ঢাকা ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

জেনারেল আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তিন মন্ত্রীর বক্তব্য

  • আপডেট সময় : ০২:৩৬:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪
  • ১৫৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে ‘সেনাবাহিনীর বিষয়’ হিসেবে বর্ণনা করে মন্তব্য এড়াতে চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিস্তারিত না জেনে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। তবে, তার ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ‘নতুন কোনো বিষয় নয়’।
এদিকে জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নয় বরং অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন (ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১সি ধারা) আইনের প্রয়োগ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণভাবে ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য’ বিবেচিত হবেন। ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর বাংলাদেশের চিফ অব আর্মি স্টাফ ছিলেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। তার আগে ২০১২ সাল থেকে চার বছর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীবিজিবির নেতৃত্ব দেন। সেনাপ্রধান হিসেবে মেয়াদের শেষ সময়ে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তোলা হলে সরকার এবং সেনাসদর সে সময় প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আজিজ আহমেদও অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “দেখুন, এটা আর্মির বিষয়। যেহেতু সেনাবাহিনীর বিষয়, এ বিষয়ে আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না। যেহেতু সাবেক সেনাপ্রধান, এটি সেনাবাহিনীর বিষয়।” তবে জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ দেওয়ার বিষয়টি যে আগেই বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছিল, তা স্বীকার করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের মিশনকে আগে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ, এটা পাবলিক করার আগে আগে জানানো হয়েছে। “তো, আমরা মনে করি যে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এনজেগমেন্টের মধ্যে আছি। আমরা দুর্নীতি দমন বলুন, সন্ত্রাস দমন বলুন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা মানব পাচার, সন্ত্রাস দমনসহ, তারপর অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা একযোগে কাজ করছি। আমরা দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একসাথে কাজ করতে চাই, করব।” সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর। উত্তরে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “এটা নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। কেন আসছে, কীভাবে আসছে,,আজকে একটা বিজ্ঞপ্তি একনজর দেখেছি। এটা আরও ডিটেইল না জানলে মন্তব্য করতে পারব না।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমেরিকান সরকার অনেক দেশে পার্সনাল লেভেলেও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কাজেই এটা তাদের জন্য নতুন কিছু নয়। আমাদের যাকে দিয়েছেন, সেটা সঠিকভাবে আমাদের হাতে এখনও আসেনি। আসলে বুঝতে পারব যে কেন দিয়েছে।”
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন বাধাগ্রস্তকারীদের’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছিল ওয়াশিংটন। পরে কিছু ব্যক্তির উপর সেই নীতি কার্যকর করার কথা বলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আর জেনারেল আজিজের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ফরেন অপারেশন্স, অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন্স অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারা। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না জেনারেল আজিজ এবং তার পরিবারের নিকটতম সদস্যরা। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “যে ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটির অধীনে তাকে ভিসা রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়নি। অন্য অ্যাক্টের অধীনে তাকে ভিসা রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়েছে।” তিনি বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা, আমাদের সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীৃ আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্য দুর্নীতির দায়ে জেলে গেছে। “জেলে ছিল বেশ কিছুদিন। সরকারি দলের অনেকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ফর কমব্যাটিং করাপশন এবং আরও অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা একযোগে কাজ করছি।” যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লুর সফরে ‘ইতিবাচক’ বার্তা আসার কয়েকদিন পরে এমন সিদ্ধান্ত আসার বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তিনি যেটা বলেছেন, যেসব ইস্যু সম্পর্কে কনফিউশন তৈরি করেছে, সেগুলোকে দূরে রেখে আমরা সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এটি ছিল তার বক্তব্য। আমাদেরও বক্তব্য ছিল আমরা সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।“
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে আরেক প্রশ্নে হাছান বলেন, “আসলে যে ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে, সেটির অধীনে তো কারও ওপর ইমপোজ করা হয়েছে বলে এখনও আমার জানা নাই। জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থাটা নেওয়া হয়েছে, সেটা অন্য অ্যাক্টের অধীনে করা হয়েছে। “অবশ্য, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যদি ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হয়, তাহলে যারা গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থে বাধাগ্রস্ত করছে, পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করছে, হাসপাতালে হামলা চালাচ্ছে এবং প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। মানুষ পুড়িয়েছে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য, নির্বাচনকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য, তাদের ওপর প্রয়োগ করা হবে বলে আমরা মনে করি।”

অন্যদের মধ্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ এবং সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
ভিসানীতি নয়, অন্য আইনের প্রয়োগ সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর: এদিকে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নয় বরং অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন (ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১সি ধারা) আইনের প্রয়োগ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ মে) বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেটা বলেছে, বাংলাদেশের মিশনকে জেনারেল আজিজের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। জেনারেল আজিজের বিষয়ে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেটা ভিসানীতির প্রয়োগ নয়, এটি অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন আইনের প্রয়োগ। এটা নিয়ে আমি আর কিছু বলবো না। এ নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কথা বলেছেন। আমরা এতটুকুই জানি, এটুকুই বললাম। দ্বিতীয় ধাপেও উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক। রক্তপাত ছাড়া বিএনপি আমলে কোনও স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়নি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জেনারেল আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তিন মন্ত্রীর বক্তব্য

আপডেট সময় : ০২:৩৬:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে ‘সেনাবাহিনীর বিষয়’ হিসেবে বর্ণনা করে মন্তব্য এড়াতে চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিস্তারিত না জেনে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। তবে, তার ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ‘নতুন কোনো বিষয় নয়’।
এদিকে জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নয় বরং অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন (ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১সি ধারা) আইনের প্রয়োগ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণভাবে ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য’ বিবেচিত হবেন। ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর বাংলাদেশের চিফ অব আর্মি স্টাফ ছিলেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। তার আগে ২০১২ সাল থেকে চার বছর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীবিজিবির নেতৃত্ব দেন। সেনাপ্রধান হিসেবে মেয়াদের শেষ সময়ে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তোলা হলে সরকার এবং সেনাসদর সে সময় প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আজিজ আহমেদও অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “দেখুন, এটা আর্মির বিষয়। যেহেতু সেনাবাহিনীর বিষয়, এ বিষয়ে আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না। যেহেতু সাবেক সেনাপ্রধান, এটি সেনাবাহিনীর বিষয়।” তবে জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ দেওয়ার বিষয়টি যে আগেই বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছিল, তা স্বীকার করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের মিশনকে আগে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ, এটা পাবলিক করার আগে আগে জানানো হয়েছে। “তো, আমরা মনে করি যে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এনজেগমেন্টের মধ্যে আছি। আমরা দুর্নীতি দমন বলুন, সন্ত্রাস দমন বলুন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা মানব পাচার, সন্ত্রাস দমনসহ, তারপর অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা একযোগে কাজ করছি। আমরা দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একসাথে কাজ করতে চাই, করব।” সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর। উত্তরে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “এটা নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। কেন আসছে, কীভাবে আসছে,,আজকে একটা বিজ্ঞপ্তি একনজর দেখেছি। এটা আরও ডিটেইল না জানলে মন্তব্য করতে পারব না।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমেরিকান সরকার অনেক দেশে পার্সনাল লেভেলেও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কাজেই এটা তাদের জন্য নতুন কিছু নয়। আমাদের যাকে দিয়েছেন, সেটা সঠিকভাবে আমাদের হাতে এখনও আসেনি। আসলে বুঝতে পারব যে কেন দিয়েছে।”
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন বাধাগ্রস্তকারীদের’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছিল ওয়াশিংটন। পরে কিছু ব্যক্তির উপর সেই নীতি কার্যকর করার কথা বলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আর জেনারেল আজিজের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ফরেন অপারেশন্স, অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন্স অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারা। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না জেনারেল আজিজ এবং তার পরিবারের নিকটতম সদস্যরা। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “যে ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটির অধীনে তাকে ভিসা রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়নি। অন্য অ্যাক্টের অধীনে তাকে ভিসা রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়েছে।” তিনি বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা, আমাদের সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীৃ আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্য দুর্নীতির দায়ে জেলে গেছে। “জেলে ছিল বেশ কিছুদিন। সরকারি দলের অনেকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ফর কমব্যাটিং করাপশন এবং আরও অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা একযোগে কাজ করছি।” যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লুর সফরে ‘ইতিবাচক’ বার্তা আসার কয়েকদিন পরে এমন সিদ্ধান্ত আসার বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তিনি যেটা বলেছেন, যেসব ইস্যু সম্পর্কে কনফিউশন তৈরি করেছে, সেগুলোকে দূরে রেখে আমরা সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এটি ছিল তার বক্তব্য। আমাদেরও বক্তব্য ছিল আমরা সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।“
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে আরেক প্রশ্নে হাছান বলেন, “আসলে যে ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে, সেটির অধীনে তো কারও ওপর ইমপোজ করা হয়েছে বলে এখনও আমার জানা নাই। জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থাটা নেওয়া হয়েছে, সেটা অন্য অ্যাক্টের অধীনে করা হয়েছে। “অবশ্য, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যদি ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হয়, তাহলে যারা গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থে বাধাগ্রস্ত করছে, পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করছে, হাসপাতালে হামলা চালাচ্ছে এবং প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। মানুষ পুড়িয়েছে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য, নির্বাচনকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য, তাদের ওপর প্রয়োগ করা হবে বলে আমরা মনে করি।”

অন্যদের মধ্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ এবং সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
ভিসানীতি নয়, অন্য আইনের প্রয়োগ সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর: এদিকে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নয় বরং অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন (ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১সি ধারা) আইনের প্রয়োগ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ মে) বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেটা বলেছে, বাংলাদেশের মিশনকে জেনারেল আজিজের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। জেনারেল আজিজের বিষয়ে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেটা ভিসানীতির প্রয়োগ নয়, এটি অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন আইনের প্রয়োগ। এটা নিয়ে আমি আর কিছু বলবো না। এ নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কথা বলেছেন। আমরা এতটুকুই জানি, এটুকুই বললাম। দ্বিতীয় ধাপেও উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক। রক্তপাত ছাড়া বিএনপি আমলে কোনও স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়নি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।