বিনোদন ডেস্ক : হুট করে কিছু করা ওয়েনসডে অ্যাডামসের স্বভাব নয়; অ্যাডামস পরিবারের সবচেয়ে নির্বিকার সদস্য হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মেয়েটির অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া, হাসি এমনকি চোখের পাতা ফেলার ঘটনাও যেন বিরল ঘটনা হিসেবে গণ্য। সেই বিষণœ কিশোরী যখন স্কুলের অনুষ্ঠানে অদ্ভুত ভঙ্গিতে নেচে উঠল, দ্রুতই তা পর্দায় এবং পর্দার বাইরে সাড়া ফেলে দিল। জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম টিকটক এখন সেই নাচের ধাক্কায় উত্তাল। সিএনএন জানিয়েছে, সাধারণ টিকটকারদের পাশাপাশি বড় তারকারাও এখন ওয়েনসডের মত করে নেচে সেই ভিডিও প্রকাশ করেছেন এই মাইক্রো ব্লগিং সাইটে। আর তাদের মধ্যে লেডি গাগার মতো শিল্পীও রয়েছেন। ত্রিশের দশকের যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া জাগানো কার্টুন চরিত্র ওয়েনসডে অ্যাডামস। আমেরিকান কার্টুনিস্ট চার্লস অ্যাডামস দ্য নিউ ইয়র্কার পত্রিকার জন্য তৈরি করেন ‘দ্য অ্যাডামস ফ্যামিলি’ নামের এক কাল্পনিক পরিবারের কার্টুন কাহিনি। সেই পরিবারের গোমেজ ও মরটিশিয়া অ্যাডামসের মেয়ে ‘ওয়েনসডে অ্যাডামস’। নয় দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বাইরের এক কিশোরীর প্রতীক হয়ে রয়েছে ওয়েনসডে অ্যাডামস চরিত্রটি। তাকে ঘিরে এর আগেও কয়েকটি চলচ্চিত্র ও টিভি সিরিয়াল হয়েছে, যার সর্বশেষ সংযোজন নেটফ্লিক্সের সিরিজ ‘ওয়েনসডে’। এই সিরিজে কিশোরী ওয়েনসডের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেনা ওরতেগা। সম্প্রতি সিরিজের একটি পর্বে তার ওই অদ্ভুত নাচের দৃশ্য দেখানোর পর মুহূর্তে তা লুফে নেয় দর্শকরা। সিএনএন লিখেছে, নেটফ্লিক্সের ধারাবাহিকে ওয়েনসডের নাচের দৃশ্যটির দৈর্ঘ্য তিন মিনিটেরও কম। কিন্তু ওই দৃশ্যই ‘ওয়েনসডে’র সবচেয়ে আইকনিক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হতে চলেছে।
মৃতের মত মলিন চেহারা, হাসিহীন নির্বিকার মুখশ্রী, শবযাত্রীর মত কালো পোশাক, মৃতদের কাছাকাছি হওয়ার অভিব্যক্তি – এসবই গত কয়েক দশকে ওয়েনসডে চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হতে মার্কিন নারীদের সাহায্য করেছে; যারা ওই চরিত্রের মতই উদ্ভট হয়ে উঠে অনাবিল এক স্বাধীনতার অনুভূতি পেতে চেয়েছেন। ওয়েনসডের নাচের ভঙ্গি দর্শকদের অচেনা। তার হাত-পায়ের অপ্রচলিত নড়াচড়া, দেহের সঙ্গে লেগে থাকা হাতের অদ্ভুত মুদ্রা, চেহারা আর দৃষ্টির অস্বাভাবিক অভিব্যক্তি- এসবই যেন বলে দেয়, এটাই ওয়েনসডের নিজস্বতা। আর ওই নিজস্বতাই দারুণ পছন্দ হয়েছে সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের। সিএনএন লিখেছে, সাধারণত সমাজে একজন কিশোরীকে যেরকম মেয়েলি ছাঁচে ফেলে দেখা হয়, সেই ধ্যান-ধারণার বাইরের একটি মেয়ে ওয়েসসডে। সামাজিকতার অনেক ধারণাই সে ধারণ করে না; আর এ কারণেই অনেক নারীর কাছে স্বাধীন আত্মপ্রকাশের মাধ্যম হয়ে উঠেছে তার নাচ। নেটফ্লিক্সে ওয়েনসডের ওই নাচ আবার পুরনো একটি গানও ফিরিয়ে এনেছে। এক দশকের বেশি সময় আগে প্রকাশিত লেডি গাগার ‘ব্লাডি মেরি’ টিকটক ভক্তদের কল্যাণে আবারও টপ চার্টে জায়গা করে নিয়েছে। টিকটক ব্যবহারকারীদের অনেকেই ওয়েনসডের মত করে নেচে সেই ভিডিওর সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন গাগার ওই গানের অংশবিশেষ, আর তাতেই আবার গানটি নতুন করে আলোচনায়।
ঝড় তুলেছে ‘ওয়েনসডে’ নাচ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

























