ভোলা সংবাদদাতা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘গণভোটের সঙ্গে সঙ্গে জুলাই সনদের আদেশ দিতে হবে। এই আদেশ অবশ্যই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জারি করতে হবে।’
রোববার (২ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ভোলা জেলা পরিষদ হল রুমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা দেখছি একটা পক্ষ চায় চুপ্পু (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু) এই জুলাই সনদের আদেশ দেবেন।
চুপ্পুর কাছ থেকে যদি জুলাই সনদের সার্টিফিকেট নিতে হয়, তাহলে আমাদের সবার ভালো না নদীতে ডুবে যাওয়া? চুপ্পু জুলাই সার্টিফিকেট দিচ্ছেন, এটি জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধারা যদি জানে, তাহলে তারা সবাই একসঙ্গে আত্মহত্যা করবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতিহাসের কী নির্মম বাস্তবতা যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল চুপ্পুর হাতে বায়াত হয়ে জুলাইয়ের সনদ নিতে চায়। এর চেয়ে দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। ফ্যাসিবাদের সুপ্রিম লিডার চুপ্পুর হাত থেকে বায়াত নিয়ে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাদের এই উদ্দেশ্যকে আমরা সন্দেহ করি এবং অবশ্যই আমাদের সন্দেহ করা উচিত।’
হাসনাত আরো বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার বৈধতা কেবলমাত্র রয়েছে গণ-অভুত্থানের। গণ-অভুত্থানের মধ্য দিয়ে যেহেতু ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসেছেন, তিনিই এটির আদেশ দেবেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দিতে হবে। কোনো অধ্যাদেশ নয়, প্রজ্ঞাপন নয়।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী এই সরকারের যদি সংস্কার ও জুলাই সনদ ঘোষণা দেওয়ার ম্যান্ডেট না থাকে, তাহলে এই সরকার কোন ম্যান্ডেটে নির্বাচন দেবে; সেই ম্যান্ডেটটি আমি দেখতে চাই।
নির্বাচন অবশ্যই ফেব্রুয়ারিতে হওয়া উচিত এবং হতে হবে। নির্বাচনকে তারাই পিছিয়ে দিতে চায়, যারা এই সরকারের সঙ্গে জুলাই সনদকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের যেমন নির্বাচনের ম্যান্ডেট রয়েছে, এই সরকারের জুলাই সনদের ম্যান্ডেট রয়েছে, আবার এই সরকারেরই সংস্কারের ম্যান্ডেট রয়েছে। সুতরাং সংস্কার প্রক্রিয়া যথাসময়ে সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারিতে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে। এনসিপি যেই অবস্থান নেবে, দিনশেষে সব রাজনৈতিক দল সেই অবস্থান নেবে।’
আগামী নির্বাচনে জোট গঠন নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে তাদেরই জোট হবে, যারা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন এবং ২৪ যে আকাঙ্ক্ষা কারণে ঘটেছে, দীর্ঘ দেড় দশকের লড়াইয়ে ক্ষোভের যে বহিঃপ্রকাশ হিসাবে, রাষ্ট্র, সাংবিধানিক কাঠামোর যে দুর্বলতা, সেগুলো উত্তোরণে যারা আমাদের পাশে আসবে, যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে; তাদের নিয়েই আমাদের জোট হতে পারে।’
সমন্বয় সভায় এনসিপির ভোলা জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মেহেদী হাসান শরীফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় সম্পাদক সহকারী এটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ডা. মাহমুদা আলম মিতু।
বিশেষ বক্তা ছিলেন যুগ্ম সদস্য সচিব এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন, কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন ফয়সাল, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মেসবাহ কামাল, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম কনক ও আবু সাঈদ মুসা।
সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে দলীয় কার্যক্রম আরো জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ওআ/আপ্র/০২/১১/২০২৫
























