ঢাকা ০৩:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জাফরুল্লাহকে উল্টাপাল্টা কথা না বলতে মির্জা ফখরুলের অনুরোধ

  • আপডেট সময় : ১২:৫৯:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বিভ্রান্তকর ও উল্টাপাল্টা কথাবার্তা না বলতে অনুরোধ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে সাংগঠনিক সফরে এসে গতকাল সোমবার দুপুরে তাঁর নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ অনুরোধ করেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী অনুসারী পরিষদ একটি সভার আয়োজন করে। সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র মেনে তারেক রহমানকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে আছেন। তারেক রহমান আগেও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। দলের মধ্য থেকেই তিনি ধারাবাহিকভাবে এই পদে এসেছেন। তিনি বিদেশে থেকেও সফলতার সঙ্গে জাতীয়তাবাদী দলকে সুসংগঠিত করছেন। তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিটি নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। এখানে নেতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না। দল তাঁর (তারেক রহমান) হাতে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং তিনি অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে, অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে, অচিরেই দল সুসংগঠিত হবে এবং একটা আন্দোলন সৃষ্টি করতে পারব। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী-ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, জাফরুল্লাহ সাহেবের বয়স হয়ে গেছে। তিনি অত্যন্ত সম্মানিত লোক, জ্ঞানী-গুনি লোক। কিন্তু বয়স হয়ে গেলে মানুষ কিছু উল্টোপাল্টা কথা বলতেই পারেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার মন্তব্যটা যুক্তিসংগত না। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, কথা বলছেন। কিন্তু তিনি একবারও ভাবছেন না, এসব কথা বললে ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলন কিছুটা ব্যাহত হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি তাঁকে (ডা.জাফরুল্লাহ) অনুরোধ জানাব, যে সমস্ত কথায় জনগণ বিভ্রান্ত হয় সেসব কথা যেন তিনি না বলেন। তারেক রহমানই হচ্ছে বিএনপির নেতা। তারেক রহমানই আমাদের সুসংগঠিত করছেন। পুরো দল তাঁর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সময় চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। যখন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ হলো তখন অনেকেই বলেছেন বিএনপি ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু বিএনপি ধ্বংস হয়নি। বিএনপি আবার খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জেগে উঠেছে। গত ১২ বছর ধরে শুধু বিএনপি নয়, গোটা দেশে একটা বড় রাজনৈতিক সংকট-অস্তিত্বের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে আমাদের যে অর্জন ছিল স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ও পরবর্তীতে নব্বইয়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে গণতন্ত্র অর্জন করেছিলাম, এই পুরো বিষয়গুলো আওয়ামী লীগ ধ্বংস করছে। সে ক্ষেত্রে বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে সংকটের সামনে আছে। এ সময়ে আমাদের দলের বড় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা হলো দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশের বাইরে নির্বাসিত করা হয়েছে। আলাপকালে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জাফরুল্লাহকে উল্টাপাল্টা কথা না বলতে মির্জা ফখরুলের অনুরোধ

আপডেট সময় : ১২:৫৯:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বিভ্রান্তকর ও উল্টাপাল্টা কথাবার্তা না বলতে অনুরোধ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে সাংগঠনিক সফরে এসে গতকাল সোমবার দুপুরে তাঁর নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ অনুরোধ করেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী অনুসারী পরিষদ একটি সভার আয়োজন করে। সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র মেনে তারেক রহমানকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে আছেন। তারেক রহমান আগেও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। দলের মধ্য থেকেই তিনি ধারাবাহিকভাবে এই পদে এসেছেন। তিনি বিদেশে থেকেও সফলতার সঙ্গে জাতীয়তাবাদী দলকে সুসংগঠিত করছেন। তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিটি নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। এখানে নেতৃত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না। দল তাঁর (তারেক রহমান) হাতে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং তিনি অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে, অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে, অচিরেই দল সুসংগঠিত হবে এবং একটা আন্দোলন সৃষ্টি করতে পারব। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী-ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, জাফরুল্লাহ সাহেবের বয়স হয়ে গেছে। তিনি অত্যন্ত সম্মানিত লোক, জ্ঞানী-গুনি লোক। কিন্তু বয়স হয়ে গেলে মানুষ কিছু উল্টোপাল্টা কথা বলতেই পারেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার মন্তব্যটা যুক্তিসংগত না। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, কথা বলছেন। কিন্তু তিনি একবারও ভাবছেন না, এসব কথা বললে ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলন কিছুটা ব্যাহত হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি তাঁকে (ডা.জাফরুল্লাহ) অনুরোধ জানাব, যে সমস্ত কথায় জনগণ বিভ্রান্ত হয় সেসব কথা যেন তিনি না বলেন। তারেক রহমানই হচ্ছে বিএনপির নেতা। তারেক রহমানই আমাদের সুসংগঠিত করছেন। পুরো দল তাঁর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সময় চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে। যখন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ হলো তখন অনেকেই বলেছেন বিএনপি ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু বিএনপি ধ্বংস হয়নি। বিএনপি আবার খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জেগে উঠেছে। গত ১২ বছর ধরে শুধু বিএনপি নয়, গোটা দেশে একটা বড় রাজনৈতিক সংকট-অস্তিত্বের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে আমাদের যে অর্জন ছিল স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ও পরবর্তীতে নব্বইয়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে গণতন্ত্র অর্জন করেছিলাম, এই পুরো বিষয়গুলো আওয়ামী লীগ ধ্বংস করছে। সে ক্ষেত্রে বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে সংকটের সামনে আছে। এ সময়ে আমাদের দলের বড় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা হলো দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশের বাইরে নির্বাসিত করা হয়েছে। আলাপকালে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।