বিদেশের খবর ডেস্ক : দীর্ঘ ১৬ মাস জিম্মি হিসেবে গাজায় থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন ৩ ইসরায়েলি জিম্মি— সাশা ত্রৌফানভ, সাগুই দেকেল-শেন এবং আয়ার হর্ন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে যাদেরকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে এসেছিল গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস, তাদের মধ্যে এই ৩ জনও ছিলেন। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে সাশা ত্রৌফানভ, সাগুই দেকেল-শেন এবং আয়ার হর্নকে সাদা রঙের গাড়িতে নিয়ে আসে হামাসের সামরিক বিভাগ আল কাসেম ব্রিগেডের একটি দল।
সেখানে একটি অস্থায়ী মঞ্চ আগে থেকেই প্রস্তুত করা ছিল, আর সেই মঞ্চকে ঘিরে ছিল শতাধিক ফিলিস্তিনি জনতা। মঞ্চে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেডক্রসের প্রতিনিধিদের কাছে জিম্মিদের হস্তান্তর সম্পর্কিত নথিতে স্বাক্ষর করেন হামাসের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য। তারপর জিম্মিদের সেই মঞ্চে তোলা হয় এবং উপস্থিত ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার অনুরোধ জানানো হয়। জিম্মিদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ হওয়ার পর রেডক্রসের গাড়িতে তাদেরকে রাফা ক্রসিং এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। আগে থেকেই সেখানে অপেক্ষা করছিলেন আইডিএফ এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের কর্মকর্তারা। রেড ক্রসের প্রতিনিধিরা কর্মকর্তাদের হাতে জিম্মিদের সোপর্দ করেন। তারপর আইডিএফের গাড়িতে চেপে ইসরায়েলে প্রবেশ করেন তিন জিম্মি।
তিন জিম্মির পরিবারের সদস্যরা উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছিলেন তাদের জন্য। স্বজনদের সঙ্গে তাদের সাক্ষাতের পর আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ভূখণ্ডে ঢুকে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ জনকে হত্যা করে হামাসের যোদ্ধারা, সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায়ে ২৫১ জনকে। হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধারে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। টানা ১৫ মাস ধরে চলা সেই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজারেরও বেশি এবং পুরোপুরি ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের ব্যাপক চাপে অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস এবং ইসরায়েল। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে গত ৫ দফায় মোট ১৬ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস, বিনিময়ে ৭৬৬ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল