ঢাকা ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শিল্পী ফরিদা পারভীন

  • আপডেট সময় : ০১:৫৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন -ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: লালন সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।

সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী।

আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, ‘ফরিদা পারভীনের অবস্থা ক্রিটিক্যাল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

শিল্পী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। ভোগান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তাকে এখন সপ্তাহে দুইদিন ডায়ালাইসিস করাতে হয়। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর এই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ সময় চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘রোগীর রক্তচাপ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। সংক্রমণ বেড়ে গেছে। কিডনি জটিলতা তো আছেই। সবমিলিয়ে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

এর আগে ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে স্বামী যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম জানিয়েছিলেন, ‘সার্বিকভাবে তার অবস্থা খুব একটা ভালো না। গত কয়েক মাসে চারবার আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। ফুসফুস আর কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তিনি। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল থাকে। উঠে দাঁড়ানোর মতো শক্তি পান না। হাঁটতেও পারেন না। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। ফুসফুসের সমস্যা ছাড়াও তার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও থাইরয়েড জটিলতা রয়েছে।

ফরিদা পারভীন ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত পরিবেশন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান তিনি। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে লালনগীতির তালিম নেন এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি লাভ করেন একুশে পদক। ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। ১৯৯৩ সালে সিনেমার গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এই শিল্পী। নতুন প্রজন্মকে লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন ‘অচিন পাখি স্কুল’।
সানা/আপ্র/১১/০৯/২০২৫্র

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শিল্পী ফরিদা পারভীন

আপডেট সময় : ০১:৫৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: লালন সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।

সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী।

আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, ‘ফরিদা পারভীনের অবস্থা ক্রিটিক্যাল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

শিল্পী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। ভোগান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তাকে এখন সপ্তাহে দুইদিন ডায়ালাইসিস করাতে হয়। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর এই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ সময় চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘রোগীর রক্তচাপ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। সংক্রমণ বেড়ে গেছে। কিডনি জটিলতা তো আছেই। সবমিলিয়ে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

এর আগে ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে স্বামী যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম জানিয়েছিলেন, ‘সার্বিকভাবে তার অবস্থা খুব একটা ভালো না। গত কয়েক মাসে চারবার আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। ফুসফুস আর কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তিনি। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল থাকে। উঠে দাঁড়ানোর মতো শক্তি পান না। হাঁটতেও পারেন না। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। ফুসফুসের সমস্যা ছাড়াও তার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও থাইরয়েড জটিলতা রয়েছে।

ফরিদা পারভীন ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত পরিবেশন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান তিনি। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে লালনগীতির তালিম নেন এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি লাভ করেন একুশে পদক। ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। ১৯৯৩ সালে সিনেমার গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এই শিল্পী। নতুন প্রজন্মকে লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন ‘অচিন পাখি স্কুল’।
সানা/আপ্র/১১/০৯/২০২৫্র