ঢাকা ০৭:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ক্যাম্পাসে গাছ কাটার মহোৎসব

  • আপডেট সময় : ১২:০৪:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: গ্রীষ্মকালীন অবকাশ ও ঈদুল আজহার ২২ দিনের ছুটিতে বন্ধ রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। আর এ সুযোগে দুই শতাধিক গাছ কেটে কলা ও মানবিকী অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন ও চারুকলা অনুষদের ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তবে গাছ কেটে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক মানববন্ধন, মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। গত রোববার (২ জুন) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের পেছনে কলা ও মানবিকী অনুষদ সম্প্রসারিত ভবন ও আল-বেরুনী হলের সম্প্রসারিত ভবনের সামনে চারুকলা অনুষদের ভবন নির্মাণের জন্য গাছ কাটা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, এক্সকেভেটর দিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। দুই ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় দুই শতাধিক গাছ কাটা পড়েছে। এছাড়া শতাধিক ছোট বড় গাছ কাটা পড়বে। গাছ কাটার সময় অনুষদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এদিকে গাছ কাটার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানান ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মী ও প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। পরে তারা এর প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন জাবির সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ছুটি হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কাটার সংস্কৃতি বহু পুরোনো। এবারেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। শিক্ষার্থীরা হলে নেই এ সুযোগে গাছ কাটার উৎসবে মেতেছে তারা। আজকে গাছ কাটার সময় চারুকলা বিভাগ নিজেদের শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। ভবন নির্মাণে আমাদের আপত্তি নেই, আমাদের একটাই দাবি মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে ভবন নির্মাণ করা হোক।
অন্যদিকে অবিলম্বে মাস্টারপ্ল্যানের টেন্ডারের দরপত্র আহ্বান করাসহ তিনদফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের আরেক অংশ। রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি, প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য অনন্য বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য। তবে যখন সেটা ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপন্ন হয়, তেমন কাজ কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়। শিক্ষা ও গবেষণার জন্য অবশ্যই ভবনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেটা প্রাণ-প্রকৃতি ও সৌন্দর্যকে ধ্বংস করে নেয়। এদিকে চারুকলা অনুষদ ভবনের প্রকল্প পরিচালক ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজ উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নির্ধারিত জায়গাতেই ভবন নির্মাণ করছি। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কিছুই আমরা করছি না। এছাড়া যে গাছগুলো কাটা হয়েছে সেই গাছগুলো আমরা নিজেরাই রোপণ করে পরিচর্যা করবো। সব অংশীজনদের সুপারিশকে গ্রহণ করে এবং তাদের নিয়ে আমরা একটা টিম তৈরি করবো যাতে তারা আমাদের অগ্রগতিতে লক্ষ্য রাখতে পারেন। সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ক্যাম্পাসে গাছ কাটার মহোৎসব

আপডেট সময় : ১২:০৪:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: গ্রীষ্মকালীন অবকাশ ও ঈদুল আজহার ২২ দিনের ছুটিতে বন্ধ রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। আর এ সুযোগে দুই শতাধিক গাছ কেটে কলা ও মানবিকী অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন ও চারুকলা অনুষদের ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তবে গাছ কেটে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক মানববন্ধন, মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। গত রোববার (২ জুন) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের পেছনে কলা ও মানবিকী অনুষদ সম্প্রসারিত ভবন ও আল-বেরুনী হলের সম্প্রসারিত ভবনের সামনে চারুকলা অনুষদের ভবন নির্মাণের জন্য গাছ কাটা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, এক্সকেভেটর দিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। দুই ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় দুই শতাধিক গাছ কাটা পড়েছে। এছাড়া শতাধিক ছোট বড় গাছ কাটা পড়বে। গাছ কাটার সময় অনুষদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এদিকে গাছ কাটার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানান ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মী ও প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। পরে তারা এর প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন জাবির সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ছুটি হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কাটার সংস্কৃতি বহু পুরোনো। এবারেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। শিক্ষার্থীরা হলে নেই এ সুযোগে গাছ কাটার উৎসবে মেতেছে তারা। আজকে গাছ কাটার সময় চারুকলা বিভাগ নিজেদের শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। ভবন নির্মাণে আমাদের আপত্তি নেই, আমাদের একটাই দাবি মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে ভবন নির্মাণ করা হোক।
অন্যদিকে অবিলম্বে মাস্টারপ্ল্যানের টেন্ডারের দরপত্র আহ্বান করাসহ তিনদফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের আরেক অংশ। রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি, প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য অনন্য বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য। তবে যখন সেটা ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপন্ন হয়, তেমন কাজ কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়। শিক্ষা ও গবেষণার জন্য অবশ্যই ভবনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেটা প্রাণ-প্রকৃতি ও সৌন্দর্যকে ধ্বংস করে নেয়। এদিকে চারুকলা অনুষদ ভবনের প্রকল্প পরিচালক ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজ উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নির্ধারিত জায়গাতেই ভবন নির্মাণ করছি। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কিছুই আমরা করছি না। এছাড়া যে গাছগুলো কাটা হয়েছে সেই গাছগুলো আমরা নিজেরাই রোপণ করে পরিচর্যা করবো। সব অংশীজনদের সুপারিশকে গ্রহণ করে এবং তাদের নিয়ে আমরা একটা টিম তৈরি করবো যাতে তারা আমাদের অগ্রগতিতে লক্ষ্য রাখতে পারেন। সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।