ঢাকা ১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

জুলাই ঘোষণা ও নির্বাচনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া

  • আপডেট সময় : ০৯:০২:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের -ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস যে জুলাই ঘোষণা ও নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, এ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

জামায়াত বলছে নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে: জাতীয় সংসদ নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একইসঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সংগঠনটি। বুধবার (৬ আগস্ট) জুলাই ঘোষণাপত্র ও প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের। দলটির মগবাজার আল ফালাহ মিলনায়তনে এ সংবাদ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে আইনের ভিত্তি দিতে হবে এবং সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাহের বলেন, বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়েছে। যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতেন, এটা ভালো হত। জামায়াতের এই নেতা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জামায়াত। জামায়াত আমির আগেই বলেছেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা সেই একইভাবে ঘোষণা দিয়েছেন। এটা ইতিবাচক। প্রধান উপদেষ্টারও কমিটমেন্ট।
পিআরপদ্ধতিতে অনড় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, পিআর পদ্ধতি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মাইলফলক। ৫৪ বছরের আগের ট্র্যাডিশনাল নির্বাচন দেশের জন্য উপযোগী নয়। রাতে ভোটকেন্দ্র দখল এগুলো আগের ঐতিহ্য।

নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার ও সংস্কার চায় এনসিপি: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, টেলিভিশন ভাষণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন, এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে এর আগে আমরা গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান বিচার এবং সংস্কার চাই। একইসঙ্গে এর মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

ছবি সংগৃহীত

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র ও প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। আখতার বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠকে এনসিপি স্বাগত জানিয়েছে। কারণ, এটি আমাদের দাবিও ছিল। তবে এরমধ্যে কিছু বিষয় সংযুক্ত করা হয়নি। আরো গ্রহণযোগ্য করতে খসড়ায় আমরা কিছু বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম। সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তিনি বলেন, ঘোষণাপত্রে উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের কথা বলা হলেও উপনিবেশবিরোধী লড়াই ৪৭-কে উল্লেখ করা হয়নি। ৪৭, ৭১ এবং ২৪ এর আন্দোলনের সমন্বিত স্বীকৃতি থাকলে ঘোষণাপত্র আরো সমৃদ্ধ হতো। বিশেষ করে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা, বিচারিক হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন, মোদিবিরোধী আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও আবরার ফাহাদ হত্যার পরবর্তী আন্দোলন ঘোষণাপত্রে উল্লেখ থাকলে আরো সর্বজনীন হতো।
এছাড়া ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও ভ্যাট কমানোর আন্দোলনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর সুনির্দিষ্ট উল্লেখ করা উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব ও যুগ্ম মুখ জাবেদ রাসিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে ২৮টি দফা যুক্ত করা হয়েছে। স্থান পেয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন।

প্রধান উপদেষ্টার ইচ্ছাকে সাধুবাদ চরমোনাই পীরের: আগামী ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চরমোনাই পীর, ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করিম।

ছবি সংগৃহীত

বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর পুরানা পল্টনে অনুষ্ঠিত প্রতিক্রিয়ামূলক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্মরণীয় নির্বাচন আয়োজন করতে চাইছেন। তার ইচ্ছাকে সাধুবাদ জানাই।’ কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তার দল সন্তুষ্ট নয় বলে জানান চরমোনাই পীর। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর নিরপেক্ষতা ও সক্রিয়তা নিয়ে দেশের কেউই আশ্বস্ত হতে পারছে না। আগামী ফেব্রুয়ারির আগে এর সমাধান হবে, তেমন আশা করার যৌক্তিক কারণ এখনও দেখা যাচ্ছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আমির জানান, তার দল নির্বাচনমুখী। ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলমান।

অর্ধেক সন্তুষ্টি আর অর্ধেক অসন্তুষ্টি নিয়ে সরকারকে ধন্যবাদ নুরের: জুলাই ঘোষণাপত্রে সরকার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ঢাকঢোল পিটিয়ে একটা ঘোষণাপত্র দেওয়ার বিষয় জাতির সামনে হাজির করলেন, সেটাতেও শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে।
রাজধানীর পুরানা পল্টনের আলরাজি কমপ্লেক্সে বুধবার (৬ আগস্ট) গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ছবি সংগৃহীত

নুর বলেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন ছিল। সেই দিনে আরেকটি নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি হয়েছে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণার মাধ্যমে। এজন্য অবশ্যই সরকার এবং সরকারের প্রধানকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। কিন্তু আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই, এমন একটা অবস্থায় অর্ধেক সন্তুষ্টি আর অর্ধেক অসন্তুষ্টি নিয়ে সরকারকে আমাদের ধন্যবাদ জানাতে হচ্ছে। কারণ যেহেতু আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সবার সরকার, এই সরকারের ব্যর্থতা মানে আমাদের সবার ব্যর্থতা।
তিনি বলেন, এই সরকারের ব্যর্থতা মানে দেশ আরেকটা নতুন সংকটে পতিত হওয়া। সেই জায়গা থেকে আমরা সরকারকে ওন করেছি, ধারণ করেছি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে আমরা সরকারকে যতটা ধারণ করেছি সরকার আমাদের ততটা ধারণ করেনি। সরকার শুধু ধারণ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিকে।
যে কারণে সব কর্মকাণ্ডে দেখবেন এনসিপির একটা প্রাধান্য। সদ্য নতুন দল গঠিত দল। এমনকি এই যে ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া হলো। ইতিহাস টেনে গালগপ্প অনেক করা যায়। কিন্তু যে কোনো একটা বিষয়ে আপনাকে টু দ্য পয়েন্টে আসতে হয়। সামারিতে আসতে হয়। প্রত্যেকটা জিনিসের একটা জিস্ট থাকে। এই গণঅভ্যুত্থানের জিস্ট ও গণঅভ্যুত্থানের মূল প্রেক্ষাপট ছিল ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন। যেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল আমাদের ছোট ভাই-বন্ধুদের, কিশোর বন্ধুদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন-বলেন নুর।
গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি বলেন, এই কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে এই প্রথাগত রাজনীতির বাইরে সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। সেই সংগ্রাম থেকেই জন্ম নিয়েছে ছাত্র-যুব-শ্রমিক অধিকার পরিষদ,গণঅধিকার পরিষদ। ২০২৪ সালে যেই আন্দোলন শুরু হয়েছে আমাদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান যেটি বলেছেন, এই ধরনের একটি মিথ্যাচার এই ধরনের একটি বিকৃত ইতিহাস জুলাই ঘোষণাপত্রে থাকবে এটা আমরা প্রত্যাশা করিনি।

রাশেদ খাঁন বললেন জুলাই ঘোষণাপত্রে শহীদের সংখ্যা নিয়ে তামাশা করা হয়েছে: জুলাই ঘোষণাপত্রে শহীদের সংখ্যা নিয়ে তামাশা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।

ছবি সংগৃহীত

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে শহীদের সংখ্যা নিয়ে তামাশা করা হয়। এখানে বলা হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের সংখ্যা প্রায় ১০০০। কিন্তু জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ছিল ১৪০০। আবার সরকারি গেজেটে ৮৩৬ জন বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটাবিরোধী আন্দোলন, শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, পিলখানা হত্যাকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আমরা আপাতত জুলাই ঘোষণাপত্র বর্জন করছি না। সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যান্য আন্দোলনগুলো অন্তর্ভুক্ত না করলে বর্জন করতে বাধ্য হবো। রাশেদ খাঁন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরের ইতিহাস ঘোষণা করা হয়েছে ঘোষণাপত্রে। সেটাকে আমরা পজিটিভ দেখছি। কিন্তু ২৪-সালে যে কারণে অভ্যুত্থান হয়েছে সেটা তুলে ধরা হয়নি। সেখানে একপাক্ষিক ইতিহাস তুলে ধরেছে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই ঘোষণা ও নির্বাচনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া

আপডেট সময় : ০৯:০২:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস যে জুলাই ঘোষণা ও নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, এ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

জামায়াত বলছে নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে: জাতীয় সংসদ নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একইসঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সংগঠনটি। বুধবার (৬ আগস্ট) জুলাই ঘোষণাপত্র ও প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের। দলটির মগবাজার আল ফালাহ মিলনায়তনে এ সংবাদ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে আইনের ভিত্তি দিতে হবে এবং সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাহের বলেন, বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়েছে। যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতেন, এটা ভালো হত। জামায়াতের এই নেতা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জামায়াত। জামায়াত আমির আগেই বলেছেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা সেই একইভাবে ঘোষণা দিয়েছেন। এটা ইতিবাচক। প্রধান উপদেষ্টারও কমিটমেন্ট।
পিআরপদ্ধতিতে অনড় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, পিআর পদ্ধতি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মাইলফলক। ৫৪ বছরের আগের ট্র্যাডিশনাল নির্বাচন দেশের জন্য উপযোগী নয়। রাতে ভোটকেন্দ্র দখল এগুলো আগের ঐতিহ্য।

নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার ও সংস্কার চায় এনসিপি: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, টেলিভিশন ভাষণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন, এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে এর আগে আমরা গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান বিচার এবং সংস্কার চাই। একইসঙ্গে এর মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

ছবি সংগৃহীত

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র ও প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। আখতার বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠকে এনসিপি স্বাগত জানিয়েছে। কারণ, এটি আমাদের দাবিও ছিল। তবে এরমধ্যে কিছু বিষয় সংযুক্ত করা হয়নি। আরো গ্রহণযোগ্য করতে খসড়ায় আমরা কিছু বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম। সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তিনি বলেন, ঘোষণাপত্রে উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের কথা বলা হলেও উপনিবেশবিরোধী লড়াই ৪৭-কে উল্লেখ করা হয়নি। ৪৭, ৭১ এবং ২৪ এর আন্দোলনের সমন্বিত স্বীকৃতি থাকলে ঘোষণাপত্র আরো সমৃদ্ধ হতো। বিশেষ করে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা, বিচারিক হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন, মোদিবিরোধী আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও আবরার ফাহাদ হত্যার পরবর্তী আন্দোলন ঘোষণাপত্রে উল্লেখ থাকলে আরো সর্বজনীন হতো।
এছাড়া ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও ভ্যাট কমানোর আন্দোলনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর সুনির্দিষ্ট উল্লেখ করা উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব ও যুগ্ম মুখ জাবেদ রাসিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে ২৮টি দফা যুক্ত করা হয়েছে। স্থান পেয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন।

প্রধান উপদেষ্টার ইচ্ছাকে সাধুবাদ চরমোনাই পীরের: আগামী ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চরমোনাই পীর, ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করিম।

ছবি সংগৃহীত

বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর পুরানা পল্টনে অনুষ্ঠিত প্রতিক্রিয়ামূলক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্মরণীয় নির্বাচন আয়োজন করতে চাইছেন। তার ইচ্ছাকে সাধুবাদ জানাই।’ কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তার দল সন্তুষ্ট নয় বলে জানান চরমোনাই পীর। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর নিরপেক্ষতা ও সক্রিয়তা নিয়ে দেশের কেউই আশ্বস্ত হতে পারছে না। আগামী ফেব্রুয়ারির আগে এর সমাধান হবে, তেমন আশা করার যৌক্তিক কারণ এখনও দেখা যাচ্ছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আমির জানান, তার দল নির্বাচনমুখী। ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলমান।

অর্ধেক সন্তুষ্টি আর অর্ধেক অসন্তুষ্টি নিয়ে সরকারকে ধন্যবাদ নুরের: জুলাই ঘোষণাপত্রে সরকার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ঢাকঢোল পিটিয়ে একটা ঘোষণাপত্র দেওয়ার বিষয় জাতির সামনে হাজির করলেন, সেটাতেও শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে।
রাজধানীর পুরানা পল্টনের আলরাজি কমপ্লেক্সে বুধবার (৬ আগস্ট) গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ছবি সংগৃহীত

নুর বলেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন ছিল। সেই দিনে আরেকটি নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি হয়েছে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণার মাধ্যমে। এজন্য অবশ্যই সরকার এবং সরকারের প্রধানকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। কিন্তু আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই, এমন একটা অবস্থায় অর্ধেক সন্তুষ্টি আর অর্ধেক অসন্তুষ্টি নিয়ে সরকারকে আমাদের ধন্যবাদ জানাতে হচ্ছে। কারণ যেহেতু আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সবার সরকার, এই সরকারের ব্যর্থতা মানে আমাদের সবার ব্যর্থতা।
তিনি বলেন, এই সরকারের ব্যর্থতা মানে দেশ আরেকটা নতুন সংকটে পতিত হওয়া। সেই জায়গা থেকে আমরা সরকারকে ওন করেছি, ধারণ করেছি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে আমরা সরকারকে যতটা ধারণ করেছি সরকার আমাদের ততটা ধারণ করেনি। সরকার শুধু ধারণ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিকে।
যে কারণে সব কর্মকাণ্ডে দেখবেন এনসিপির একটা প্রাধান্য। সদ্য নতুন দল গঠিত দল। এমনকি এই যে ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া হলো। ইতিহাস টেনে গালগপ্প অনেক করা যায়। কিন্তু যে কোনো একটা বিষয়ে আপনাকে টু দ্য পয়েন্টে আসতে হয়। সামারিতে আসতে হয়। প্রত্যেকটা জিনিসের একটা জিস্ট থাকে। এই গণঅভ্যুত্থানের জিস্ট ও গণঅভ্যুত্থানের মূল প্রেক্ষাপট ছিল ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন। যেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল আমাদের ছোট ভাই-বন্ধুদের, কিশোর বন্ধুদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন-বলেন নুর।
গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি বলেন, এই কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে এই প্রথাগত রাজনীতির বাইরে সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। সেই সংগ্রাম থেকেই জন্ম নিয়েছে ছাত্র-যুব-শ্রমিক অধিকার পরিষদ,গণঅধিকার পরিষদ। ২০২৪ সালে যেই আন্দোলন শুরু হয়েছে আমাদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান যেটি বলেছেন, এই ধরনের একটি মিথ্যাচার এই ধরনের একটি বিকৃত ইতিহাস জুলাই ঘোষণাপত্রে থাকবে এটা আমরা প্রত্যাশা করিনি।

রাশেদ খাঁন বললেন জুলাই ঘোষণাপত্রে শহীদের সংখ্যা নিয়ে তামাশা করা হয়েছে: জুলাই ঘোষণাপত্রে শহীদের সংখ্যা নিয়ে তামাশা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।

ছবি সংগৃহীত

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে শহীদের সংখ্যা নিয়ে তামাশা করা হয়। এখানে বলা হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের সংখ্যা প্রায় ১০০০। কিন্তু জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ছিল ১৪০০। আবার সরকারি গেজেটে ৮৩৬ জন বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটাবিরোধী আন্দোলন, শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, পিলখানা হত্যাকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আমরা আপাতত জুলাই ঘোষণাপত্র বর্জন করছি না। সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যান্য আন্দোলনগুলো অন্তর্ভুক্ত না করলে বর্জন করতে বাধ্য হবো। রাশেদ খাঁন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরের ইতিহাস ঘোষণা করা হয়েছে ঘোষণাপত্রে। সেটাকে আমরা পজিটিভ দেখছি। কিন্তু ২৪-সালে যে কারণে অভ্যুত্থান হয়েছে সেটা তুলে ধরা হয়নি। সেখানে একপাক্ষিক ইতিহাস তুলে ধরেছে।