নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কথায় যদি দেশ স্বাধীন হতো, তাহলে প্রতিটি এলাকার অলিতে-গলিতে একটি করে দেশ থাকতো বলে মন্তব্য করেছেন উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
গতকাল বুধবার (১৯ জুন) তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস’ উপলক্ষে ‘ইতিহাসের গতিধারায় বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেয়র অতিক বলেন, জিয়াউর রহমান বলে গেল, আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল? তাহলে তো অলিতে গলিতে একটা করে দেশ তৈরি হয়ে যেত। একটা দেশ স্বাধীন করা এত সোজা না। দেশ স্বাধীন করতে গেলে নেতার প্রয়োজন আছে। বিএনপি স্বীকার না করলেও কিন্তু ইতিহাস বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অবদান স্বীকার করে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, একটি দেশ স্বাধীন হতে গেলে ইতিহাস লাগে। পরাধীন থেকে স্বাধীন হতে গেলে অনেক ত্যাগ লাগে। এবং দূরদর্শী নেতা লাগে, সেই নেতা হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই নেতার যে দূরদর্শিতার তার প্রমাণ, সেটি কিন্তু ইতিহাস থেকে পাওয়া যায়। এই ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে তিনি ও তার পরিবারকে কি কঠিন দিন পার করতে হয়েছে। এই যে ইতিহাসের পুরো চিত্রটা ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে প্রদর্শন করা হয়েছে তা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ২৬ মার্চ রাতে জাতির জনকের যে চিঠি সেটি পাঠ করার মাধ্যমে কিন্তু স্বাধীনতা আসেনি। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে আসলে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এখানে এলে প্রমাণ পাওয়া যায় কি করলে একটি দেশের স্বাধীনতা পাওয়া যায়। এটি দেখার পর আমি চিন্তা করেছি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিচে কিছু খেলার জোন তৈরি করব এবং তার সঙ্গেই এই ধরনের ইতিহাসের চিত্র প্রদর্শনী করা হবে। যার মাধ্যমে শিশুরা খেলার পাশাপাশি সঠিক ইতিহাস জানবে। তেজগাঁওয়ের এই প্রদর্শনী ঢাকা বিভিন্ন স্থানে তৈরি করার প্রয়োজন আছে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় ইতিহাস বিক্রিত করা হয়েছে। দীর্ঘ এমন সময় গিয়েছে যে এই দেশে জয় বাংলা বলা যায়নি। দীর্ঘ ২১ বছর ইতিহাসকে বিকৃত করে বলা হয়েছিল, ২৬ মার্চ ঘোষণার মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল, যেটা বিএনপি এখনো বলছে। বিএনপি কখনো স্বীকার করে না বঙ্গবন্ধুর নির্দেশের ফলে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল।
সরানো হবে তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড: মেয়র আতিক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীর জন্য গলার কাটা হয়েছিল। এটি সরানোর জন্য তেজগাঁও আনিসুল হক সড়কের পাশে ১৫ বিঘা জমি বরাদ্দ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার (১৯ জুন) তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে ইতিহাসের গতিধারায় বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এই স্ট্যান্ডে পাঁচ হাজার ৮০০ ট্র্যাক থাকে। তেজগাঁও থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে ১৫ বিঘা জমিতে একটি উন্নত ও বহুতল ট্রাক স্ট্যান্ড করার মাধ্যমে ঢাকা শহরের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারব। মেয়র আতিক বলেন, আজ পর্যন্ত সবাই কিন্তু বলেছে ট্রাক স্ট্যান্ডের জন্য জায়গা দেব কিন্তু কখনো দেওয়া হয়নি। ১৫ বিঘা জায়গা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা শহরের মধ্যে ট্রাক এবং বাস রাখার জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। কবে থেকে এই ১৫ বিঘা জায়গায় ট্রাক রাখা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই যদি এই জায়গার দেয়াল ভেঙে দেওয়া হয় তাহলে কাল থেকেই এখানে ট্রাক থাকতে পারবে। কিন্তু এখনই এখানে ট্রাক না রেখে, আমরা ট্রাক চালকদের সঙ্গে কথা বলছি কি ধরনের ডিজাইন তারা চান ট্রাক রাখার জন্য। এখানে ট্রাক যারা রাখবেন তাদের বিশ্রামাগার কোথায় হবে, ট্রাক কোথায় রাখবেন এই সব কিছু নিয়ে একটি মাল্টি প্ল্যান আমরা তৈরি করছি। ট্রাক রাখার জন্য আগামী মাস থেকেই জায়গার একটি অংশ খুলে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ। সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।