ঢাকা ০৮:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

টাকা নিয়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে নামিয়ে দেওয়া হতো সেন্ট মার্টিনে

  • আপডেট সময় : ০১:৩০:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২
  • ১০৯ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : টাকা নিয়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে ট্রলারে তোলা হতো অসহায় লোকদের। পরে তাঁদের কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নামিয়ে দিত চক্রটি। সেখানে চক্রের কাউকে খুঁজে না পেয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যেতেন ভুক্তভোগীরা। মানব পাচারকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব। গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন মো. ইসমাইল, শফিউল আলম, রিয়াজ খান, মো. হোসেন ও ইউনুস মাঝি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে গত রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৭।
র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, চক্রের অন্যতম হোতা ইসমাইল ও শফিউল। তাঁরা দুজন ভাই। দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সাতটি করে মানব পাচার আইনে মামলা রয়েছে। চক্রটি কক্সবাজারের পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার দরিদ্র লোকজনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। পরে তাঁদের ট্রলারে তুলে দেয়। তাঁদের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে সই নেওয়া হয় এর আগে। ট্রলারে তোলার আগে পাসপোর্টগুলো নিয়ে নেওয়া হয়। মালয়েশিয়া পৌঁছার পর পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু তাঁদের মালয়েশিয়া না নিয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নামিয়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদীন জানান, গ্রেপ্তার রিয়াজ খানের কাছে পাসপোর্ট তৈরির জন্য যান। তখন তাঁকে কম খরচে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলেন রিয়াজ। পাসপোর্ট তৈরির জন্য ১৫ হাজার টাকা নেন। পরে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য এক লাখ টাকা দেন। তাঁর মতো আরও ১৫ থেকে ২০ জনের কাছ থেকে টাকা নেয় চক্রটি। পরে তাঁদের পেকুয়ার একটি ঘাট থেকে মালয়েশিয়া নেওয়ার জন্য একটি ট্রলারে তোলা হয়। পরে তাঁদের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নামিয়ে দেওয়া হয়। ভয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা করারও সাহস পাননি।
র‌্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার আরও বলেন, বিদেশেও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে চক্রটি। গ্রেপ্তার আসামি হোসেনের ছেলে মো. এমরান মোজাম্বিকে চাঁদা আদায় করেন। ভুক্তভোগী মোক্তার আলী চক্রটির মাধ্যমে মোজাম্বিক যান। সেখানে এমরান মোক্তারের কাছে ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তাঁকে আটকে রাখেন। ওই টাকা বাংলাদেশে তাঁর বাবা হোসেনকে দেওয়ার জন্য বলেন। বাধ্য হয়ে হোসেনের হাতে ওই টাকা তুলে দেয় মোক্তারের পরিবার। গ্রেপ্তার আসামিরা দরিদ্র লোকজনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে থাকা তাঁদের চক্রের সদস্য মুক্তিপণ হিসেবে টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

টাকা নিয়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে নামিয়ে দেওয়া হতো সেন্ট মার্টিনে

আপডেট সময় : ০১:৩০:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : টাকা নিয়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে ট্রলারে তোলা হতো অসহায় লোকদের। পরে তাঁদের কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নামিয়ে দিত চক্রটি। সেখানে চক্রের কাউকে খুঁজে না পেয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যেতেন ভুক্তভোগীরা। মানব পাচারকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব। গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন মো. ইসমাইল, শফিউল আলম, রিয়াজ খান, মো. হোসেন ও ইউনুস মাঝি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে গত রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৭।
র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, চক্রের অন্যতম হোতা ইসমাইল ও শফিউল। তাঁরা দুজন ভাই। দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সাতটি করে মানব পাচার আইনে মামলা রয়েছে। চক্রটি কক্সবাজারের পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার দরিদ্র লোকজনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। পরে তাঁদের ট্রলারে তুলে দেয়। তাঁদের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে সই নেওয়া হয় এর আগে। ট্রলারে তোলার আগে পাসপোর্টগুলো নিয়ে নেওয়া হয়। মালয়েশিয়া পৌঁছার পর পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু তাঁদের মালয়েশিয়া না নিয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নামিয়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদীন জানান, গ্রেপ্তার রিয়াজ খানের কাছে পাসপোর্ট তৈরির জন্য যান। তখন তাঁকে কম খরচে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলেন রিয়াজ। পাসপোর্ট তৈরির জন্য ১৫ হাজার টাকা নেন। পরে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য এক লাখ টাকা দেন। তাঁর মতো আরও ১৫ থেকে ২০ জনের কাছ থেকে টাকা নেয় চক্রটি। পরে তাঁদের পেকুয়ার একটি ঘাট থেকে মালয়েশিয়া নেওয়ার জন্য একটি ট্রলারে তোলা হয়। পরে তাঁদের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নামিয়ে দেওয়া হয়। ভয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা করারও সাহস পাননি।
র‌্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার আরও বলেন, বিদেশেও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে চক্রটি। গ্রেপ্তার আসামি হোসেনের ছেলে মো. এমরান মোজাম্বিকে চাঁদা আদায় করেন। ভুক্তভোগী মোক্তার আলী চক্রটির মাধ্যমে মোজাম্বিক যান। সেখানে এমরান মোক্তারের কাছে ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তাঁকে আটকে রাখেন। ওই টাকা বাংলাদেশে তাঁর বাবা হোসেনকে দেওয়ার জন্য বলেন। বাধ্য হয়ে হোসেনের হাতে ওই টাকা তুলে দেয় মোক্তারের পরিবার। গ্রেপ্তার আসামিরা দরিদ্র লোকজনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে থাকা তাঁদের চক্রের সদস্য মুক্তিপণ হিসেবে টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন।