নারী ও শিশু ডেস্ক: জুলাই সনদ সবার জন্য হয়নি বলে অভিযোগ করেছে নারী অধিকার সংগঠন ‘নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম’। এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় জুলাই সনদ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের সব গণতন্ত্রকামী নাগরিকের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন। কিন্তু এই সনদ প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় পদ্ধতিগতভাবে দেশের জনগোষ্ঠীর ৫১ শতাংশের প্রতিনিধিত্বকে অগ্রাধিকার না দেওয়া এবং একই সঙ্গে অন্যান্য সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না করার অবধারিত পরিণাম যা হওয়ার কথা ছিল, ঠিক তা-ই হয়েছে; জুলাই সনদ সবার জন্য হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বাছাইয়ে নারীর প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনসহ শ্রম, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য বা সুপারিশমালাকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।
নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম মনে করে, সত্যিকারের সদিচ্ছা থাকলে প্রতিটি রাজনৈতিক দল থেকে এক-তৃতীয়াংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যেত। নাগরিক পরিসর থেকে নানাভাবে সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে অনেক যৌক্তিক ও বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ ঐকমত্য কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অক্টোবর ২০২৫-এ প্রকাশিত জুলাই জাতীয় সনদে নারীর অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে কোনো বাস্তব পরিবর্তন আনা হয়নি।
বিবৃতিতে জুলাই সনদের বিষয়ে বলা হয়, ‘এই সনদে বাংলাদেশের নারীর আকাক্সক্ষা নিদারুণভাবে অনুপস্থিত। তাই আমরা এই সনদকে প্রত্যাখ্যান করছি এবং সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর এ ন্যক্কারজনক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলো নারীর সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব উপেক্ষা করেছে, ভবিষ্যতের জন্য কোনো অঙ্গীকার রাখেনি এবং মাত্র ৫ শতাংশ দলীয় মনোনয়ন বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়ে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত সময় ক্ষেপণের পথ বেছে নিয়েছে। এটি কেবল হতাশাজনক নয়, এটি নারীর নেতৃত্ব ও গণতান্ত্রিক সমতার দাবির প্রতি সরাসরি অবজ্ঞা; যা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, বাংলাদেশের নারী ভোটাররা এ বৈষম্যের জবাব দেবে।’
বিবৃতিতে তিনটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- রাজনৈতিক দলে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করা; যা পর্যায়ক্রমে ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে। শুধু ২০২৬ সালের নির্বাচনেই সাময়িক বিশেষ বন্দোবস্ত হিসেবে সংরক্ষিত ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন নিশ্চিত করা, জুলাই সনদে এমন একটি ধারা যুক্ত করা; যাতে ২০২৫-এর পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে নারীর অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে ন্যায়সংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ






















