ঢাকা ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

ঝুঁকি নিয়েই খুলেছে বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেট

  • আপডেট সময় : ১১:৫১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি মাসেই কয়েকদিনের ব্যবধানে রাজধানীতে দুটি ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ঘটনা ঘটেছে। এসব অগ্নিকা-ে বঙ্গবাজার ও নিউ মার্কেট এলাকার নিউ সুপার মার্কেটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন হাজারও ব্যবসায়ী। এসব ঘটনায় আলাদা আলাদা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি কোনও কমিটি।
তদন্ত সূত্র বলছে, দুইটি ঘটনার তদন্তই প্রায় শেষের দিকে। খুব শিগগিরই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। যদিও ঠিক কবে জমা দেওয়া হবে তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি তদন্ত কমিটি।
গত শনিবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিনে বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটের কিছু দোকান খুলে এরইমধ্যে বিকিকিনি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। বঙ্গবাজার এলাকার মহানগর শপিং কমপ্লেক্সের নিচে ফুটপাতে, এনেক্স টাওয়ার চার তলা পর্যন্ত প্রায় বেশিরভাগ দোকানই খোলা হচ্ছে। এছাড়াও বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটও কিছু দোকান ঈদের আগেই খুলে দেওয়া হয়েছিল। ঈদের এক সপ্তাহ পর ফেরা দোকান খুলে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। আর এনেক্স টাওয়ারের পাঁচ থেকে সাত তলা পর্যন্ত নতুন করে মেরামত করা হচ্ছে।
এদিকে ঝুঁকির মধ্যেই ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট দক্ষিণ ব্যবসায়ী বণিক সমিতির অনুমতি নিয়ে ঈদের আগেই দোকান খুলেছিলেন সেখানকার অনেক ব্যবসায়ী। ঈদের পর শনিবার আবারও নতুন করে দোকান খুলতে দেখা গেছে।
নিউ সুপার মার্কেট নিয়ে ফায়ার সার্ভিস বলছে, মার্কেটটি অগ্নিকা-ের আগেই অতিঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আবারও মার্কেট খোলাটা কতটা যুক্তিসঙ্গত, তা ভেবে দেখা দরকার।
এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) বলেন, সম্প্রতি যে অগ্নিকা-ের ঘটনাগুলো ঘটছে, এরমধ্যে যেগুলো এখনও ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলো সংশ্লিষ্টদের আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি। নিউ সুপার মার্কেটে আগেও অতিঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অগ্নিকা-ের পর সেটা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় মার্কেট খুলে দেওয়াটা কতটা যুক্তিসংগত যারা অনুমতি দিয়েছেন তারাই ভালো জানেন। তিনি বলেন, ‘একটি বিষয় আমরা সবসময় দেখতে পাচ্ছি। বিদ্যুৎ কোম্পানির গুলোর কাজের অবহেলা। তাদের চুক্তি অনুযায়ী কয়টা মার্কেটে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। দেখা যাচ্ছে চুক্তির বাইরে গিয়ে অবৈধভাবে আরও দিগুণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব এলোমেলো ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার কারণে অগ্নিকা-ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কের অগ্নিকা-ের ঘটনায় তদন্ত বেশিরভাগই সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খুব অল্প সময়ে আমরা সেই প্রতিবেদন সংশ্লিষ্টদের কাছে জমা দিতে পারবো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের দক্ষিণ বণিক সমিতির এডহক কমিটির সদস্য সচিব কাজী আবু খায়েল বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের আগুন নির্বাপণ করার পর আমাদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাদের আর কোনও কাজ নেই। তারপর আমরা ডিপিডিসি-তে আবেদন করে বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করেছি। পরবর্তী সময়ে ১৮ এপ্রিল থেকে আমরা নিচ তলা এবং দ্বিতীয় তলা খুলে দিয়েছি।’
ফায়ার সার্ভিস মার্কেটটিকে এখনও ঝুঁকিপূর্ণ বলছে, এছাড়া প্রশাসনের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নিচ তলা এবং দ্বিতীয় তলা খুব বেশি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। যা হয়েছে সব তৃতীয় তলায়। তৃতীয় তলায় কাজ চলছে নতুনভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। অন্য কেউ অনুমতি দেয়নি। আমাদের সমিতির কমিটির পরামর্শেই মার্কেট খুলে দেওয়া হয়েছে।’
রমজান মাসে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৫০ ইউনিটের সর্বাত্মক চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। এই ঘটনায় সবকিছু পুড়ে যাওয়া ব্যবসায়ীদের কান্নার মাতম না থামতেই ১৫ এপ্রিল ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিউ সুপার মার্কেটে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকা-। এতে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিটের কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঝুঁকি নিয়েই খুলেছে বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেট

আপডেট সময় : ১১:৫১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি মাসেই কয়েকদিনের ব্যবধানে রাজধানীতে দুটি ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ঘটনা ঘটেছে। এসব অগ্নিকা-ে বঙ্গবাজার ও নিউ মার্কেট এলাকার নিউ সুপার মার্কেটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন হাজারও ব্যবসায়ী। এসব ঘটনায় আলাদা আলাদা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি কোনও কমিটি।
তদন্ত সূত্র বলছে, দুইটি ঘটনার তদন্তই প্রায় শেষের দিকে। খুব শিগগিরই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। যদিও ঠিক কবে জমা দেওয়া হবে তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি তদন্ত কমিটি।
গত শনিবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিনে বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটের কিছু দোকান খুলে এরইমধ্যে বিকিকিনি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। বঙ্গবাজার এলাকার মহানগর শপিং কমপ্লেক্সের নিচে ফুটপাতে, এনেক্স টাওয়ার চার তলা পর্যন্ত প্রায় বেশিরভাগ দোকানই খোলা হচ্ছে। এছাড়াও বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটও কিছু দোকান ঈদের আগেই খুলে দেওয়া হয়েছিল। ঈদের এক সপ্তাহ পর ফেরা দোকান খুলে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। আর এনেক্স টাওয়ারের পাঁচ থেকে সাত তলা পর্যন্ত নতুন করে মেরামত করা হচ্ছে।
এদিকে ঝুঁকির মধ্যেই ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট দক্ষিণ ব্যবসায়ী বণিক সমিতির অনুমতি নিয়ে ঈদের আগেই দোকান খুলেছিলেন সেখানকার অনেক ব্যবসায়ী। ঈদের পর শনিবার আবারও নতুন করে দোকান খুলতে দেখা গেছে।
নিউ সুপার মার্কেট নিয়ে ফায়ার সার্ভিস বলছে, মার্কেটটি অগ্নিকা-ের আগেই অতিঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আবারও মার্কেট খোলাটা কতটা যুক্তিসঙ্গত, তা ভেবে দেখা দরকার।
এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) বলেন, সম্প্রতি যে অগ্নিকা-ের ঘটনাগুলো ঘটছে, এরমধ্যে যেগুলো এখনও ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলো সংশ্লিষ্টদের আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি। নিউ সুপার মার্কেটে আগেও অতিঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অগ্নিকা-ের পর সেটা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় মার্কেট খুলে দেওয়াটা কতটা যুক্তিসংগত যারা অনুমতি দিয়েছেন তারাই ভালো জানেন। তিনি বলেন, ‘একটি বিষয় আমরা সবসময় দেখতে পাচ্ছি। বিদ্যুৎ কোম্পানির গুলোর কাজের অবহেলা। তাদের চুক্তি অনুযায়ী কয়টা মার্কেটে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। দেখা যাচ্ছে চুক্তির বাইরে গিয়ে অবৈধভাবে আরও দিগুণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব এলোমেলো ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার কারণে অগ্নিকা-ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কের অগ্নিকা-ের ঘটনায় তদন্ত বেশিরভাগই সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খুব অল্প সময়ে আমরা সেই প্রতিবেদন সংশ্লিষ্টদের কাছে জমা দিতে পারবো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের দক্ষিণ বণিক সমিতির এডহক কমিটির সদস্য সচিব কাজী আবু খায়েল বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের আগুন নির্বাপণ করার পর আমাদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাদের আর কোনও কাজ নেই। তারপর আমরা ডিপিডিসি-তে আবেদন করে বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করেছি। পরবর্তী সময়ে ১৮ এপ্রিল থেকে আমরা নিচ তলা এবং দ্বিতীয় তলা খুলে দিয়েছি।’
ফায়ার সার্ভিস মার্কেটটিকে এখনও ঝুঁকিপূর্ণ বলছে, এছাড়া প্রশাসনের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নিচ তলা এবং দ্বিতীয় তলা খুব বেশি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। যা হয়েছে সব তৃতীয় তলায়। তৃতীয় তলায় কাজ চলছে নতুনভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। অন্য কেউ অনুমতি দেয়নি। আমাদের সমিতির কমিটির পরামর্শেই মার্কেট খুলে দেওয়া হয়েছে।’
রমজান মাসে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৫০ ইউনিটের সর্বাত্মক চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। এই ঘটনায় সবকিছু পুড়ে যাওয়া ব্যবসায়ীদের কান্নার মাতম না থামতেই ১৫ এপ্রিল ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিউ সুপার মার্কেটে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকা-। এতে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিটের কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।