ঢাকা ০২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

জিয়ার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় ও কবর নিয়ে যা বললেন তিন মন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:৫০:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা তা প্রমাণ করা এবং ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে তাঁর মরদেহ কবর দেওয়া হয়েছিল কিনা, সেই ছবি দেখা ও তা প্রমাণ করার আহ্বান এসেছে সরকারের তিন মন্ত্রীর কাছ থেকে। আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গতকাল পৃথক তিন অনুষ্ঠানে এসব আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রমাণ করতে হবে জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা: আইনমন্ত্রী : আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে প্রমাণ করতে হবে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কারণ তাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করতে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, সে কারণে তাকে (জিয়াউর রহমানকে) প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলা সঠিক হবে কিনা সেটা মনে হয় বিতর্কযোগ্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের আইন অনুষদের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার: আইনি পর্যালোচনা’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় রোববার (২৯ আগস্ট) ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম মাহবুবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথ ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আজকে দুঃখের সাথে বলতে হয়, কালকে একটি বিজ্ঞপ্তি পড়ছিলাম। এই খুনি জিয়াউর রহমান কালুরঘাটে প্রতিরোধ যদি গড়ে না তুলতো তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। আমি আজকে একটা কথা বলি, কালুরঘাটের প্রতিরোধের পরে ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছিল নাকি সৈন্যরা করেছিল সেটা নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা থাকতে পারে। কথা হচ্ছে কালুরঘাটের সেই প্রতিরোধের পরেও কিন্তু ৯ মাস যুদ্ধ চলেছিল। ‘আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সব দিক দিয়ে শত্রুকে পরাজিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন।’ আইনমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানকে প্রমাণ করতে হবে সে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কারণ হচ্ছে তার কর্মকা-ে ভারতে যাওয়া ছাড়া, জেড ফোর্স নামের একটা ভুয়া বাহিনী ছাড়া তার কর্মকা-ে আমরা কখনও দেখি নাই যে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করলেন। সে কারণে তাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলা সঠিক হবে কিনা সেটা মনে হয় বিতর্কযোগ্য। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, আইন অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান।
জিয়াউর রহমানের লাশের ছবি দেখতে চাই: আ ক ম মোজাম্মেল হক : রাষ্ট্রপ্রধানদের সব কার্যক্রম সবসময় স্থিরচিত্র কিংবা ভিডিওচিত্রে ধারণ করা হয়ে থাকে। জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর যদি তার লাশের ছবি থাকে তাহলে তা দেখানোর আহ্বান জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। যদি তারা ছবি দেখাতে পারেন তাহলে মাফ চাইবো। আর যদি চন্দ্রিমা উদ্যানের কবরে মরদেহ পাওয়া যায় বা রয়েছে বলে বিএনপি যে দাবি করছে- তাহলে লাশের ডিএনএ টেস্ট করা হোক। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ওলামা-মাশায়েখ ঐক্য জোট আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যারা পর্দার আড়াল থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনায় জড়িত, যারা মদদ যুগিয়েছে, তারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সাথে দেশি-বিদেশি কারা কারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করা হোক। তদন্ত করে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হোক। রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু যা করেছিলেন তা ইসলামের পরিপূরক, সাংঘর্ষিক নয়। মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ধর্ম এক জিনিস, রাষ্ট্রপরিচালনা আরেক জিনিস। রাষ্ট্র আইন পরিবর্তন করে, সংবিধান পরিবর্তন করে। রাষ্ট্রের সংবিধান পরিবর্তন করা যায়, আল্লাহর আইন পরিবর্তন করা যায় না। সংবিধান পরিবর্তন করা যায় কিন্তু কোরান পরিবর্তন করা যাবে না। কিছু লোক মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ধর্মপ্রাণ মানুষকে ইসলামের দোহাই দিয়ে মিথ্যাচার করছে। বঙ্গবন্ধু মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠন করে সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করেছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন বঙ্গবন্ধু। অথচ বঙ্গবন্ধুকে ইসলামের শত্রু বলে আখ্যা দিয়েছে একটি চক্র। সৎ লোকের শাসন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চার বছর দুর্নীতিতে পর্যদুস্ত ছিল বিএনপি-জামায়াত সরকার। এরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ইসলামের নাম ব্যবহার করেছে।
অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ জিয়ার নামে ঢাকায় কবর দেওয়া হয়: তথ্যমন্ত্রী : চট্টগ্রাম থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ নিয়ে এসে ঢাকায় জিয়াউর রহমানের নামে কবর দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃতি এবং স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তিকে নিয়ে রাজনীতি চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে হবে। স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে বিএনপি। লাশ নিয়ে কথা হচ্ছে। ঘটনার পর জিয়াউর রহমানের লাশ খুঁজে বের করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে রাঙ্গুনিয়ায় তিনটি কবরের মধ্য থেকে একটি লাশ জিয়াউর রহমানের নামে ঢাকায় এনে কবর দেওয়া হয়।’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়কমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘কারও কবর যদি অন্যের নামে চালিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তা অনৈসলামিক দলিল বলে আপনারা প্রতারণা করেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অপচেষ্টা ক্ষান্ত হয়নি। খলনায়কদের নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। জিয়ার আহ্বানে নয়, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে তখন কর্মরত, সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করার জন্য যাচ্ছিলেন। সোয়াত জাহাজ থেকে যেন অস্ত্র খালাস করতে না পারে, সে জন্য রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছিল। বাধাগ্রস্ত হয় তিনি ফেরত আসেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘‘২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর সমগ্র বাংলাদেশে তা প্রচার করা হয়। অনেকে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন। চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা ২৭ মার্চ মনে করেন, একজন সেনা সদস্য দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করালে একটি যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব মনে হবে। পরে ঘোষণা পাঠ করানোর জন্য জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে ভুলভাবে পাঠ করেছিলেন জিয়াউর রহমান। প্রথমে নিজের নামে ভুলভাবে ঘোষণাপত্রটি উপস্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে ‘অন বিহাফ অব’ কথাটি যুক্ত করে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। সেই রেকর্ড রয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ অফিসের বেয়ারা নুরুল হক জীবন হাতে নিয়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন। স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়ে তাহলে নুরুল হককে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্যই বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর জন্যই। মালয়েশিয়া আমাদের দেশ থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল। কিন্তু বর্তমানে অনেক এগিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০/১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যেতো। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। দারিদ্র্যের হার কমেছে। খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। বাংলাদেশে এখন ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ দেখা যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে এটি হয়েছে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জিয়ার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় ও কবর নিয়ে যা বললেন তিন মন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৫০:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা তা প্রমাণ করা এবং ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে তাঁর মরদেহ কবর দেওয়া হয়েছিল কিনা, সেই ছবি দেখা ও তা প্রমাণ করার আহ্বান এসেছে সরকারের তিন মন্ত্রীর কাছ থেকে। আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গতকাল পৃথক তিন অনুষ্ঠানে এসব আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রমাণ করতে হবে জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা: আইনমন্ত্রী : আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে প্রমাণ করতে হবে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কারণ তাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করতে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, সে কারণে তাকে (জিয়াউর রহমানকে) প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলা সঠিক হবে কিনা সেটা মনে হয় বিতর্কযোগ্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের আইন অনুষদের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার: আইনি পর্যালোচনা’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় রোববার (২৯ আগস্ট) ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম মাহবুবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথ ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আজকে দুঃখের সাথে বলতে হয়, কালকে একটি বিজ্ঞপ্তি পড়ছিলাম। এই খুনি জিয়াউর রহমান কালুরঘাটে প্রতিরোধ যদি গড়ে না তুলতো তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। আমি আজকে একটা কথা বলি, কালুরঘাটের প্রতিরোধের পরে ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছিল নাকি সৈন্যরা করেছিল সেটা নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা থাকতে পারে। কথা হচ্ছে কালুরঘাটের সেই প্রতিরোধের পরেও কিন্তু ৯ মাস যুদ্ধ চলেছিল। ‘আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সব দিক দিয়ে শত্রুকে পরাজিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন।’ আইনমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানকে প্রমাণ করতে হবে সে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কারণ হচ্ছে তার কর্মকা-ে ভারতে যাওয়া ছাড়া, জেড ফোর্স নামের একটা ভুয়া বাহিনী ছাড়া তার কর্মকা-ে আমরা কখনও দেখি নাই যে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করলেন। সে কারণে তাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলা সঠিক হবে কিনা সেটা মনে হয় বিতর্কযোগ্য। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, আইন অনুষদের ডিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান।
জিয়াউর রহমানের লাশের ছবি দেখতে চাই: আ ক ম মোজাম্মেল হক : রাষ্ট্রপ্রধানদের সব কার্যক্রম সবসময় স্থিরচিত্র কিংবা ভিডিওচিত্রে ধারণ করা হয়ে থাকে। জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর যদি তার লাশের ছবি থাকে তাহলে তা দেখানোর আহ্বান জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। যদি তারা ছবি দেখাতে পারেন তাহলে মাফ চাইবো। আর যদি চন্দ্রিমা উদ্যানের কবরে মরদেহ পাওয়া যায় বা রয়েছে বলে বিএনপি যে দাবি করছে- তাহলে লাশের ডিএনএ টেস্ট করা হোক। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ওলামা-মাশায়েখ ঐক্য জোট আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যারা পর্দার আড়াল থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনায় জড়িত, যারা মদদ যুগিয়েছে, তারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সাথে দেশি-বিদেশি কারা কারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করা হোক। তদন্ত করে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হোক। রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু যা করেছিলেন তা ইসলামের পরিপূরক, সাংঘর্ষিক নয়। মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ধর্ম এক জিনিস, রাষ্ট্রপরিচালনা আরেক জিনিস। রাষ্ট্র আইন পরিবর্তন করে, সংবিধান পরিবর্তন করে। রাষ্ট্রের সংবিধান পরিবর্তন করা যায়, আল্লাহর আইন পরিবর্তন করা যায় না। সংবিধান পরিবর্তন করা যায় কিন্তু কোরান পরিবর্তন করা যাবে না। কিছু লোক মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ধর্মপ্রাণ মানুষকে ইসলামের দোহাই দিয়ে মিথ্যাচার করছে। বঙ্গবন্ধু মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠন করে সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করেছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন বঙ্গবন্ধু। অথচ বঙ্গবন্ধুকে ইসলামের শত্রু বলে আখ্যা দিয়েছে একটি চক্র। সৎ লোকের শাসন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চার বছর দুর্নীতিতে পর্যদুস্ত ছিল বিএনপি-জামায়াত সরকার। এরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ইসলামের নাম ব্যবহার করেছে।
অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ জিয়ার নামে ঢাকায় কবর দেওয়া হয়: তথ্যমন্ত্রী : চট্টগ্রাম থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ নিয়ে এসে ঢাকায় জিয়াউর রহমানের নামে কবর দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃতি এবং স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তিকে নিয়ে রাজনীতি চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে হবে। স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে বিএনপি। লাশ নিয়ে কথা হচ্ছে। ঘটনার পর জিয়াউর রহমানের লাশ খুঁজে বের করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে রাঙ্গুনিয়ায় তিনটি কবরের মধ্য থেকে একটি লাশ জিয়াউর রহমানের নামে ঢাকায় এনে কবর দেওয়া হয়।’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়কমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘কারও কবর যদি অন্যের নামে চালিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তা অনৈসলামিক দলিল বলে আপনারা প্রতারণা করেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অপচেষ্টা ক্ষান্ত হয়নি। খলনায়কদের নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। জিয়ার আহ্বানে নয়, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে তখন কর্মরত, সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করার জন্য যাচ্ছিলেন। সোয়াত জাহাজ থেকে যেন অস্ত্র খালাস করতে না পারে, সে জন্য রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছিল। বাধাগ্রস্ত হয় তিনি ফেরত আসেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘‘২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর সমগ্র বাংলাদেশে তা প্রচার করা হয়। অনেকে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন। চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা ২৭ মার্চ মনে করেন, একজন সেনা সদস্য দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করালে একটি যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব মনে হবে। পরে ঘোষণা পাঠ করানোর জন্য জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে ভুলভাবে পাঠ করেছিলেন জিয়াউর রহমান। প্রথমে নিজের নামে ভুলভাবে ঘোষণাপত্রটি উপস্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে ‘অন বিহাফ অব’ কথাটি যুক্ত করে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। সেই রেকর্ড রয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ অফিসের বেয়ারা নুরুল হক জীবন হাতে নিয়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন। স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়ে তাহলে নুরুল হককে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্যই বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর জন্যই। মালয়েশিয়া আমাদের দেশ থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল। কিন্তু বর্তমানে অনেক এগিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০/১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যেতো। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। দারিদ্র্যের হার কমেছে। খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। বাংলাদেশে এখন ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ দেখা যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে এটি হয়েছে।’