ঢাকা ০৪:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

জি-২০ থেকে কী ছিটকে পড়ছে রাশিয়া?

  • আপডেট সময় : ১০:৪৩:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর থেকেই একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ছে রাশিয়া। এমনকি খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এবার বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি-২০ থেকেও রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর জি-২০তে রাশিয়ার আর থাকা উচিত কিনা সেটি পর্যালোচনা করতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা।
ইউক্রেনের প্রতিবেশী পোল্যান্ডের পক্ষ থেকেও বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর এই জোট থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। ২২ মার্চ পোল্যান্ডের দেওয়া ওই প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে বিবেচনার কথা জানিয়েছে ওয়াশিংটন। জি-২০ থেকে রাশিয়াকে সরাসরি বাদ দেওয়ার যে কোনও উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা অবশ্য সহজ হবে না। কারণ এক্ষেত্রে চীন, ভারত, সৌদি আরবের মতো দেশগুলো জোরালো বিরোধিতা করতে পারে।
জি-২০-এর পাশাপাশি জি-৭-ও একটি প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে আন্তঃসীমান্ত ঋণ পর্যন্ত সবকিছু সমন্বয়ে এই জোটের ভূমিকা রয়েছে। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, কানাডা ও জাপান। এই দেশগুলোর অনেকেই আবার জি-২০ এরও সদস্য।
এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন) থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তেল ও গ্যাস রফতানির মাধ্যমে রাশিয়া যে অর্থ আয় করে, সেই অর্থ আদায়ে দেশটি সুইফটের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। জার্মান সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাশিয়ার বড় কয়েকটি ব্যাংকে বৈদেশিক অর্থ লেনদেন বন্ধ করাই তাদের এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য।
বিশ্বের অধিকাংশ ব্যাংক নিজেদের মধ্যকার বার্তা আদান প্রদানের কাজে সুইফট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। এটি দিয়ে সরাসরি অর্থ পাঠানো যায় না, এটা শুধু অনলাইনে পেমেন্ট অর্ডার প্রেরণ করে। একটি ব্যাংক তাদের সুইফট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত অন্য একটি ব্যাংককে অর্থ পরিশোধের অনুরোধ পাঠায় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সেই আদেশ গ্রহণ করে সে অনুযায়ী কাজ করে। আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে তথ্য আদান প্রদানের জন্য সুইফটকে একটি নিরাপদ নেটওয়ার্ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এখন সুইফটের মতো জি-২০ থেকেও রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার আলোচনা জোরেশোরে চলছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ‘রাশিয়া জি-২০ এর সদস্য থাকার উপযুক্ত কিনা সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা যদি এখানে সদস্য হিসেবে থাকে তাহলে এটি একটি কম দরকারী একটি সংস্থায় পরিণত হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সপ্তাহে ব্রাসেলসে মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়াকে জি২০ থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটিতে রাশিয়ার জন্য স্বাভাবিক ব্যবসা হতে পারে না।’ তবে অন্য কোনও ঘোষণা দেওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ করবে বলেও জানান তিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জি-২০ থেকে কী ছিটকে পড়ছে রাশিয়া?

আপডেট সময় : ১০:৪৩:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর থেকেই একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ছে রাশিয়া। এমনকি খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এবার বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি-২০ থেকেও রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর জি-২০তে রাশিয়ার আর থাকা উচিত কিনা সেটি পর্যালোচনা করতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা।
ইউক্রেনের প্রতিবেশী পোল্যান্ডের পক্ষ থেকেও বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর এই জোট থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। ২২ মার্চ পোল্যান্ডের দেওয়া ওই প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে বিবেচনার কথা জানিয়েছে ওয়াশিংটন। জি-২০ থেকে রাশিয়াকে সরাসরি বাদ দেওয়ার যে কোনও উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা অবশ্য সহজ হবে না। কারণ এক্ষেত্রে চীন, ভারত, সৌদি আরবের মতো দেশগুলো জোরালো বিরোধিতা করতে পারে।
জি-২০-এর পাশাপাশি জি-৭-ও একটি প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে আন্তঃসীমান্ত ঋণ পর্যন্ত সবকিছু সমন্বয়ে এই জোটের ভূমিকা রয়েছে। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, কানাডা ও জাপান। এই দেশগুলোর অনেকেই আবার জি-২০ এরও সদস্য।
এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন) থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তেল ও গ্যাস রফতানির মাধ্যমে রাশিয়া যে অর্থ আয় করে, সেই অর্থ আদায়ে দেশটি সুইফটের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। জার্মান সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাশিয়ার বড় কয়েকটি ব্যাংকে বৈদেশিক অর্থ লেনদেন বন্ধ করাই তাদের এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য।
বিশ্বের অধিকাংশ ব্যাংক নিজেদের মধ্যকার বার্তা আদান প্রদানের কাজে সুইফট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। এটি দিয়ে সরাসরি অর্থ পাঠানো যায় না, এটা শুধু অনলাইনে পেমেন্ট অর্ডার প্রেরণ করে। একটি ব্যাংক তাদের সুইফট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত অন্য একটি ব্যাংককে অর্থ পরিশোধের অনুরোধ পাঠায় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সেই আদেশ গ্রহণ করে সে অনুযায়ী কাজ করে। আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে তথ্য আদান প্রদানের জন্য সুইফটকে একটি নিরাপদ নেটওয়ার্ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এখন সুইফটের মতো জি-২০ থেকেও রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার আলোচনা জোরেশোরে চলছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ‘রাশিয়া জি-২০ এর সদস্য থাকার উপযুক্ত কিনা সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা যদি এখানে সদস্য হিসেবে থাকে তাহলে এটি একটি কম দরকারী একটি সংস্থায় পরিণত হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সপ্তাহে ব্রাসেলসে মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়াকে জি২০ থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটিতে রাশিয়ার জন্য স্বাভাবিক ব্যবসা হতে পারে না।’ তবে অন্য কোনও ঘোষণা দেওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ করবে বলেও জানান তিনি।