ঢাকা ১২:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থান গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

  • আপডেট সময় : ০৭:৪৭:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
  • ৩২ বার পড়া হয়েছে

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪- যা ‘জুলাই বিপ্লব’ হিসেবেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন। এই আন্দোলন ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলেছিল এবং এর মাধ্যমে ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটে। আন্দোলনের সূচনা হয় সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে। সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে আন্দোলন তীব্রতর হয় এবং ৫ আগস্ট চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। এই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের জনগণের সাহস, ঐক্য ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই এবারের সাহিত্য পাতায় জুলাই নিবেদিত একগুচ্ছ প্রকাশ করা হলো

 

জুলাই: রক্তে লেখা প্রতিজ্ঞা
মো. রবিন ইসলাম

জুলাই, তুমি উষ্ণ অগ্নিবীজ,
যার উত্তাপে পুড়েছে শোষণের প্রাচীন শর্বরী।
তোমার প্রত্যুষে নেমেছে রক্তস্নাত প্রতিজ্ঞা,
শহীদের উচ্চারণে জন্ম নিয়েছে বিজয়-ব্যাকরণ।

মৃত্যুর অনুরণন তুমি নও,
তুমি জীবনের অমোঘ সংলাপ—
যেখানে ব্যর্থতা নয়, ব্যথাই বিজয়-চূড়ায় পৌঁছে দেয়,
আত্মত্যাগের ঋদ্ধ রসায়নে পুষ্প হয়ে ওঠে প্রাণ।

ম্লানতার মায়াজাল ছিঁড়ে
তুমি আত্মার গহীনে স্থাপিত এক দীপাঞ্জলি,
যার শিখা উজ্জ্বল হয়—
প্রতিটি অন্ধকারের প্রান্তে দাঁড়িয়ে।

জুলাই, তুমি সময় নয়, তুমি সমরচেতনার সংগীত,
তোমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে বাজে রাষ্ট্রপ্রেমের রণধ্বনি।
তোমায় হৃদয়ের উপাসনাঘরে
রেখেছি অর্ঘ্যরে মতো, সর্বত্যাগের শ্রেষ্ঠ রূপে।

 

জুলাই মানে
বিলকিস নাহার মিতু

জুলাই মানে রক্তগঙ্গা
জুলাই দ্রোহের আগুন,
বাংলাদেশে জুলাই এলো
হয়ে আরেক ফাগুন।

জুলাই মানে বজ্রধ্বনি
গর্জে ওঠা স্বর,
স্লোগান ছিল বুক পেতেছি
পারলে গুলি কর।

জুলাই মানে মৃত্যু হাতে
দেশকে রক্ষার পণ,
শ্রদ্ধার আসন পাবে সব
ত্যাগী শহীদগণ।

 

 

শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে
মুহম্মদ আবু বকর

একটু বাড়ি ফেরার তাড়া ছিল হয়তো
হয়তো ভেবেছিল গাড়ি পাবে না শেষে
সব গাড়ি ছেড়ে যাবে
আর তাছাড়া কে না জানে
অ্যাম্বুলেন্স সবচেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছতে পারে
সবাই তাকে পথ ছেড়ে দেয়।

হয়তো বাড়িতে চাল ফুরিয়ে গিয়েছিল
টিউশনের টাকা দিয়ে চাল কিনে দিতে হবে বাড়িতে
তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে হবে
যদিও ভাঙা মাস; তবু কিছু টাকা স্টুডেন্টের মায়ের কাছে
চেয়ে নিয়ে তার বাড়ি যাবার তাড়া ছিল।

তাই সে দাঁড়িয়েছিল বুলেটের সামনে
কারণ সে জানতো বুলেটের সামনে দাঁড়ালেই অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাবে
আর কে না জানে?
অ্যাম্বুলেন্স সবচেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছতে পারে
সবাই তাকে পথ ছেড়ে দেয়।

 

আমি প্রজ্জ্বলিত শিখা
তাইয়িবা তাসনীম

আমি মানি না
অন্যায়ের নিঃশ্বাস, অবিচারের চাহনি,
কোনো শাসকের মনগড়া শাসানি।
আমি মাথা নোয়াই না
অসত্যের কোনো বাণীতে।

আমি চলেছি সত্যের দীপ্ত পথ ধরে,
আত্মাকে জ্বালিয়েছি ন্যায়ের প্রজ্জ্বলিত শিখাতে।
আমি ভীরু নই,
নই বেখেয়ালি—
আমি দাঁড়াই স্পর্ধায়, অন্যায়ের বিপক্ষে।

আমি তীব্র দাবানল,
শুদ্ধ জাগরণের দীপ্ত ভাষা—
আমিই প্রজ্জ্বলিত শিখা।

 

তারুণ্যের বিপ্লব
এম এম উজ্জ্বল

রোদে তপ্ত রাজপথ, অগ্নির স্ফূলিঙ্গ কণ্ঠে-
তারুণ্যের মিছিল চলে লোহার কঠিন পায়ে
উৎখাত করো অন্যায়, শিকল পড়াও পায়ে
ন্যায় মার্গ ব্যপ্ত করো, ইনসাফ গড় দেশে।

টগবগ রক্তধারা শিরায় শিরায় চলে
তরুণ পেশীর শক্তি সূর্যের মতন জ্বলে
বিপ্লব করো, বিপ্লব গড়তে শান্তির নীড়ে
স্বদেশ করো স্বাধীন, নিঃশ্বাস ছাড়তে ব্যোমে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক নারীকে দুই ভাই বিয়ে করে বললেন- আমরা গর্বিত

জুলাই গণঅভ্যুত্থান গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

আপডেট সময় : ০৭:৪৭:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪- যা ‘জুলাই বিপ্লব’ হিসেবেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন। এই আন্দোলন ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলেছিল এবং এর মাধ্যমে ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটে। আন্দোলনের সূচনা হয় সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে। সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে আন্দোলন তীব্রতর হয় এবং ৫ আগস্ট চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। এই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের জনগণের সাহস, ঐক্য ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই এবারের সাহিত্য পাতায় জুলাই নিবেদিত একগুচ্ছ প্রকাশ করা হলো

 

জুলাই: রক্তে লেখা প্রতিজ্ঞা
মো. রবিন ইসলাম

জুলাই, তুমি উষ্ণ অগ্নিবীজ,
যার উত্তাপে পুড়েছে শোষণের প্রাচীন শর্বরী।
তোমার প্রত্যুষে নেমেছে রক্তস্নাত প্রতিজ্ঞা,
শহীদের উচ্চারণে জন্ম নিয়েছে বিজয়-ব্যাকরণ।

মৃত্যুর অনুরণন তুমি নও,
তুমি জীবনের অমোঘ সংলাপ—
যেখানে ব্যর্থতা নয়, ব্যথাই বিজয়-চূড়ায় পৌঁছে দেয়,
আত্মত্যাগের ঋদ্ধ রসায়নে পুষ্প হয়ে ওঠে প্রাণ।

ম্লানতার মায়াজাল ছিঁড়ে
তুমি আত্মার গহীনে স্থাপিত এক দীপাঞ্জলি,
যার শিখা উজ্জ্বল হয়—
প্রতিটি অন্ধকারের প্রান্তে দাঁড়িয়ে।

জুলাই, তুমি সময় নয়, তুমি সমরচেতনার সংগীত,
তোমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে বাজে রাষ্ট্রপ্রেমের রণধ্বনি।
তোমায় হৃদয়ের উপাসনাঘরে
রেখেছি অর্ঘ্যরে মতো, সর্বত্যাগের শ্রেষ্ঠ রূপে।

 

জুলাই মানে
বিলকিস নাহার মিতু

জুলাই মানে রক্তগঙ্গা
জুলাই দ্রোহের আগুন,
বাংলাদেশে জুলাই এলো
হয়ে আরেক ফাগুন।

জুলাই মানে বজ্রধ্বনি
গর্জে ওঠা স্বর,
স্লোগান ছিল বুক পেতেছি
পারলে গুলি কর।

জুলাই মানে মৃত্যু হাতে
দেশকে রক্ষার পণ,
শ্রদ্ধার আসন পাবে সব
ত্যাগী শহীদগণ।

 

 

শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে
মুহম্মদ আবু বকর

একটু বাড়ি ফেরার তাড়া ছিল হয়তো
হয়তো ভেবেছিল গাড়ি পাবে না শেষে
সব গাড়ি ছেড়ে যাবে
আর তাছাড়া কে না জানে
অ্যাম্বুলেন্স সবচেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছতে পারে
সবাই তাকে পথ ছেড়ে দেয়।

হয়তো বাড়িতে চাল ফুরিয়ে গিয়েছিল
টিউশনের টাকা দিয়ে চাল কিনে দিতে হবে বাড়িতে
তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে হবে
যদিও ভাঙা মাস; তবু কিছু টাকা স্টুডেন্টের মায়ের কাছে
চেয়ে নিয়ে তার বাড়ি যাবার তাড়া ছিল।

তাই সে দাঁড়িয়েছিল বুলেটের সামনে
কারণ সে জানতো বুলেটের সামনে দাঁড়ালেই অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাবে
আর কে না জানে?
অ্যাম্বুলেন্স সবচেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছতে পারে
সবাই তাকে পথ ছেড়ে দেয়।

 

আমি প্রজ্জ্বলিত শিখা
তাইয়িবা তাসনীম

আমি মানি না
অন্যায়ের নিঃশ্বাস, অবিচারের চাহনি,
কোনো শাসকের মনগড়া শাসানি।
আমি মাথা নোয়াই না
অসত্যের কোনো বাণীতে।

আমি চলেছি সত্যের দীপ্ত পথ ধরে,
আত্মাকে জ্বালিয়েছি ন্যায়ের প্রজ্জ্বলিত শিখাতে।
আমি ভীরু নই,
নই বেখেয়ালি—
আমি দাঁড়াই স্পর্ধায়, অন্যায়ের বিপক্ষে।

আমি তীব্র দাবানল,
শুদ্ধ জাগরণের দীপ্ত ভাষা—
আমিই প্রজ্জ্বলিত শিখা।

 

তারুণ্যের বিপ্লব
এম এম উজ্জ্বল

রোদে তপ্ত রাজপথ, অগ্নির স্ফূলিঙ্গ কণ্ঠে-
তারুণ্যের মিছিল চলে লোহার কঠিন পায়ে
উৎখাত করো অন্যায়, শিকল পড়াও পায়ে
ন্যায় মার্গ ব্যপ্ত করো, ইনসাফ গড় দেশে।

টগবগ রক্তধারা শিরায় শিরায় চলে
তরুণ পেশীর শক্তি সূর্যের মতন জ্বলে
বিপ্লব করো, বিপ্লব গড়তে শান্তির নীড়ে
স্বদেশ করো স্বাধীন, নিঃশ্বাস ছাড়তে ব্যোমে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ