সেই মামলার মোকাবিলা করা। অবশ্য এখানে বলা যে আমি অপরাধী নই। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আসছে সেগুলো সঠিক না। কিন্তু এখন এসব চিঠিপত্র পেয়ে যেটা মনে হচ্ছে সম্ভবত চিঠিপত্রের মাধ্যমে আমরা মামলা-মোকদ্দমা নিষ্পত্তি করবো। এটা হওয়ার কথা নয়। কোর্টে যদি মামলা হয় সেটা সে কোর্টে মোকাবিলা করবে। অভিযোগগুলো প্রমাণিত এখনও আমরা বলবো না। সে অভিযোগগুলো কোর্টে প্রমাণিত হবে। সেক্ষেত্রে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার দায়িত্ব হচ্ছে কোর্টে হাজির হয়ে সেটা মোকাবিলা করা।’

তিনি বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষেত্রেও তাই। আমরা একাধিকবার বলেছি যে এটা কোনও রাজনৈতিক মামলা নয়। এটা কোনও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা নয়। কাউকে ছোট করার জন্য মামলা নয়। আমাদের অনেক আসামির মতো টিউলিপ সিদ্দিকও আমাদের একজন অভিযুক্ত আসামি। এর চেয়ে অনেক বড় বড় মামলা আছে দুদকের। এটা যে খুব বড় মামলা সেটা মনে করারও কোনও কারণ নাই।

দুদক চেয়ারম্যান পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, এমন কী হয় যে আপনি চিঠি লিখে বললেন আপনি যদি সাতদিনের মধ্যে জবাব না দেন তাহলে বুঝে নেবো মামলা শেষ। আমাদের দেশের একজন খুনি খুন করে পালিয়ে গেলো। পলাতক অবস্থা থেকে চিঠি দিয়ে বললো যে সাত দিনের মধ্যে যদি জবাব না দেন তাহলে ধরে নেবো মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছি। এটা হতে পারে কখনও? এটা অবশ্যই হাস্যকর।’

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ- সাংবাদিকের এমন এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমারও প্রশ্ন সেটাই। ব্রিটেনের রাজনীতি কী এতই ভঙ্গুর? যদি আমি তাকে ব্রিটেনের নাগরিকও ধরে নেই তাহলে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা হলো আর তাতেই ব্রিটেনের রাজনীতি ও সরকার ধসে পড়বে? এটা কী হতে পারে। তিনি বলেন, যখন এসব শব্দ চয়ন করেন আইনজীবীরা, তারাও সঠিক শব্দ চয়নটা যেন করে। তারা নিজেদের দেশকে ছোট করছেন। তারা নিজেরা প্রমাণ করছেন যে ব্রিটেনের রাজনীতি ভঙ্গুর। আমাদের হস্তক্ষেপ করার কী আছে। আমাদের যে কার্যপরিধি, এতে তো আমাদের রাজনীতিতে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা আমাদের একজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টিউলিপ শুরু থেকেই দুদকের কার্যক্রম সম্পর্কে জানেন। যে কারণে তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে চলে যেতে হয়েছে। এখন হয়তো তিনি আশঙ্কিত যে আরও কিছু ঘটে কিনা। আমরা নিশ্চয়ই সেটা প্রত্যাশা করবো না। আমরা প্রত্যাশা করবো ন্যায়বিচারের। আমরা ন্যায়বিচার চাই। তাকেও ন্যায়বিচার দিতে চাই। আমরা মামলাটা কোর্টে করেছি। বিশ্বাস করি তিনি এসে সেটা মোকাবিলা করবেন। আর যদি না আসেন তাহলে তার অনুপস্থিতে বিচার হবে। সব মামলাতে তো সব আসামি হাজির থাকেন না। সেভাবে সেটার বিচার হবে। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবার বা স্বজন টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তিনটা মামলা হয়েছে। আরও একটি মামলার তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, দুদকে রাজনৈতিক মামলা হওয়ার কোনও সুযোগ নাই। দুদক কাজ করে মূলত পেপার বেজড কাজ। আমার হাতে যদি ডকুমেন্ট থাকে, কাগজপত্র থাকে এবং সেই কাগজপত্রে যদি গরমিল পাই তখনই মামলা হয়। তার আগে কিন্তু মামলা হওয়ার কোনও সুযোগ নাই। এটা শুধু টিউলিপ সিদ্দিক নন, অন্য যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সবার ক্ষেত্রেই একইভাবে হয়েছে।’

টিউলিপ সিদ্দিককে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘যখন আদালতের সমন বা ওয়ারেন্ট পাওয়া একজন আসামি হাজির না হবেন তখন তার স্ট্যাটাস হচ্ছে তিনি পলাতক। সেক্ষেত্রে পলাতকদের ধরার জন্য কতগুলো স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি আছে। ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া যেতে পারে। ইন্টারপোল নিজেরা অ্যারেস্ট করে না। তারা তাদের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করবো যে শুধু টিউলিপ সিদ্দিক নয়, তার মতো আরও যারা আছেন, যাদের মামলা অন্তত দুদকে আছে সেগুলো এসে তারা নিজেরা এসে মোকাবিলা করবে।’

টিউলিপ সিদ্দিক দুদককে তিনবার চিঠি দিয়েছেন, কিন্তু দুদক তার চিঠির কোনও সাড়া দেয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা প্রথমেই টিউলিপ সিদ্দিককে জানিয়ে দিয়েছি যে আমাদের আদালতের প্রক্রিয়াটা হচ্ছে আপনাকে নিজে এসে মোকাবিলা করতে হবে। আপনি আসতে পারেন কিংবা আপনার আইনজীবী আসতে পারেন। কাজেই তিনি এটা অবহিত। যা ঘটছে তিনি সবই জানেন। তিনি কিছু জানেন না এটার বলার সুযোগ একদমই নাই।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

টিউলিপ বাংলাদেশি নাগরিক, এখানে এসে মামলা মোকাবিলা করতে হবে: দুদক চেয়ারম্যান

আপডেট সময় : ০৮:১০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমাদের কাছে তার বাংলাদেশি এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। তার যে টিআইএন বা ইনকাম ট্যাক্স সার্টিফিকেট সেটা বাংলাদেশের। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে এনবিআরে আয়কর রিটার্নও দাখিল করেছেন। এমন একজন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা আমরাই মোকাবিলা করবো। সেই অভিযোগ তো বাংলাদেশেই দাখিল করবো, নাকি তার বিরুদ্ধে ব্রিটেনে গিয়ে আমরা দাখিল করবো যে এটা ব্রিটেনের মামলা! এটা বাংলাদেশের মামলা। আমরা বাংলাদেশেই করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, টিউলিপ সিদ্দিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি যেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আমাদের বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক সেটা মোকাবিলা করবেন। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এক ব্রিফিংয়ে দুদক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবীর একটি চিঠি পেয়েছি। সেটা মেইল থেকে ডাউনলোড করেছি। সেই চিঠির তথ্য সংবাদ মাধ্যমে বেশ ভালোভাবেই এসেছে। সেখানে বেশ মজার মজার কথা আছে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে দুদক কিংবা বাংলাদেশ কি ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে কিনা। তিনি বলেন, আমার একটা প্রশ্ন- টিউলিপ সিদ্দিকের কেসটা কী এমনই কোনও কেস, যেটা ব্রিটেনের ভঙ্গুর রাজনীতিকে আরও ভঙ্গুর করে তুলবে? আমার মনে হয় এটা আমরা অন্যভাবে দেখতে পারি।’

দুদক চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি তিন বছরের বেশি সময় ব্রিটেনের লন্ডনে কাটিয়েছি। আমি যদি লন্ডনে অপরাধ করে থাকি এবং পালিয়ে হোক আর যেভাবে হোক পরে আমি বাংলাদেশে চলে আসলাম। লন্ডনে যদি একটা মামলা হয় আমার বিরুদ্ধে সেখানে মামলাটা মোকাবিলা করার জন্য কী লন্ডনের কোর্ট ও অ্যান্টি-করাপশন, পুলিশ সবাই কি তাদের দেশ থেকে বাংলাদেশে চলে আসবে? নাকি আমার কাজ হচ্ছে সেখানে গিয়ে সেই মামলার মোকাবিলা করা। অবশ্য এখানে বলা যে আমি অপরাধী নই। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আসছে সেগুলো সঠিক না। কিন্তু এখন এসব চিঠিপত্র পেয়ে যেটা মনে হচ্ছে সম্ভবত চিঠিপত্রের মাধ্যমে আমরা মামলা-মোকদ্দমা নিষ্পত্তি করবো। এটা হওয়ার কথা নয়। কোর্টে যদি মামলা হয় সেটা সে কোর্টে মোকাবিলা করবে। অভিযোগগুলো প্রমাণিত এখনও আমরা বলবো না। সে অভিযোগগুলো কোর্টে প্রমাণিত হবে। সেক্ষেত্রে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার দায়িত্ব হচ্ছে কোর্টে হাজির হয়ে সেটা মোকাবিলা করা।’

তিনি বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষেত্রেও তাই। আমরা একাধিকবার বলেছি যে এটা কোনও রাজনৈতিক মামলা নয়। এটা কোনও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা নয়। কাউকে ছোট করার জন্য মামলা নয়। আমাদের অনেক আসামির মতো টিউলিপ সিদ্দিকও আমাদের একজন অভিযুক্ত আসামি। এর চেয়ে অনেক বড় বড় মামলা আছে দুদকের। এটা যে খুব বড় মামলা সেটা মনে করারও কোনও কারণ নাই।

দুদক চেয়ারম্যান পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, এমন কী হয় যে আপনি চিঠি লিখে বললেন আপনি যদি সাতদিনের মধ্যে জবাব না দেন তাহলে বুঝে নেবো মামলা শেষ। আমাদের দেশের একজন খুনি খুন করে পালিয়ে গেলো। পলাতক অবস্থা থেকে চিঠি দিয়ে বললো যে সাত দিনের মধ্যে যদি জবাব না দেন তাহলে ধরে নেবো মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছি। এটা হতে পারে কখনও? এটা অবশ্যই হাস্যকর।’

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ- সাংবাদিকের এমন এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমারও প্রশ্ন সেটাই। ব্রিটেনের রাজনীতি কী এতই ভঙ্গুর? যদি আমি তাকে ব্রিটেনের নাগরিকও ধরে নেই তাহলে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা হলো আর তাতেই ব্রিটেনের রাজনীতি ও সরকার ধসে পড়বে? এটা কী হতে পারে। তিনি বলেন, যখন এসব শব্দ চয়ন করেন আইনজীবীরা, তারাও সঠিক শব্দ চয়নটা যেন করে। তারা নিজেদের দেশকে ছোট করছেন। তারা নিজেরা প্রমাণ করছেন যে ব্রিটেনের রাজনীতি ভঙ্গুর। আমাদের হস্তক্ষেপ করার কী আছে। আমাদের যে কার্যপরিধি, এতে তো আমাদের রাজনীতিতে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা আমাদের একজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টিউলিপ শুরু থেকেই দুদকের কার্যক্রম সম্পর্কে জানেন। যে কারণে তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে চলে যেতে হয়েছে। এখন হয়তো তিনি আশঙ্কিত যে আরও কিছু ঘটে কিনা। আমরা নিশ্চয়ই সেটা প্রত্যাশা করবো না। আমরা প্রত্যাশা করবো ন্যায়বিচারের। আমরা ন্যায়বিচার চাই। তাকেও ন্যায়বিচার দিতে চাই। আমরা মামলাটা কোর্টে করেছি। বিশ্বাস করি তিনি এসে সেটা মোকাবিলা করবেন। আর যদি না আসেন তাহলে তার অনুপস্থিতে বিচার হবে। সব মামলাতে তো সব আসামি হাজির থাকেন না। সেভাবে সেটার বিচার হবে। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবার বা স্বজন টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তিনটা মামলা হয়েছে। আরও একটি মামলার তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, দুদকে রাজনৈতিক মামলা হওয়ার কোনও সুযোগ নাই। দুদক কাজ করে মূলত পেপার বেজড কাজ। আমার হাতে যদি ডকুমেন্ট থাকে, কাগজপত্র থাকে এবং সেই কাগজপত্রে যদি গরমিল পাই তখনই মামলা হয়। তার আগে কিন্তু মামলা হওয়ার কোনও সুযোগ নাই। এটা শুধু টিউলিপ সিদ্দিক নন, অন্য যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সবার ক্ষেত্রেই একইভাবে হয়েছে।’

টিউলিপ সিদ্দিককে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘যখন আদালতের সমন বা ওয়ারেন্ট পাওয়া একজন আসামি হাজির না হবেন তখন তার স্ট্যাটাস হচ্ছে তিনি পলাতক। সেক্ষেত্রে পলাতকদের ধরার জন্য কতগুলো স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি আছে। ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া যেতে পারে। ইন্টারপোল নিজেরা অ্যারেস্ট করে না। তারা তাদের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করবো যে শুধু টিউলিপ সিদ্দিক নয়, তার মতো আরও যারা আছেন, যাদের মামলা অন্তত দুদকে আছে সেগুলো এসে তারা নিজেরা এসে মোকাবিলা করবে।’

টিউলিপ সিদ্দিক দুদককে তিনবার চিঠি দিয়েছেন, কিন্তু দুদক তার চিঠির কোনও সাড়া দেয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা প্রথমেই টিউলিপ সিদ্দিককে জানিয়ে দিয়েছি যে আমাদের আদালতের প্রক্রিয়াটা হচ্ছে আপনাকে নিজে এসে মোকাবিলা করতে হবে। আপনি আসতে পারেন কিংবা আপনার আইনজীবী আসতে পারেন। কাজেই তিনি এটা অবহিত। যা ঘটছে তিনি সবই জানেন। তিনি কিছু জানেন না এটার বলার সুযোগ একদমই নাই।’