ঢাকা ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

ঝিনাইদহ-যশোর অধিগ্রহণে আটকা ছয় লেন প্রকল্প

  • আপডেট সময় : ০৭:১৮:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা : বেনাপোল স্থলবন্দর ও মোংলা সমুদ্রবন্দরের পণ্যবাহী যানবাহনের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের সুবিধার্থে পাস হয় হয় ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের ছয় লেন প্রকল্প। প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও দেশের মধ্যাঞ্চলের যোগাযোগ কানেক্টিভিটি বাড়ানো। কিন্তু প্রকল্প শুরুর পর চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। ভেহিকেল ওভারপাস, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হলেও সড়কের আকার বৃদ্ধি ও বালু-মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়নি আজও। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়ায় মহাসড়কের মূল আকার বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, ছয় লেন প্রকল্পের অধীন মহাসড়কের মূল নকশার দ্রুত বাস্তবায়ন বা দৃশ্যমান অগ্রগতির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা জরুরি।

এদিকে ছয় লেন প্রকল্প বাস্তবায়নের আশায় দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ-যশোর সড়কে কোনো সংস্কার হয়নি। কোথাও কোথাও ইট-বালু দিয়ে যানবাহন চলাচলের সাময়িক ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে মাগুরা-কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, উত্তরবঙ্গ ও ঢাকাগামী যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ফলে বেড়েছে ভোগান্তি। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায় ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর (উইকেয়ার) ফেজ-১-এর আওতায় ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কে সাড়ে ৪৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার ছয় লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি (এন-৭) অনুমোদন দেওয়া হয়। ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়। এর মধ্যে ব্যয় একই রেখে প্রকল্পে মেয়াদ একবার বাড়িয়েছে সরকার। ২০২৬ সালের ৩০ জুন প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সার্বিক অগ্রগতির চিত্র দেখে প্রকল্পটি নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর (উইকেয়ার) ফেজ-১ ঝিনাইদহ অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম লটে রয়েছে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কালীগঞ্জ মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত ১৫ দশমিক ৯ কিলোমিটার সড়ক। দ্বিতীয় লটে মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে মুরাদগড় পর্যন্ত ১৫.৮ কিলোমিটার সড়ক। মুরাদগড় থেকে যশোরে পর্যন্ত বাকি অংশটুকু তৃতীয় লটে রয়েছে। প্রথম লটে দুটি ভেহিকুলার ওভারপাস (ভিওপি), ২২টি কালভার্ট ও দুটি সেতু রয়েছে। এরমধ্যে ভেহিকুলার ওভারপাস, একটি সেতু ও আটটি কালভার্টের কাজ শুরু হয়েছে। কালভার্টের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন লট-১ এর সহকারী প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মিলন আলী। এছাড়া লট-২ এর অধীন একটি সেতু, দুটি ভিওপি ও ১৯টি কালভার্ট রয়েছে।

কালভার্ট, সেতু ও ভিওপির পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ভেহিকেল ওভারপাস ও সেতুর পাইলিংয়ের কাজ শেষে এখন চলছে গার্ডার ও পিআর ক্যাপ নির্মাণের কাজ। সরেজমিন দেখা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালী, চুটলিয়া, ও ধোপাঘাটা ব্রিজ এলাকায় পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। গার্ডার ও পিআর নির্মাণ কাজ চলছে পুরোদমে। সেইসঙ্গে ভেহিকেল ওভারপাসের পাইলিংয়ের কাজ শেষ হওয়ায় গার্ডার নির্মাণের কাজ চলছে। চুটলিয়া মোড়ে লোড টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। তবে মূল সড়ক তৈরির জন্য এখনো জমি বুঝে পায়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

প্রকল্পের অধীন ঝিনাইদহ সদর, কালীগঞ্জ ও যশোর সদর উপজেলার মোট ৩০৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের বাইপাস থেকে যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্ট পর্যন্ত রাস্তার দৈর্ঘ্য ৪৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার। প্রকল্পের অধীন মহাসড়কটিতে থাকবে একটি শর্ট ফ্লাইওভার, চারটি সেতু, ৫৫টি কালভার্ট, পাঁচটি ভেহিকুলার ওভারপাস, আটটি পেডিস্ট্রিয়ান ওভারপাস ও একটি রেলওয়ে ওভারপাস। এছাড়া প্রকল্প করিডোরকে স্মার্ট হাইওয়েতে রূপান্তর করার জন্য ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম ও অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল ডিজাইন করার কথা রয়েছে। উইকেয়ার ফেজ-১ এর ঝিনাইদহ অংশের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী মিলন আলী বলেন, ‘সড়কের মূল অংশের কাজের অগ্রগতির জন্য জমি অধিগ্রহণ জরুরি।

এখন পর্যন্ত লট-২ এর জমি অধিগ্রহণের কাজ বেশ এগিয়েছে। তবে লট-১ এর ব্যাপারে নানামুখী চ্যালেঞ্জ আছে। জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। তবে যতটুকু জেনেছি, বর্তমান জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণের কাজ অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের আন্তরিক তৎপরতাও বেড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্প কর্মকর্তার অফিস থেকে ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে টাকা পরিশোধ করা হলেও বৈদ্যুতিক খুঁটি এখনো সরাতে পারেনি। জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর কাজ আটকে আছে।’

ঝিনাইদহ ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার (এলএও) প্রধান সহকারী আলাউদ্দীন বলেন, ‘সরকারের সব বিভাগ তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে দেরি করেছিল। গণপূর্ত বিভাগ সড়কের দুপাশের স্থাপনার মুল্য নির্ধারণের হিসাব জমা দিয়েছে। ফলে ভূমি অধিগ্রহণ কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগির জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কাজ শেষ হবে।’ হামদহ বাইপাস এলাকার বাসিন্দা তানভীর আলম। তিনি বলেন, ‘ছয় লেন রাস্তার কাজ কয়েক বছর ধরেই চলছে। রাস্তা খুঁড়ে রাখা হয়েছে। ধুলাবালিতে চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়। ছয় লেনের কাজ দ্রুত শেষ হওয়া দরকার।’

ভোগান্তির কথা জানিয়ে দোকানঘর বাজারের দোকানি হাসমত আলী বলেন, ‘মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ইট-বালু বিছিয়ে দায়সারা সংস্কার করা হয়েছে। যানবাহন প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়। ধুলাবালিতে জনজীবন বিপর্যস্ত।’ ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ শেষ পর্যায়ে। কালীগঞ্জ অংশের (লট-২) ফাইল চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, শিগগির লট-২ এর আওতাধীন জমির মালিকেরা তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। এছাড়া লট-১ এর জমি অধিগ্রহণ ফাইলের কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঝিনাইদহ-যশোর অধিগ্রহণে আটকা ছয় লেন প্রকল্প

আপডেট সময় : ০৭:১৮:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা : বেনাপোল স্থলবন্দর ও মোংলা সমুদ্রবন্দরের পণ্যবাহী যানবাহনের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের সুবিধার্থে পাস হয় হয় ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের ছয় লেন প্রকল্প। প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও দেশের মধ্যাঞ্চলের যোগাযোগ কানেক্টিভিটি বাড়ানো। কিন্তু প্রকল্প শুরুর পর চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। ভেহিকেল ওভারপাস, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হলেও সড়কের আকার বৃদ্ধি ও বালু-মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়নি আজও। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়ায় মহাসড়কের মূল আকার বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, ছয় লেন প্রকল্পের অধীন মহাসড়কের মূল নকশার দ্রুত বাস্তবায়ন বা দৃশ্যমান অগ্রগতির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা জরুরি।

এদিকে ছয় লেন প্রকল্প বাস্তবায়নের আশায় দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ-যশোর সড়কে কোনো সংস্কার হয়নি। কোথাও কোথাও ইট-বালু দিয়ে যানবাহন চলাচলের সাময়িক ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে মাগুরা-কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, উত্তরবঙ্গ ও ঢাকাগামী যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ফলে বেড়েছে ভোগান্তি। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায় ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর (উইকেয়ার) ফেজ-১-এর আওতায় ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কে সাড়ে ৪৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার ছয় লেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি (এন-৭) অনুমোদন দেওয়া হয়। ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়। এর মধ্যে ব্যয় একই রেখে প্রকল্পে মেয়াদ একবার বাড়িয়েছে সরকার। ২০২৬ সালের ৩০ জুন প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সার্বিক অগ্রগতির চিত্র দেখে প্রকল্পটি নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর (উইকেয়ার) ফেজ-১ ঝিনাইদহ অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম লটে রয়েছে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কালীগঞ্জ মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত ১৫ দশমিক ৯ কিলোমিটার সড়ক। দ্বিতীয় লটে মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে মুরাদগড় পর্যন্ত ১৫.৮ কিলোমিটার সড়ক। মুরাদগড় থেকে যশোরে পর্যন্ত বাকি অংশটুকু তৃতীয় লটে রয়েছে। প্রথম লটে দুটি ভেহিকুলার ওভারপাস (ভিওপি), ২২টি কালভার্ট ও দুটি সেতু রয়েছে। এরমধ্যে ভেহিকুলার ওভারপাস, একটি সেতু ও আটটি কালভার্টের কাজ শুরু হয়েছে। কালভার্টের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন লট-১ এর সহকারী প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মিলন আলী। এছাড়া লট-২ এর অধীন একটি সেতু, দুটি ভিওপি ও ১৯টি কালভার্ট রয়েছে।

কালভার্ট, সেতু ও ভিওপির পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ভেহিকেল ওভারপাস ও সেতুর পাইলিংয়ের কাজ শেষে এখন চলছে গার্ডার ও পিআর ক্যাপ নির্মাণের কাজ। সরেজমিন দেখা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালী, চুটলিয়া, ও ধোপাঘাটা ব্রিজ এলাকায় পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। গার্ডার ও পিআর নির্মাণ কাজ চলছে পুরোদমে। সেইসঙ্গে ভেহিকেল ওভারপাসের পাইলিংয়ের কাজ শেষ হওয়ায় গার্ডার নির্মাণের কাজ চলছে। চুটলিয়া মোড়ে লোড টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। তবে মূল সড়ক তৈরির জন্য এখনো জমি বুঝে পায়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

প্রকল্পের অধীন ঝিনাইদহ সদর, কালীগঞ্জ ও যশোর সদর উপজেলার মোট ৩০৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের বাইপাস থেকে যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্ট পর্যন্ত রাস্তার দৈর্ঘ্য ৪৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার। প্রকল্পের অধীন মহাসড়কটিতে থাকবে একটি শর্ট ফ্লাইওভার, চারটি সেতু, ৫৫টি কালভার্ট, পাঁচটি ভেহিকুলার ওভারপাস, আটটি পেডিস্ট্রিয়ান ওভারপাস ও একটি রেলওয়ে ওভারপাস। এছাড়া প্রকল্প করিডোরকে স্মার্ট হাইওয়েতে রূপান্তর করার জন্য ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম ও অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল ডিজাইন করার কথা রয়েছে। উইকেয়ার ফেজ-১ এর ঝিনাইদহ অংশের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী মিলন আলী বলেন, ‘সড়কের মূল অংশের কাজের অগ্রগতির জন্য জমি অধিগ্রহণ জরুরি।

এখন পর্যন্ত লট-২ এর জমি অধিগ্রহণের কাজ বেশ এগিয়েছে। তবে লট-১ এর ব্যাপারে নানামুখী চ্যালেঞ্জ আছে। জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। তবে যতটুকু জেনেছি, বর্তমান জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণের কাজ অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের আন্তরিক তৎপরতাও বেড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্প কর্মকর্তার অফিস থেকে ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে টাকা পরিশোধ করা হলেও বৈদ্যুতিক খুঁটি এখনো সরাতে পারেনি। জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর কাজ আটকে আছে।’

ঝিনাইদহ ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার (এলএও) প্রধান সহকারী আলাউদ্দীন বলেন, ‘সরকারের সব বিভাগ তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে দেরি করেছিল। গণপূর্ত বিভাগ সড়কের দুপাশের স্থাপনার মুল্য নির্ধারণের হিসাব জমা দিয়েছে। ফলে ভূমি অধিগ্রহণ কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগির জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কাজ শেষ হবে।’ হামদহ বাইপাস এলাকার বাসিন্দা তানভীর আলম। তিনি বলেন, ‘ছয় লেন রাস্তার কাজ কয়েক বছর ধরেই চলছে। রাস্তা খুঁড়ে রাখা হয়েছে। ধুলাবালিতে চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়। ছয় লেনের কাজ দ্রুত শেষ হওয়া দরকার।’

ভোগান্তির কথা জানিয়ে দোকানঘর বাজারের দোকানি হাসমত আলী বলেন, ‘মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ইট-বালু বিছিয়ে দায়সারা সংস্কার করা হয়েছে। যানবাহন প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়। ধুলাবালিতে জনজীবন বিপর্যস্ত।’ ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ শেষ পর্যায়ে। কালীগঞ্জ অংশের (লট-২) ফাইল চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, শিগগির লট-২ এর আওতাধীন জমির মালিকেরা তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। এছাড়া লট-১ এর জমি অধিগ্রহণ ফাইলের কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’