ঢাকা ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেতনা সমবায় সমিতির দুই কর্তা আটক

  • আপডেট সময় : ০১:১৯:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২
  • ১১২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ডিপিএস’ ও ‘এফডিআর’সহ বিভিন্ন সঞ্চয়ী প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে “চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড” নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
গতকাল সোমবার ভোরে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাব- ৪ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় গ্রেপ্তার দুইজন হচ্ছে, চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি জাকির হোসেন (৫৪) এবং এই প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান (৪২)। সমবায় সমিতির অনুমতি নিয়ে কাজ করলেও ‘চটকদার মুনাফার’ লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন সঞ্চয়ী প্রকল্প যেমন- ডিপিএস, এফডিআর, পেনশন পলিসি, প্রজেক্টে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষদের বেশি মুনাফা দেওয়ার লোভে বিনিয়োগ করার কথা বলতেন জাকির ও মশিউর। র‌্যাব বলছে, সমবায় সমিতির অনুমতি নিয়ে কাজ করলেও ‘চটকদার মুনাফার’ লোভ দেখিয়ে ডিপিএস, এফডিআর, পেনশন পলিসির মত সঞ্চয়ী প্রকল্পে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষদের কাছ থেকে বিনিয়োগ নিচ্ছিল চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি।
মধ্যবিত্ত, পোশাককমী, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, অটোচালক, সবজি ব্যবসায়ী, ফল ব্যবসায়ী, গৃহকর্মী ও নি¤œআয়ের মানুষ ছিল চক্রের ‘টার্গেট’।
পাশাপাশি অবস্থাপন্ন গ্রাহকদের তারা রাজধানীকে ফ্ল্যাট, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্কুল এবং হোটেলে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিত বলে র‌্যাবের ভাষ্য।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেশি মুনাফার লোভে অনেকে পেনশনের টাকা, বিদেশ থেকে স্বজনের পাঠান টাকা, গ্রামের ভিটেবাড়ি বিক্রি করে পাওয়া অর্থ বিনিয়োগ করেছেন এই সমিতিতে। এরকম পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে তদন্তে নামে র‌্যাব। অনুসন্ধানে জানা যায়, সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রাহকদের বিনিয়োগের ‘কোটি কোটি টাকা’ আত্মসাত করেছেন।
র‌্যাব বলছে, “বেশিরভাগ মানুষ এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে শুরুতে লভ্যাংশ পেলেও পরে তা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মূল টাকা ফেরত দেওয়ার তাগাদা দিলেও তারা সেটা পাননি।”
প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সমিতির কর্মকর্তারা কার্যালয়ে তালা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরে র‌্যাবের অভিযানে তারা গ্রেপ্তার হন। জাকির ও মশিউর ‘টাকা আত্মসাত করে’ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের নামে জমি কিনে সেখানে ছোট বড় প্রতিষ্ঠান করার কথা র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
র‌্যাব জানিয়েছে, “গ্রেপ্তারের পর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক জানান, এই প্রতিষ্ঠানের নামে বর্তমানে মিরপুরের ৬০ ফুট এলাকায় চেতনা টাওয়ারে চারটি ফ্ল্যাট, বর্তমান অফিস চেতনা কুটিরে তিনটি ফ্লোর, রূপনগরে একটি ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরে একটি ফ্ল্যাট, মিরপুর-১০ এ একটি দোকান, চেতনা মডেল একাডেমি এবং চেতনা ডায়াগনস্টিক রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ৩০ কোটি টাকার মত। “তবে কক্সবাজারে ব্লু বারশি নামে একটি হোটেলের কথা কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই বলে গ্রেপ্তার দুজন জানিয়েছে।“ ঢাকা জেলার সমবায় কর্মকর্তার অডিট অনুযায়ী গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই সমিতির তহবিলে মাত্র ৫৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে এবং ৭০ কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেতনা সমবায় সমিতির দুই কর্তা আটক

আপডেট সময় : ০১:১৯:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ডিপিএস’ ও ‘এফডিআর’সহ বিভিন্ন সঞ্চয়ী প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে “চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড” নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
গতকাল সোমবার ভোরে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাব- ৪ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় গ্রেপ্তার দুইজন হচ্ছে, চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি জাকির হোসেন (৫৪) এবং এই প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান (৪২)। সমবায় সমিতির অনুমতি নিয়ে কাজ করলেও ‘চটকদার মুনাফার’ লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন সঞ্চয়ী প্রকল্প যেমন- ডিপিএস, এফডিআর, পেনশন পলিসি, প্রজেক্টে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষদের বেশি মুনাফা দেওয়ার লোভে বিনিয়োগ করার কথা বলতেন জাকির ও মশিউর। র‌্যাব বলছে, সমবায় সমিতির অনুমতি নিয়ে কাজ করলেও ‘চটকদার মুনাফার’ লোভ দেখিয়ে ডিপিএস, এফডিআর, পেনশন পলিসির মত সঞ্চয়ী প্রকল্পে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষদের কাছ থেকে বিনিয়োগ নিচ্ছিল চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি।
মধ্যবিত্ত, পোশাককমী, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, অটোচালক, সবজি ব্যবসায়ী, ফল ব্যবসায়ী, গৃহকর্মী ও নি¤œআয়ের মানুষ ছিল চক্রের ‘টার্গেট’।
পাশাপাশি অবস্থাপন্ন গ্রাহকদের তারা রাজধানীকে ফ্ল্যাট, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্কুল এবং হোটেলে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিত বলে র‌্যাবের ভাষ্য।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেশি মুনাফার লোভে অনেকে পেনশনের টাকা, বিদেশ থেকে স্বজনের পাঠান টাকা, গ্রামের ভিটেবাড়ি বিক্রি করে পাওয়া অর্থ বিনিয়োগ করেছেন এই সমিতিতে। এরকম পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে তদন্তে নামে র‌্যাব। অনুসন্ধানে জানা যায়, সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রাহকদের বিনিয়োগের ‘কোটি কোটি টাকা’ আত্মসাত করেছেন।
র‌্যাব বলছে, “বেশিরভাগ মানুষ এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে শুরুতে লভ্যাংশ পেলেও পরে তা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মূল টাকা ফেরত দেওয়ার তাগাদা দিলেও তারা সেটা পাননি।”
প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সমিতির কর্মকর্তারা কার্যালয়ে তালা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরে র‌্যাবের অভিযানে তারা গ্রেপ্তার হন। জাকির ও মশিউর ‘টাকা আত্মসাত করে’ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের নামে জমি কিনে সেখানে ছোট বড় প্রতিষ্ঠান করার কথা র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বলে জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
র‌্যাব জানিয়েছে, “গ্রেপ্তারের পর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক জানান, এই প্রতিষ্ঠানের নামে বর্তমানে মিরপুরের ৬০ ফুট এলাকায় চেতনা টাওয়ারে চারটি ফ্ল্যাট, বর্তমান অফিস চেতনা কুটিরে তিনটি ফ্লোর, রূপনগরে একটি ফ্ল্যাট, মোহাম্মদপুরে একটি ফ্ল্যাট, মিরপুর-১০ এ একটি দোকান, চেতনা মডেল একাডেমি এবং চেতনা ডায়াগনস্টিক রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ৩০ কোটি টাকার মত। “তবে কক্সবাজারে ব্লু বারশি নামে একটি হোটেলের কথা কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই বলে গ্রেপ্তার দুজন জানিয়েছে।“ ঢাকা জেলার সমবায় কর্মকর্তার অডিট অনুযায়ী গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই সমিতির তহবিলে মাত্র ৫৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে এবং ৭০ কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে।