নিজস্ব প্রতিবেদক: নোবেল বিজয়ী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি গভীর দুঃখের সঙ্গে নোবেল বিজয়ী প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মৃত্যুতে আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
চিঠিতে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, ‘জিমি কার্টার একজন অসাধারণ নেতা, মানবাধিকারের চ্যাম্পিয়ন এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি ও গণতন্ত্রের জন্য অক্লান্ত প্রবক্তা। প্রেসিডেন্ট কার্টার ছিলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে এবং তারপরও বহুমাত্রিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জোরদার ও বিস্তৃত হয়। বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, সুশাসন নিশ্চিত করা এবং গণতন্ত্রের অগ্রগতিতে কার্টার সেন্টারের মাধ্যমে তার কাজ বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা এবং আবেগের সাক্ষ্য দেয়। আমরা ১৯৮৬ সালে তার বাংলাদেশ সফরের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি এবং এটি ছিল আমাদের জনগণের জন্য এক মহান অনুপ্রেরণার উৎস।’
চিঠিতে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, ‘প্রেসিডেন্ট কার্টার শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব রাজনীতির একজন আইকনিক ব্যক্তিত্বই ছিলেন না, তিনি আমার একজন প্রিয় বন্ধুও ছিলেন। বছরের পর বছর ধরে নোবেল বিজয়ীদের সমাবেশে অসংখ্যবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার মাধ্যমে বিশেষ সম্মান আমার হয়েছে। মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি তার অবিচল অঙ্গীকার আমাকে সবসময় উৎসাহিত করেছে। তার গভীর নম্রতা, প্রজ্ঞা এবং জনগণের ক্ষমতায়নে দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের কথোপকথনের মূলে ছিল। তার উত্তরাধিকার আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’
চিঠিতে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে আমি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট কার্টারের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরাও তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
শান্তিতে নোবেলজয়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার রোববার (২৯ ডিসেম্বর) মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। জিমি কার্টার মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট ছিলেন। গত অক্টোবরে ১০০তম জন্মদিন উদযাপন করেন তিনি।
জিমি কার্টার ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এক মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জর্জিয়ার প্লেইন্সে তার বাড়িতে ‘হসপিস কেয়ার’-এ ছিলেন। সেখানে তিনি তার স্ত্রী রোজালিন কার্টারের সঙ্গে থাকতেন। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর মারা যান তার স্ত্রী।
জিমি কার্টার চার সন্তান ও ১১ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন। তিনি বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার বিষয়ক কাজের জন্য ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।