কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : মাত্র ১৫ মিনিটের কাল বৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কুষ্টিয়ার বেশ কয়েকটি গ্রাম। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে শুরু হয় কাল বৈশাখী। ঝড়ের প্রকোপে উড়ে গেছে শত শত ঘরের টিনের চালা। উপড়ে গেছে অনেক গাছ। গাছের ডাল পড়ে খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঝড়ের তান্ডবে শত শত গাছপালা ভেঙে রাস্তায় পড়ে আছে। শত শত হেক্টর জমির আম, কাঁঠাল, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গাছ ভেঙে রেল লাইনের ওপর পড়ায় পোড়াদহ-খুলনা রুটে প্রায় ৫ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। একই কারণে প্রায় ৭ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কে। মিরপুর উপজেলার সদরপুর গ্রামের কৃষক শাহজাহান বলেন, কলা ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বেশির ভাগ গাছ উপড়ে গেছে। আমলা এলাকার আম বাগানের মালিক আব্দুল কাদের বলেন, বাগানের সব আম ঝড়ে পড়ে গেছে। এক সপ্তাহ পর থেকে আম পাড়া শুরু হতো। কিন্তু ঝড়ের তান্ডবে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল। কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জানে আলম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে সড়কের দুপাশে শত শত গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় এলাকাবাসীর সহায়তায় আবার কোথাও কোথাও ফায়ার সার্ভিসের টিম গাছগুলো সড়ক থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) মো. মোকসেমুল হাকিম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে পুরো জেলা লন্ডভন্ড হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে এবং গাছের ডাল পড়ে তার ছিঁড়ে অনেক স্থানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে আছে। আমরা মেরামতের কাজ করছি। কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ মামুন আর রশিদ বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ৭ কেটিএফ ঝড় ও ২৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে।
ঝড়ে লন্ডভন্ড কাজিপুর
এদিকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের কিছু এলাকায় কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ শত শত গাছপালা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। গতকাল শনিবার ভোরে এ অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড় হানা দেয়। ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সোনামুখী বাজার। এ বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানঘরের চাল উড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিক লাইনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ভোরে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় হানা দেয় কাজিপুরে। এতে সোনামুখী বাজারসহ উপজেলার বেশকয়েকটি অঞ্চলের বাড়িঘর ও দোকানপাট মুহুর্তেই ভেঙে পড়ে। উড়ে যায় অনেক ঘরের চাল। শত শত গাছপালা ভেঙে যায়। সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী খান জানান, হঠাৎ ঝড়ে এ বাজারের বেশকটি দোকান লন্ডভন্ড হয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের নামের তালিকা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
ঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড গ্রাম
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ