ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

জামিন পাওয়া মানবাধিকার, বলছেন আইন বিশ্লেষকরা

  • আপডেট সময় : ১২:১৭:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্য‍াশা ডেস্ক: সাংবিধানিক অধিকার ও আইনের অধীনে অপরাধ ভেদে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়ার বিধান হলো ‘জামিন’। জামিন মঞ্জুর করার সময় আদালত অপরাধের গুরুত্ব, অভিযুক্ত ব্যক্তির বয়স, আচরণ ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে থাকেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দায়ের হওয়া মামলাগুলোতে আসামিদের জামিনের ক্ষেত্রে তার কতটা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে— এ প্রশ্ন আইনজীবী ও আইন বিশ্লেষকদের।

বর্তমানে জামিন না হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে বলে মনে করেন মানবাধিকারকর্মী ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। জামিন না হওয়ার কারণগুলো তুলে ধরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আইনের শাসনের দুর্বলতা, বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের ঘটনা, এখনো দেশের অধস্তন আদালতসহ বিচার বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করা, বিভিন্ন জেলার আদালতগুলোতে সেখানকার দলীয় আইনজীবীদের ‘মব সন্ত্রাস’ চলমান থাকায় জামিনযোগ্য অপরাধ বা অপরাধ করেননি বলে বিশ্বাস করার সুযোগ থাকলেও তারা (আসামিরা) জামিন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’’

মানবাধিকার-বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস এবং পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ আরো বলেন, ‘‘অবশ্যই প্রতিটি মানুষের জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে সেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এসব ভুয়া মামলা নিয়ে সরকার, আইন উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা ও মানবাধিকার-বিষয়ক আইনজীবীরা অনেকেই অনেক সময় কথা বলেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ‘মব’ চলার কারণে আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হচ্ছে না।’’

বিচার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে— ‘‘(১) অপরাধের দায়যুক্ত কার্য-সংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করার অপরাধ ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যেতো, তাকে তার অধিক বা তা থেকে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাবে না। (২) এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাবে না। (৩) ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হবেন। (৪) কোনো অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাবে না। (৫) কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না, কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না, কিংবা কারো সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করা যাবে না। এবং (৬) প্রচলিত আইনে নির্দিষ্ট কোনো দণ্ড বা বিচারপদ্ধতি সম্পর্কিত কোনো বিধানের প্রয়োগকে এই অনুচ্ছেদের (৩) বা (৫) দফার কোনো কিছুই প্রভাবিত করবে না। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৬ এবং ৪৯৭ ধারায় জামিনযোগ্য ও জামিন-অযোগ্য অপরাধের জন্য জামিনের বিধান রয়েছে।’’

জামিন বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধিতেও রয়েছে বেশ কিছু বিধিবিধান। এই আইনের ক্ষমতাবলে অপরাধের গুরুত্ব, আসামির বয়স, আসামির শারীরিক অবস্থা, লিঙ্গ পরিচয়, সাক্ষীর প্রতি প্রভাব না খাটানো, মামলার গুরুত্ব ও আসামির সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে আদালত জামিন প্রদান করতে পারেন।

এদিকে গত ১৪ আগস্ট হত্যাচেষ্টার পৃথক দুটি মামলায় জামিন পাওয়ার পর কারামুক্ত হন অভিনেত্রী শমী কায়সার। অসুস্থতার কারণে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জামিন চাওয়ার কথা পরিবারের পক্ষ থেকে জানানোর পরে ১৪ আগস্ট তিনি কারামুক্ত হন।

অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই জেনেও তাদের দীর্ঘদিন আটকে রাখার বিষয়টি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তিনি বলেন, ‘‘জামিন মানবাধিকার। প্রাথমিকভাবে মামলা দেখলেই বুঝা যায় যে মামলার আসামি অপরাধ করতে কতটা সক্ষম। শুধু মামলা হলেই হয় না, বুঝা যায় এরা কাউকে হত্যা করতে যায়নি। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফও আইসিইউতে ছিলেন। এরপরও এমন অনেক মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবুর ক্যানসার, আসম ফিরোজ ও জাহিদ ফারুকের শরীর খারাপ, শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম) প্রচণ্ড অসুস্থ, শাহরিয়ার কবীর, আমির হোসেন আমু, রাশেদ খান মেনন—এদের সবার অনেক বয়স হয়েছে। আরো অনেকে আছেন, তাদের যেসব মামলায় আসামি করা হয়েছে, সেসব মামলায় এদের আটকে রাখার কোনো কারণ নেই। বরং তাদের মৃত্যুর পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আইনেই আসামির বয়স, নারী ও শিশু বিবেচনায় জামিন বিবেচনার বিধান রয়েছে। কিন্তু সেসব বিধান বিবেচনা করা হচ্ছে না। গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে এক রিকশাচালক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ভালোবাসা দেখিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন। শুনলাম তাকে নাকি হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এসব দেখেও আদালত চুপ থাকলে, বিচার বিভাগের ওপর মানুষের যে অবশিষ্ট আস্থাটুকু রয়েছে, তাও দ্রুত চলে যাবে।’’

উল্লেখ‍্য, হিউম‍্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে— এই সরকারের সময়ও অতীতের মতো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনে নির্বিচারে গ্রেফতার ও অন্যায়ভাবে আটক করা হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। এছাড়া ভিন্নমত দমনে আগের সরকারের মতো এখনো বিশেষ ক্ষমতা আইনে শত শত লোককে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলেও দাবি করা হয়। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মামলা-গ্রেফতার, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচি ঘিরে হতাহতের ঘটনা এবং সম্প্রতি রংপুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটের ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। এসব অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এসি/

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জামিন পাওয়া মানবাধিকার, বলছেন আইন বিশ্লেষকরা

আপডেট সময় : ১২:১৭:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

প্রত্য‍াশা ডেস্ক: সাংবিধানিক অধিকার ও আইনের অধীনে অপরাধ ভেদে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়ার বিধান হলো ‘জামিন’। জামিন মঞ্জুর করার সময় আদালত অপরাধের গুরুত্ব, অভিযুক্ত ব্যক্তির বয়স, আচরণ ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে থাকেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দায়ের হওয়া মামলাগুলোতে আসামিদের জামিনের ক্ষেত্রে তার কতটা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে— এ প্রশ্ন আইনজীবী ও আইন বিশ্লেষকদের।

বর্তমানে জামিন না হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে বলে মনে করেন মানবাধিকারকর্মী ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। জামিন না হওয়ার কারণগুলো তুলে ধরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আইনের শাসনের দুর্বলতা, বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের ঘটনা, এখনো দেশের অধস্তন আদালতসহ বিচার বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করা, বিভিন্ন জেলার আদালতগুলোতে সেখানকার দলীয় আইনজীবীদের ‘মব সন্ত্রাস’ চলমান থাকায় জামিনযোগ্য অপরাধ বা অপরাধ করেননি বলে বিশ্বাস করার সুযোগ থাকলেও তারা (আসামিরা) জামিন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’’

মানবাধিকার-বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস এবং পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ আরো বলেন, ‘‘অবশ্যই প্রতিটি মানুষের জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে সেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এসব ভুয়া মামলা নিয়ে সরকার, আইন উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা ও মানবাধিকার-বিষয়ক আইনজীবীরা অনেকেই অনেক সময় কথা বলেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ‘মব’ চলার কারণে আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হচ্ছে না।’’

বিচার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে— ‘‘(১) অপরাধের দায়যুক্ত কার্য-সংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করার অপরাধ ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যেতো, তাকে তার অধিক বা তা থেকে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাবে না। (২) এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাবে না। (৩) ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হবেন। (৪) কোনো অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাবে না। (৫) কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না, কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না, কিংবা কারো সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করা যাবে না। এবং (৬) প্রচলিত আইনে নির্দিষ্ট কোনো দণ্ড বা বিচারপদ্ধতি সম্পর্কিত কোনো বিধানের প্রয়োগকে এই অনুচ্ছেদের (৩) বা (৫) দফার কোনো কিছুই প্রভাবিত করবে না। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৬ এবং ৪৯৭ ধারায় জামিনযোগ্য ও জামিন-অযোগ্য অপরাধের জন্য জামিনের বিধান রয়েছে।’’

জামিন বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধিতেও রয়েছে বেশ কিছু বিধিবিধান। এই আইনের ক্ষমতাবলে অপরাধের গুরুত্ব, আসামির বয়স, আসামির শারীরিক অবস্থা, লিঙ্গ পরিচয়, সাক্ষীর প্রতি প্রভাব না খাটানো, মামলার গুরুত্ব ও আসামির সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে আদালত জামিন প্রদান করতে পারেন।

এদিকে গত ১৪ আগস্ট হত্যাচেষ্টার পৃথক দুটি মামলায় জামিন পাওয়ার পর কারামুক্ত হন অভিনেত্রী শমী কায়সার। অসুস্থতার কারণে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জামিন চাওয়ার কথা পরিবারের পক্ষ থেকে জানানোর পরে ১৪ আগস্ট তিনি কারামুক্ত হন।

অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই জেনেও তাদের দীর্ঘদিন আটকে রাখার বিষয়টি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তিনি বলেন, ‘‘জামিন মানবাধিকার। প্রাথমিকভাবে মামলা দেখলেই বুঝা যায় যে মামলার আসামি অপরাধ করতে কতটা সক্ষম। শুধু মামলা হলেই হয় না, বুঝা যায় এরা কাউকে হত্যা করতে যায়নি। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফও আইসিইউতে ছিলেন। এরপরও এমন অনেক মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবুর ক্যানসার, আসম ফিরোজ ও জাহিদ ফারুকের শরীর খারাপ, শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম) প্রচণ্ড অসুস্থ, শাহরিয়ার কবীর, আমির হোসেন আমু, রাশেদ খান মেনন—এদের সবার অনেক বয়স হয়েছে। আরো অনেকে আছেন, তাদের যেসব মামলায় আসামি করা হয়েছে, সেসব মামলায় এদের আটকে রাখার কোনো কারণ নেই। বরং তাদের মৃত্যুর পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আইনেই আসামির বয়স, নারী ও শিশু বিবেচনায় জামিন বিবেচনার বিধান রয়েছে। কিন্তু সেসব বিধান বিবেচনা করা হচ্ছে না। গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে এক রিকশাচালক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ভালোবাসা দেখিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন। শুনলাম তাকে নাকি হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এসব দেখেও আদালত চুপ থাকলে, বিচার বিভাগের ওপর মানুষের যে অবশিষ্ট আস্থাটুকু রয়েছে, তাও দ্রুত চলে যাবে।’’

উল্লেখ‍্য, হিউম‍্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে— এই সরকারের সময়ও অতীতের মতো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনে নির্বিচারে গ্রেফতার ও অন্যায়ভাবে আটক করা হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। এছাড়া ভিন্নমত দমনে আগের সরকারের মতো এখনো বিশেষ ক্ষমতা আইনে শত শত লোককে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলেও দাবি করা হয়। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মামলা-গ্রেফতার, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচি ঘিরে হতাহতের ঘটনা এবং সম্প্রতি রংপুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটের ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। এসব অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এসি/