ঢাকা ০৫:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদের কন্যাকে ধর্ষণ, ৩ আসামির কারাদণ্ড

  • আপডেট সময় : ০৪:১৮:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৬ বার পড়া হয়েছে

প্রতীকী ছবি

পটুয়াখালী সংবাদদাতা: পটুয়াখালীতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ব্যক্তির কলেজপড়ুয়া মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিন আসামির মধ্যে সাকিব ও সিফাতকে ১৩ বছর ও ইমরানকে ১০ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিলুফার শিরিন এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা ঘটনার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় শিশু আদালত আইনের আওতায় তাদের সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় দুমকি উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে ওই শহীদের মেয়ে (১৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তিনি নিজেই বাদী হয়ে তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

পরে ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে লামিয়া ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে এই রায় ঘোষণা করা হয়।

রায় ঘোষণার পর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত ন্যায়বিচার দিয়েছেন।

অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন বলেন, এই মামলার রায় একটি বার্তা দেবে—যে কেউ অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে, সে যত প্রভাবশালী হোক না কেন।

আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাধারণ মানুষ ও মানবাধিকার কর্মীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে আন্দোলন চলাকালে ভুক্তভোগীর বাবা ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। পরে তার গ্রামের বাড়ি দুমকির পাঙ্গাশিয়া গ্রামে দাফন করা হয়। গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানা বাড়ি ফেরার পথে দুমকির রাজগঞ্জ গ্রামে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পরদিন নিজে বাদী হয়ে দুমকি থানায় মামলা করেন। ঘটনার প্রায় এক মাস পর, ২৬ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন। পরে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ গ্রামের বাড়িতে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।

এদিকে ধর্ষণ মামলায় ইমরান মুন্সীকে আসামি করা না হলেও তদন্তকালে গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান মুন্সীর জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে। মেডিক্যাল রিপোর্টেও প্রমাণ পাওয়া যায়।

এসি/আপ্র/২২/১০/২০২৫

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদের কন্যাকে ধর্ষণ, ৩ আসামির কারাদণ্ড

আপডেট সময় : ০৪:১৮:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

পটুয়াখালী সংবাদদাতা: পটুয়াখালীতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ব্যক্তির কলেজপড়ুয়া মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিন আসামির মধ্যে সাকিব ও সিফাতকে ১৩ বছর ও ইমরানকে ১০ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিলুফার শিরিন এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা ঘটনার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় শিশু আদালত আইনের আওতায় তাদের সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় দুমকি উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে ওই শহীদের মেয়ে (১৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তিনি নিজেই বাদী হয়ে তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

পরে ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে লামিয়া ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে এই রায় ঘোষণা করা হয়।

রায় ঘোষণার পর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত ন্যায়বিচার দিয়েছেন।

অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন বলেন, এই মামলার রায় একটি বার্তা দেবে—যে কেউ অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে, সে যত প্রভাবশালী হোক না কেন।

আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাধারণ মানুষ ও মানবাধিকার কর্মীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে আন্দোলন চলাকালে ভুক্তভোগীর বাবা ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। পরে তার গ্রামের বাড়ি দুমকির পাঙ্গাশিয়া গ্রামে দাফন করা হয়। গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানা বাড়ি ফেরার পথে দুমকির রাজগঞ্জ গ্রামে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পরদিন নিজে বাদী হয়ে দুমকি থানায় মামলা করেন। ঘটনার প্রায় এক মাস পর, ২৬ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন। পরে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ গ্রামের বাড়িতে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।

এদিকে ধর্ষণ মামলায় ইমরান মুন্সীকে আসামি করা না হলেও তদন্তকালে গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান মুন্সীর জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে। মেডিক্যাল রিপোর্টেও প্রমাণ পাওয়া যায়।

এসি/আপ্র/২২/১০/২০২৫