নেত্রকোনা সংবাদদাতা : ভাদ্রের আকাশ ভরা রোদ আবার ঘন বর্ষার হাতছানি। দেখা যাচ্ছে দিনের বেলায় প্রচুর গরম, তার ভেতরে আবার হঠাৎ বৃষ্টি। কেউ কেউ একটু বৃষ্টিতে ভিজলেন, আবার প্রচুর গরমে গা ঘেমে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। এরকম পরিস্থিতিতে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় জ্বর, কাশি, সর্দি, মাথাব্যথার প্রকোপ এখন প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে। ফলে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ধরনের রোগীদের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। জানা গেছে, উপজেলার বেশিরভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত। তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। এভাবে অনেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চেম্বারগুলোতে এ ধরনের রোগীদের ভিড় বাড়ছে। কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকালে টিকিটের জন্য দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় রোগী ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের। এর মধ্যে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের ৩০-৪০ শতাংশই সর্দিজ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছে। ৫ বছর বয়সী শিশু মুনকে ডাক্তার দেখানোর পর বাড়ি যাচ্ছেন বাবা রেজাউল। তিনি জানান, আমার মেয়ে দুদিন থেকে খুবই জ্বর-সর্দি আর কাশিতে ভুগছে। এলাকার ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খাওয়ানো হয় কিন্তু তখনও জ্বর কমেনি তাই স্থানীয় বাজারে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। জ্বরে আক্রান্ত অটোচালক কাজল মিয়া জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে গাড়ি চালিয়েছি। সকালে প্রচন্ড রোদ আবার বিকেলে ঝুমবৃষ্টি। কখনো ভ্যাপসা গরম, আবার হাল্কা ঠান্ডা শরীরে লেগে কয়েকদিন থেকে জ্বর নিয়ে ঘুরছি। পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করে যাচ্ছি। কেন্দুয়া বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সর্দি-কাশি জ্বরের ওষুধ বিক্রি ব্যাপক বেড়েছে। যা অবস্থা তাতে মনে হয় এখন ঘরে ঘরে জ্বর। এ ধরনের বেশিরভাগ রোগী বা রোগীর স্বজন চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে আমাদের কাছে এসে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহফুজুর রহমান জয় বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে হঠাৎ সর্দি-জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে অনেক। এটা মূলত ভাইরাসজনিত জ্বর। হাসপাতালে এই জ্বর নিয়ে আসা রোগীর চাপ বেড়েছে। যা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ মজুদ আছে। এ নিয়ে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। এই সর্দি-জ্বরের জন্য দোকান থেকে এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট খাওয়া যাবে না। শুধুমাত্র প্যারাসিটামল খেতে হবে। পাশাপাশি সর্বদা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে এবং বাসায় বিশ্রামে থাকতে হবে।
জ্বর-সর্দির প্রকোপ, হাসপাতালে রোগীর চাপ
জনপ্রিয় সংবাদ