ঢাকা ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, জেলেদের মুখে হাসি

  • আপডেট সময় : ০২:০৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ জুলাই ২০২২
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : সাগরে মাছ ধরার ওপর থাকা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কক্সবাজারের জেলেরা। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। এছাড়াও জেলেদের জালে ধরা পড়ছে সুরমা, লাল পোয়া, রূপচাঁদাসহ নানা প্রজাতির মাছ।
এদিকে সাগরে প্রথম দিন ৭ ঘণ্টা মাছ ধরে উপকূলে ফিরে এসেছে অনেক ট্রলার। এসব ট্রলারে কাজ করা জেলেরা জানান, তারা এক জালেই ৩ হাজার পিস ইলিশ পেয়েছেন। সামনের দিনগুলোতেও এভাবে মাছ পাওয়ার আশা করছেন জেলেরা। শহরের নুনিয়ারছড়া ফিশারি ঘাটের এফবি আল্লাহর দান ফিশিং বোটের জেলে জালাল উদ্দিন গতকাল রোববার বলেন, ‘শনিবার রাত ১২টার পরে সাগরে গিয়ে মাছ ধরতে শুরু করি। দুই মাস পর সাগারে গিয়ে মাছ ধরেছি। অনেক মাছ পেয়েছি। অনেক খুশি লাগছে।’
এফবি শাহরিয়া নামের ফিশিং ট্রলারের মাঝি হুময়ায়ূন কাদের বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় আশা করেছিলাম বেশি মাছ পাবো। অবশেষে তাই হয়েছে। গত রাতে সাগরে গেলাম। জাল তুলে দেখি ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। দেখে অনেক খুশি হলাম। পরিবারের টাকা পাঠাতে পারবো তাই আরো বেশি খুশি লাগছে।’
এদিকে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের জেলেদের পাশাপাশি মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যেও কর্ম ব্যস্ততার শেষ নেই। চাহিদা মতো মাছ কিনে বড় আড়তে পাঠানোর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। ফিশারি ঘাটের ব্যবসায়ী সৈয়দ হোসাইন বলেন, ‘ইলিশের সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে আমরা মাছ কিনছি। তবে ছোট সাইজের মাছ নেই। বড় সাইজের মাছ দেখা যাচ্ছে। এগুলো কেজিতে ১১০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত ক্রয় করছি। মণ হিসেবে ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার। আর গণনা করে নিলে ১০০ ইলিশের দাম ১৬ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকায় ক্রয় করছি আমরা। বেশি মাছ পাওয়া গেলে দাম একটু কমবে।’
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার পরে জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অনেক ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে গেছে। তারা কাঙ্খিত পরিমাণ মাছও পেয়েছে। তাদের মাঝে খুশি বিরাজ করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরায় সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার করণে সাগরে মাছের ঘনত্ব বেড়ে যায়। ফলে অনেকদিন পর সাগরে জাল ফেলে বেশি মাছ পাওয়া যায়। আশা রাখি সামনের দিনগুলোতে বেশি পরিমাণে মাছ পাবেন জেলেরা।’ এদিকে অনেক জেলে অভিযোগ করে জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই অনেকে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে সাগরে যান। সেখানে এক সপ্তাহ অবস্থান করে মাছ নিয়ে তারা নিষেধাজ্ঞার শেষের দিনে তীরে ফিরে এসেছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী কক্সবাজারে জেলের সংখ্যা ৬৩ হাজার ১৯৩ জন। বোট মালিক সমিতি বলছে, ৩ লাখের বেশি মানুষ মৎস্য পেশায় জড়িত।
পাথরঘাটা, (বরগুনা): দীর্ঘ ৬৫ দিন অলস সময় কাটিয়ে গত শনিবার (২৩ জুলাই) রাত ১২টার পর মাছ শিকারের জন্য নেমে পড়েন পাথরঘাটার উপকূলের জেলেরা। প্রথম দিনেই জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। জালভর্তি মাছ পাওয়ায় জেলেদের মুখে হাসি। এ যেন স্বপ্নের যাত্রা শেষে সোনার হরিণ পাওয়া। তড়িঘড়ি করে নদী ও সাগর মোহনায় মাছ শিকার করে প্রথম দিন বাজার ধরেন জেলেরা। দীর্ঘদিন পর জালভর্তি মাছ নিয়ে বিএফডিসি ঘাটে এলে ট্রলার মালিক, অনেক আড়তদার ও জেলেদের মাঝে আনন্দ উল্লাস দেখা গেছে। ফিরে আসা জেলে আবদুল জলিল, আব্বাস মিয়া বলেন, এক খেও দিছি, যা পাইছি তড়িঘড়ি করে ভালো দাম পাওয়ার জন্য প্রথম বাজার ধরলাম। দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, মৎস্য ঘাটে ২০ থেকে ২৫টি মাছ ধরা ট্রলার নোঙর করে আছে। ওই ট্রলার থেকে ঘাট শ্রমিকরা মাছ উঠাছেন অপরদিকে টল সেটে মাছ বিক্রি হচ্ছে।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, প্রথম দিনে অন্তত ২৫টি মাছ ধরা ট্রলার ঘাটে এসেছে ভালো মাছ পাওয়া গেছে। এতে ভালো দামও পাওয়া যাবে। বিএফডিসির মার্কেটিং অফিসার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, প্রথম দিনে বিএফডিসি মৎস্য বাজারে মোট ১১ হাজার ৮৬৯ কেজি মাছ বিক্রি হয়েছে। তার মধ্যে ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ৭৮০ কেজি অন্যান্য মাছ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৮৯ কেজি। মোট মাছ বিক্রি হয়েছে ৬৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ টাকার। এর মধ্যে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৮৪ হাজার ৪৬০ টাকা। তিনি আরও বলেন, এখন প্রতিদিনই যেমন ট্রলারের সংখ্যা বাড়বে, মাছের সংখ্যা বাড়বে, তেমনি রাজস্ব বাড়বে আশাবাদী।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গভীর সংস্কার না করলে স্বৈরাচার ফিরে আসবে

জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, জেলেদের মুখে হাসি

আপডেট সময় : ০২:০৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ জুলাই ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : সাগরে মাছ ধরার ওপর থাকা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কক্সবাজারের জেলেরা। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। এছাড়াও জেলেদের জালে ধরা পড়ছে সুরমা, লাল পোয়া, রূপচাঁদাসহ নানা প্রজাতির মাছ।
এদিকে সাগরে প্রথম দিন ৭ ঘণ্টা মাছ ধরে উপকূলে ফিরে এসেছে অনেক ট্রলার। এসব ট্রলারে কাজ করা জেলেরা জানান, তারা এক জালেই ৩ হাজার পিস ইলিশ পেয়েছেন। সামনের দিনগুলোতেও এভাবে মাছ পাওয়ার আশা করছেন জেলেরা। শহরের নুনিয়ারছড়া ফিশারি ঘাটের এফবি আল্লাহর দান ফিশিং বোটের জেলে জালাল উদ্দিন গতকাল রোববার বলেন, ‘শনিবার রাত ১২টার পরে সাগরে গিয়ে মাছ ধরতে শুরু করি। দুই মাস পর সাগারে গিয়ে মাছ ধরেছি। অনেক মাছ পেয়েছি। অনেক খুশি লাগছে।’
এফবি শাহরিয়া নামের ফিশিং ট্রলারের মাঝি হুময়ায়ূন কাদের বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় আশা করেছিলাম বেশি মাছ পাবো। অবশেষে তাই হয়েছে। গত রাতে সাগরে গেলাম। জাল তুলে দেখি ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। দেখে অনেক খুশি হলাম। পরিবারের টাকা পাঠাতে পারবো তাই আরো বেশি খুশি লাগছে।’
এদিকে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের জেলেদের পাশাপাশি মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যেও কর্ম ব্যস্ততার শেষ নেই। চাহিদা মতো মাছ কিনে বড় আড়তে পাঠানোর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। ফিশারি ঘাটের ব্যবসায়ী সৈয়দ হোসাইন বলেন, ‘ইলিশের সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে আমরা মাছ কিনছি। তবে ছোট সাইজের মাছ নেই। বড় সাইজের মাছ দেখা যাচ্ছে। এগুলো কেজিতে ১১০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত ক্রয় করছি। মণ হিসেবে ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার। আর গণনা করে নিলে ১০০ ইলিশের দাম ১৬ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকায় ক্রয় করছি আমরা। বেশি মাছ পাওয়া গেলে দাম একটু কমবে।’
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার পরে জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অনেক ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে গেছে। তারা কাঙ্খিত পরিমাণ মাছও পেয়েছে। তাদের মাঝে খুশি বিরাজ করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরায় সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার করণে সাগরে মাছের ঘনত্ব বেড়ে যায়। ফলে অনেকদিন পর সাগরে জাল ফেলে বেশি মাছ পাওয়া যায়। আশা রাখি সামনের দিনগুলোতে বেশি পরিমাণে মাছ পাবেন জেলেরা।’ এদিকে অনেক জেলে অভিযোগ করে জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই অনেকে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে সাগরে যান। সেখানে এক সপ্তাহ অবস্থান করে মাছ নিয়ে তারা নিষেধাজ্ঞার শেষের দিনে তীরে ফিরে এসেছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী কক্সবাজারে জেলের সংখ্যা ৬৩ হাজার ১৯৩ জন। বোট মালিক সমিতি বলছে, ৩ লাখের বেশি মানুষ মৎস্য পেশায় জড়িত।
পাথরঘাটা, (বরগুনা): দীর্ঘ ৬৫ দিন অলস সময় কাটিয়ে গত শনিবার (২৩ জুলাই) রাত ১২টার পর মাছ শিকারের জন্য নেমে পড়েন পাথরঘাটার উপকূলের জেলেরা। প্রথম দিনেই জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। জালভর্তি মাছ পাওয়ায় জেলেদের মুখে হাসি। এ যেন স্বপ্নের যাত্রা শেষে সোনার হরিণ পাওয়া। তড়িঘড়ি করে নদী ও সাগর মোহনায় মাছ শিকার করে প্রথম দিন বাজার ধরেন জেলেরা। দীর্ঘদিন পর জালভর্তি মাছ নিয়ে বিএফডিসি ঘাটে এলে ট্রলার মালিক, অনেক আড়তদার ও জেলেদের মাঝে আনন্দ উল্লাস দেখা গেছে। ফিরে আসা জেলে আবদুল জলিল, আব্বাস মিয়া বলেন, এক খেও দিছি, যা পাইছি তড়িঘড়ি করে ভালো দাম পাওয়ার জন্য প্রথম বাজার ধরলাম। দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, মৎস্য ঘাটে ২০ থেকে ২৫টি মাছ ধরা ট্রলার নোঙর করে আছে। ওই ট্রলার থেকে ঘাট শ্রমিকরা মাছ উঠাছেন অপরদিকে টল সেটে মাছ বিক্রি হচ্ছে।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, প্রথম দিনে অন্তত ২৫টি মাছ ধরা ট্রলার ঘাটে এসেছে ভালো মাছ পাওয়া গেছে। এতে ভালো দামও পাওয়া যাবে। বিএফডিসির মার্কেটিং অফিসার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, প্রথম দিনে বিএফডিসি মৎস্য বাজারে মোট ১১ হাজার ৮৬৯ কেজি মাছ বিক্রি হয়েছে। তার মধ্যে ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ৭৮০ কেজি অন্যান্য মাছ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৮৯ কেজি। মোট মাছ বিক্রি হয়েছে ৬৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ টাকার। এর মধ্যে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৮৪ হাজার ৪৬০ টাকা। তিনি আরও বলেন, এখন প্রতিদিনই যেমন ট্রলারের সংখ্যা বাড়বে, মাছের সংখ্যা বাড়বে, তেমনি রাজস্ব বাড়বে আশাবাদী।